মুমুর্ষ-অভুক্ত রোহিঙ্গাদের কোলে কাঁধে ডাঙ্গায় তুলেছে বাঙ্গালীরা

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

এপ্রিল ১৬ ২০২০, ১৩:১৩

মালয়েশিয়াগামী রোহিঙ্গা বহর উদ্ধার

মানবপাচারকারী দালালের খপ্পরে পড়ে দু’মাস আগে সাগর পথে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যেতে রওয়ানা দিয়েছিল টেকনাফ নয়াপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের তরুণ মো: জোবাইর। রাতের আঁধারে টেকনাফের বেড়িবাঁধ পেরিয়ে নির্দিষ্ট সময়ে নৌকায় উঠে জুবাইর দেখে তার মত আরো চার শতাধিক রোহিঙ্গা নৌকায় আগে থেকে অবস্থান নিয়েছে। তাদের মধ্যে রোহিঙ্গা নারী- শিশুও রয়েছে।

কানায় কানায় ভরপুর নৌকাটি মালয়েশিয়াগামী জাহাজ ধরার জন্য রাতেই রওয়ানা দেয়। বাংলাদেশ-মিয়ানমার জলসীমান্ত পেরিয়ে ঢুকে যায় থাইল্যান্ড সীমান্তে। কিন্তু জাহাজের দেখা পায়নি তারা। ফলে সীমান্ত বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে ভাসতে থাকে সাগরে। এভাবে মাস দুয়েক কেটে যায়। শেষ হতে থাকে রসদ, খাবার জল ও নৌকার ইঞ্জিনের তেল। বিপাকে পড়ে দালালরা। খাবার না পেয়ে প্রায় ২৮ জন রোহিঙ্গা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।

পরে উপায়ন্তর না দেখে আবারও বাংলাদেশের দিকে ঘুরিয়ে দেয় নৌকা। বুধবার (১৬ এপ্রিল) নৌকাটি বাংলাদেশের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া শামলাপুর জাহাজ ঘাটে ভিড়ে। এসময় স্থানীয়রা এগিয়ে গিয়ে আধমরা, মুমুর্ষ, অভুক্ত রোহিঙ্গা নারী-পুরুষদের কোলে কাঁধে করে ডাঙ্গায় তোলে। পরে টেকনাফ স্টেশন কোস্টগার্ড কর্মকর্তা লে. কমান্ডার এম সোহেল রানার নেতৃত্বে তাদের জিঙ্গাসাবাদ করার জন্য নেয়া হয়।

টেকনাফ উপজেলার ইউএনও মো. সাইফুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা জানিয়ে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা জানিয়েছেন।

মো: জোবাইর আরো বলেন, আমরা প্রায় মালয়েশিয়ার কাছাকাছি গিয়েছিলাম কিন্তু সেদেশের সীমান্ত গরম (কড়াকড়ি) থাকায় ঢুকতে পারিনি।

বলাবাহুল্য যে, মালয়েশিয়ায় ভাল বেতনে চাকরি প্রদান, মালয়েশিয়ায় সেটেল হওয়া রোহিঙ্গা পাত্রের সাথে বিবাহ ও উন্নত জীবন যাপনসহ নানাবিধ প্রলোভনে ফেলে শরণার্থী শিবির থেকে রোহিঙ্গা নারী-পুরুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে দালালরা। সংঘবদ্ধ দালালচক্র সক্রিয়ভাবে ক্যাম্প ও ক্যাম্পের আশপাশের গ্রামগুলোতে কার্যক্রম চালায়। কিছুদিন আগেও মালয়েশিয়ায় পাচারকালে নৌকাডুবে অনেক রোহিঙ্গা শরণার্থীর মৃত্যু হয়েছে। সেসময় বাংলাদেশের আইন শৃংখলারক্ষাকারী বাহিনী টেকনাফ উপজেলার অনেক দালালকে  গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছিল। সূত্র: রোহিঙ্গা টিভি