মসজিদ ভাঙার চেষ্টা করে বিপদে চীনা সরকার
একুশে জার্নাল
আগস্ট ১৫ ২০১৮, ২৩:০৪

কয়েকদিন আগে চীনের একটি শহরে পরিকল্পিতভাবে একটি মসজিদ ভাঙার চেষ্টা করার পর ঐ অঞ্চলের মুসলিম বাসিন্দারা এর বিরোধিতা করলে কিছুটা বিপদেই পড়ে কর্তৃপক্ষ।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক লেখক ও গবেষক ডেভিড স্ট্রাওপ মনে করেন,মানুষের ধর্মীয় রীতি অনুশীলনের ওপর নিয়ন্ত্রণ আনার চেষ্টা করছে চীন।
চীনের স্বশাসিত নিংজিয়া অঞ্চলের ছোট্ট মুসলিমপ্রধান শহর ওয়েইজু’তে নিজের পূর্ব অভিজ্ঞতার সাথে বর্তমান অবস্থার তুলনা করেন জনাব স্ট্রাওপ।
জনাব স্ট্রাওপ লিখেছেন, “দু’বছর আগে যেই শহরটির মানুষজন আইন মেনে সচেতন নাগরিক হিসেবে জীবনযাপন করতো, কিন্তু মসজিদ ভাঙার চেষ্টার প্রতিবাদে এখন তারাই সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছে।” মসজিদ ভাঙার কারণ হিসেবে স্থানীয় সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে এই মসজিদ নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা এবং নির্মাণের অনুমোদন দেয়া হয়নি।
এর জবাবে ওয়েইজু’র হুই মুসলিম সম্প্রদায়ের নাগরিকরা মসজিদ ভাঙার কাজ বন্ধ করতে সেখানে অবস্থান নেন। মানুষের বিক্ষোভের মুখে সরকার মসজিদটি পুরোপুরি না ভাঙার সিদ্ধান্ত নিলেও মসজিদ ভবনের আরবীয় নকশায় পরিবর্তন আনার চিন্তা করছে।
তবে তা করতে গেলেও ওয়েইজু’র ঐতিহ্যের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ হারিয়ে যেতে পারে এবং চীনের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সম্প্রদায়ের ধর্মীয় বোধ এতে আঘাতপ্রাপ্ত হতে পারে বলে মনে করেন জনাব স্ট্রাওপ।
যেটি ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের শহর
ওয়েইজু শহরের জনসংখ্যার ৯০ ভাগই হুই জাতিগোষ্ঠীর সদস্য।
গণমাধ্যমে তাদেরকে অনেকসময় চীনা মুসলিম বলে চিহ্নিত করা হয়। তবে চীনে হুই মুসলিমদের পূর্বপুরুষরা অষ্টম শতাব্দীতে ট্যাঙ রাজবংশোদ্ভূত বলে ধারণা করেন জনাব স্ট্রাওপ।
চীনের মানুষের সাথে কয়েক শতাব্দীব্যাপী মিশ্রণের পর বর্তমানে চীনের সংখ্যাগুরু হান সম্প্রদায়ের সাথে তাদের বাহ্যিক বৈশিষ্ট্যে খুব একটা পার্থক্য চোখে পড়ে না।
ঐ শহরে থাকার সময় নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে জনাব স্ট্রাওপ উল্লেখ করেন যে শহরের অধিকাংশ নারীই হিজাব পরেন এবং অধিকাংশ পুরুষই মুসলিমদের প্রার্থনার সময় সাদা টুপি পরে থাকেন।
জনাব স্ট্রাওপ লিখেছেন, “শহরের প্রায় প্রত্যেকেই প্রতিদিনের প্রার্থনার জন্য মসজিদে যেতো। শহরের খাবার দোকানগুলোতেও শুধুমাত্র হালাল খাবার বেচাকেনা হতো।” তার মতে, শহরের কোনো দোকানে মদ জাতীয় পানীয় বিক্রি হতো না।
উৎস-বিবিসি