মহানবী (সা:)-কে নিয়ে ফ্রান্সের ধৃষ্টতা; উত্তাল কিশোরগঞ্জ
একুশে জার্নাল ডটকম
অক্টোবর ২৯ ২০২০, ১৭:৫১
আশরাফ আলী সোহান, কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি: ফ্রান্সে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় মানবতার মুক্তির দূত বিশ্বনবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম.-এর অবমাননা ও ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শনীর প্রতিবাদে আল্লামা আযহার আলী আনোয়ার শাহ রহ. প্রতিষ্ঠিত কিশোরগঞ্জ ইমাম ও উলামা পরিষদের উদ্যোগে সর্বস্তরের তাওহিদী জনতা সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
২৯ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) বেলা ১০ টায় কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শহীদি মসজিদ চত্বরে কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হয় সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল। বিক্ষোভ মিছিলে বক্তারা বলেন, ফ্রান্সের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় মানবতার মুক্তির দূত, শান্তির প্রতিক, মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নিয়ে যে ঘৃণ্য কাজ করা হয়েছে তা বিশ্ব মুসলিমদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে। বেঈমানরা বেঁচে থাকার জন্য যুদ্ধ করে আর আমরা মুসলিম সম্প্রদায় ইসলাম ও নবীর ইজ্জতের হেফাজত রক্ষার জন্য জিহাদ করে জীবন দিতে সর্বদা প্রস্তুত থাকি। বক্তারা দেশের সরকার প্রধানের উদ্দেশ্য করে আরও বলেন, অনতিবিলম্বে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ফ্রান্সের এ ঘৃণ্য কাজের নিন্দা প্রস্তাব পাশ করে রাষ্ট্রদূতকে তলব করে এর প্রতিবাদ জানান। রাষ্ট্রীয়ভাবে ফ্রান্সের সকল পন্য বর্জন করে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করুন।
এছাড়া বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে প্রধানমন্ত্রী বরাবর কিছু দাবী পেশ করা হয়।
১. বাংলাদেশস্থ ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে ফ্রান্স সরকার কর্তৃক আমাদের প্রিয় নবী সা: এর বিরুদ্ধে অবমাননাকর কার্টুন ছবি প্রচার বন্ধ করতে নির্দেশ প্রদান করতে হবে এবং নিজেদের কৃতকর্মের জন্য মুসলিম বিশ্বের কাছে নিঃশ্বর্ত ক্ষমা চাইতে হবে।
২. ফ্রান্সে বসবাসকারী মুসলমান নারী পুরুষের উপর জুলুম নির্যাতন বন্ধ করতে হবে। তাদের স্বাধীনভাবে ধর্ম পালনের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। বন্ধ করে দেওয়া মসজিদ মাদরাসা খোলে দিতে হবে।
৩. উল্লেখিত দাবী পূরণে ব্যর্থ হলে ফ্রান্সের সাথে সকল প্রকার কুটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে। সেখানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় দূতকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। তাদের সাথে সকল প্রকার ব্যবসায়ীক লেনদেন বন্ধ করতে হবে।
৪. ফ্রান্সের সাথে সকল প্রকার আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকবে। তাদের উৎপাদিত কোন পন্য বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা বিক্রয় করবে না। সকল প্রকার ফ্রান্স পন্য বর্জন করতে হবে।
৫. আগামী 8 নভেম্বর অনুষ্ঠিত সংসদ অধিবেশনে এদেশে ইসলাম ধর্ম- আল্লাহ রাসূল, খোলাফায়ে রাশেদীন এবং সাহাবায়ে কেরামের নামে কুৎসা রটনা, সমালোচনা এবং কূরুচিপূর্ণ বক্তব্য ও লেখালেখির নিষিদ্ধের আইন পাশ করতে হবে। সর্বোপরি ব্লাসফেমি আইন পাশ করতে হবে।
৬. ইসলামী শরীয়া বিধি বিধানের বিরুদ্ধে সর্ব প্রকার আলোচনা, সমালোচনা ও টকশোর বিরুদ্ধে শাস্তি মূলক আইন পাশ করতে হবে।
৭. যে সকল নাগরিক রেডিও, টিভি ও স্যোসাল মিডিয়ায় নবী, রাসূল, মক্কা, মদিনা, কাবা শরীফ, মসজিদ মাদরাসার বিরুদ্ধে কুৎসা বা অবমাননাকর ছবি প্রচার করে মুসলিম সমাজে বিসৃংখলা তৈরী করে তাদের ইসলামী শরীয়া আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হবে।
৮. নারী নির্যাতন ও ধর্ষনরোধে নারীদের সম্মানজনক কর্মস্থল, বাসস্থান, নিরাপদে চলাচল ও ইসলামী শরীয়া ও পর্দাার বিধান ও শালীন পোষাক পরিধানের বিধান করে আইন পাশ করতে হবে।
গণতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ও রাষ্ট্রপতির ও প্রদাণমন্ত্রীর নিকট উল্লেখিত দাবী দাওয়ার বাস্তবায়নে অনুরোধ জানানো হয়। অন্যথায় আমরা আরো কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হলো।
এ সময় বক্তব্য রাখেন আল জামিয়াতুল ইমদাদিয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা সিব্বির আহমেদ, জামিয়াতুল ইমদাদিয়া মাদ্রাসার ওস্তাদ মাওলানা আব্দুর রহিম, মদনী মসজিদের খতিব মাওলানা মোহাম্মদ তৈয়ব, ইসলামী আন্দোলন জেলা শাখার সভাপতি হাফেজ মাওলানা আলমগীর হোসাইন তালুকদার প্রমুখ। বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শহর প্রদক্ষিণ করে মোনাজাতের মাধ্যমে সমাবেশ সমাপ্ত ঘোষণা হয়।