মহেশখালী কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্প: মাতারবাড়ী-ধলঘাটা সড়কে গাড়ী স্বল্পতায় চরম দুর্ভোগে লক্ষাধিক মানুুষ

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

নভেম্বর ১০ ২০২০, ১৬:৩১

কায়সার হামিদ মানিক,স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার: নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করতে পারতাম না। কী অবিশ্বাস্য দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার ‘মাতারবাড়ী কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্পের’ কাজ! জানাগেছে, উপজেলার মাতারবাড়ী-ধলঘাটা দুইটি গুরুত্বপূর্ণ ইউনিয়ন। এই দুই ইউনিয়নের লবণ,চিংড়ি বাংলাদেশের জন্য বিখ্যাত। এসব ব্যক্তি মালিকানাধীন চাষাবাদের জমিতে সরকারের পক্ষ থেকে অধিকগ্রহণ করে গড়ে তোলা হচ্ছে তাপভিত্তিক কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ বিভিন্ন মেগা প্রকল্প। মাতারবাড়ীর উক্ত প্রকল্পে নিরাপত্তার জন্য চারদিকে দেওয়া হয়েছে শিকলের ঘেরা। কিন্তু মাতারবাড়ী-ধলঘাটা ইউনিয়নের মধ্যবর্তীস্থানে কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পটি স্থাপন করার কারণে সড়ক দিয়ে জনগণের যাতায়াত ব্যবস্থার চরম দৈত্য দূর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছিল। এছাড়াও প্রকল্পটি দুই ইউনিয়নের পূর্ব থেকে পশ্চিশ সীমানা পর্যন্ত স্থাপনের কাজ চলমান থাকার ফলে দুই ইউনিয়নের লক্ষাধিক বাসিন্দাদের নিজ গন্ত্যবে পৌঁছতে দীর্ঘ পথ ফাঁড়ী দিতে হয়। পরবর্তী জনগণের দূর্ভোগ দেখে মানবিক কারণে এগিয়ে এসে প্রকল্পের নির্মাণ ঠিকাদার জাপানের সুমিতোমো- সকাল -বিকাল এক নাগাড়ে ১৭ টি ভাড়াবিহীন (ফ্রি) টমটম গাড়ী যোগাযোগ সহজ লভ্যতার জন্য নিজেদের অর্থায়ানে দে। যা দুই ইউনিয়নের লোকজনের চলাচলের জন্য পর্যাপ্ত ছিলনা। কিন্ত ইতিমধ্য প্রকল্পের কোলপাওয়ার জেনারেশন কর্তৃপক্ষের অদক্ষতা ও ভূল সিন্ধান্তের কারণে অর্ধেক টমটম গাড়ী বাতিল করেছে বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন। যার কারণে পূর্বের ন্যায় দুই ইউনিয়নের লোকজনের মাঝে যোগাযোগের চরম দুর্ভোগ দেখা দেওয়ায় আজ মঙ্গলবার দুপুর দেড় সময় সরেজমিনে গিয়ে এ চিত্র দেখা গেছে।

অনেকে মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প সংলগ্ম সাইরারডেইল যাত্রী সাধারণ গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতেছে। আবারও কেউ হেঁটে গন্তব্যে ফাঁড়ী দিচ্ছে।

ধলঘাটার বাসিন্দা আবুল কাশেম বলেন, আগে যে পরিমাণ গাড়ী ছিল তখন আমরা নিম্ম আয়ের লোকজন যাতায়াতে তেমন কষ্ট ছিলনা। এখন গাড়ী পাওয়া দুষকর। আগের মত চাহিদা পরিমাণ গাড়ী সরবরাহের দাবি জানিয়েছে তিনিসহ অনেক যাত্রী সাধারণ। জানাগেছে, গাড়ী না পাওয়া ডেলিভারি রোগি,শিক্ষার্থী ও নিম্ম আয়ের মানুষের সীমাহীন কষ্ট হচ্ছে দীর্ঘপথ ফাঁড়ী দিতে। ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করেও গাড়ী পাওয়া যেন সোনার হরিণ এখন।

অপরদিকে বর্তমান সরকারের প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১৯৯৩ সালে মাতারবাড়ী দ্বীপে সফরে এসে জনগণের আন্তরিকতা ও মুক্তিযোদ্ধার চেতনায় উজ্বীবিত দেখে মাতারবাড়ীকে ২য় টঙ্গি পাড়া হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন। তিনি অত্র এলাকাকে উন্নয়নের মড়েল হিসেবে রূপ দেওয়ার জন্য পরিক্লপনা হাতে নেন। তারই প্রেক্ষিতে মাতারবাড়ী ১৪১৪ একর জমি অধিকগ্রহণ করে ১২০০ মেগাওয়াট আলট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল কোল ফায়ার্ড পাওয়ার স্থাপন করেন। উক্ত প্রকল্প থেকে দেশের এক-তৃতীয়াংশ বিদ্যুৎতের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে। তবে কোন কর্ণপাত না করে উন্নয়নের লক্ষ মাতারবাড়ী ও ধলঘাটার বাসিন্দারা নিজেদের এক মাত্র আয়ের উৎস পৈত্রিক সম্পত্তি প্রকল্পের দিয়ে দে। কিন্তু প্রকল্পের লাগায়ো সড়ক দিয়ে গাড়ী চলাচল করলেও টেম্পার আলীভাবে প্রকল্পের ভিতর দিয়ে ধলঘাটা যাতায়াত করতে গাড়ী চলাচলের অনুমতি দিয়েছেন কোল পাওয়ার কৃর্তপক্ষ বলে জানাগেছে। প্রকল্পে ভিতরে দেশ বিদেশী কর্মকর্তা কর্মচারী কর্মরত থাকায় যে কোন সময় প্রকল্পের ভিতর দিয়ে গাড়ী চলাচল বন্ধ হতে পারে এমনটা মনে করছেন অত্র এলাকার বাসিন্দারা। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও প্রকল্প কর্তৃপক্ষ জনগণের কথা চিন্তা করে জনগণের কথা চিন্তা করে জনগণের কথা চিন্তা করে উক্ত সংকট নিরসনের জন্য সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন মাতারবাড়ী ও ধলঘাটার স্থায়ী বাসিন্দারা।

মাতারবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হামেদ হোসেন (খোকা) বলেন, আমাদের এলাকার জনগণ জায়গা জমি দিয়ে এমনিতে ক্ষতিগ্রস্ত। সে সুবাদে প্রকল্পের পক্ষ থেকে জনগণের যাতায়াতের সুবিধার্থে বিনা খরচে যে পরিবহন দিয়েছিল তা যদি কমিয়ে দিলে জনগণের যাতায়াতে কষ্ট হবে। মানবিকদিক বিবেচনা করে গাড়ী পূর্বের ন্যায় পর্যাপ্ত পরিমাণ থাকলে ভাল হত।

ধলঘাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুল হাসান বলেন, ধলঘাটার লোকজন গন্তব্যে পৌঁছতে যে গাড়ী গুলি দেওয়া হয়েছিল প্রকল্পের পক্ষ থেকে সেটা ভাল ছিল। যদি গাড়ী কি কারনে কমানো হয়েছে সেটা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করব।

কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পে দায়িত্বরত জাপানের সুমিতোমো

একাউন্টিন মহসিন বলেন, যদি গাড়ী স্বল্পতার কারনে জনদূর্ভোগ সৃষ্টি হলে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি অবহিত করা হবে।