মাসব্যাপী বন্যায় চরম দুর্ভোগে কুড়িগ্রামের বানভাসিরা
একুশে জার্নাল ডটকম
জুলাই ২৫ ২০২০, ১৯:১৮

রোকন, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: টানা বর্ষণ ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা দুধকুমারসহ ১৬ টি নদীর পানি কমা বাড়ার মধ্যে থাকলেও জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। দীর্ঘ ১ মাস ধরে জেলার ৯ টি উপেজলার আড়াই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন।
জেলা প্রশাসন এবং ত্রান ও পূণর্বাসন কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে চলতি বন্যায় ২ লাখ ৫০ হাজার ৫২০জন মানুষ পানিবন্দী হয়ে পরেছে। এজন্য শুকনো খাবার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৮ হাজার প্যাকেট। এতে যদি ৪০ হাজার লোকও পেয়ে থাকে তাহলে এখনো ২ লাখ ১০ হাজার মানুষের হাতে পৌঁছেনি শুকনো খাবার।
বিশেষ করে দুর্গম চর ও দ্বীপচরগুলোর মানুষজনের ঘরে এখনও এক কোমর, এক গলা পানি থাকায় ছোট ছোট নৌকায় বসবাস করছে এসব এলাকার মানুষজন। প্রায় ৪ সপ্তাহ ধরে এভাবে বসবাস করায় খাদ্য সংকট তীব্র হয়ে উঠছে। পাশাপাশি বিশুদ্ধ খাবার পানি ও গো খাদ্যের সংকট তাদের জীবনকে আরো দুর্বিসহ করে তুলেছে। বন্যা দুর্গত এলাকায় বড় নৌকা দেখলেই ত্রাণের আশায় ছুটাছুটি করছে বন্যা দুর্গতরা। এদিকে বন্যা কবলিত এলাকায় দেখা দিয়েছে পানি বাহিত নানা রোগ।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.আরিফুল ইসলাম জানান, ব্রহ্মপুত্রের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে ৬৫ সেন্টিমিটার, চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৭৭ সেন্টিমিটার, ও ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে বিপদসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে ভাঙন। এ পর্যন্ত ৩১ কিলোমিটার বাঁধ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাঁধ ও স্পার রক্ষায় ১৯টি পয়েন্টে ভাঙন রোধে কাজ চলছে বলে জানান তিনি।
তিস্তা নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ও ভাঙন রোধে আন্দোলন করছে এমন একটি স্হানীয় সংগঠনের মুখপাত্র উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের তারুণ্যের ঐক্য সংগঠনের সভাপতি আতাউর রহমান বলেন, বন্যা আর নদী ভাঙনে বিপর্যস্ত আমরা। সরকার নদীভাঙন রোধ ও বন্যা নিরোধে কার্যকর ব্যবস্হা গ্রহণ করুক।তিস্তার নাব্যতা এবং স্বাভাবিক প্রবাহ রক্ষা করা হোক।বন্যার্ত মানুষদের পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা দেয়া হোক।
উলিপুরের বেগমগন্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: বেলাল হোসেন জানান, সরকারি যে ত্রাণ পেয়েছি তা সকল বন্যা কবলিত পরিবারকে দেয়া সম্ভব হয়নি। বন্যা কবলিত মানুষজন খুবই দু:খ-কষ্টে দিন পার করছে। তাদের পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা প্রয়োজন বলে জানান তিনি।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, আমরা এখন পর্যন্ত ৪শ’ মেট্রিন চন জিআর চাল ছাড়াও ১৯ লাখ টাকা বরাদ্দ পেয়েছি। যেখান থেকে ৪ লাখ টাকার গো-খাদ্য ও ২ লাখ টাকার শিশু খাদ্যসহ ১৩ লাখ টাকার খাদ্য সামগ্রি বিতরণ করেছি। এছাড়াও ৮ হাজার শুকনো খাবার বন্যার্তদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। আরো ৩ লক্ষ টাকা চেয়েছি আমরা। আমরা খবর পেলেই বন্যার্তদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছি।