মসজিদ উন্মুক্ত করে দেয়ার আহ্বান বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় উলামায়ে কেরামের
একুশে জার্নাল
এপ্রিল ১৬ ২০২০, ২০:৫৪

যোবায়ের আহমদ ফারুকী: আজ বাদ ফজর আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমীর আহ্বান ও সভাপতিত্বে জামিয়া মাদানিয়া বারিধারায় করোনা পরিস্থিতিতে জুমা, পাঞ্জেগানা এবং রমজানে তারাবির নামাজ জামাতের সাথে আদায় করার ব্যাপারে দেশের শীর্ষস্থানীয় উলামায়ে কেরামের এক জরুরী মিটিং অনুষ্ঠিত হয়।
মজলিসে সর্বসম্মতিক্রমে নিম্নোক্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়- সকল সুস্থ ব্যক্তি সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি ও সুরক্ষা মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে জুমা, পাঞ্জেগানা ও তারাবির জামাতে উপস্থিত হতে শরীয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে আদিষ্ট, তাই আজকের এই মজলিসের সর্বসম্মতিক্রমে সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি যে, জুমা, পাঞ্জেগানা ও তারাবীর জামাতে মসজিদে সুস্থ মুসল্লিদের উপস্থিতি বাধামুক্ত করে দেয়া হোক।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী, আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক, আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী, মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী, মুফতি দেলোয়ার হোসেন, মুফতি আব্দুল মালেক, মুফতি আরশাদ রহমানী, মুফতি মহিউদ্দিন মাসুম, মুফতি মিজানুর রহমান, মুফতি খোরশেদ আলম মাওলানা জুনায়েদ আল-হাবীব, মুফতী হাবীবুল্লাহ মাহমুদ কাসেমী। এছাড়াও মুফতি জাকির হোসেন কাসেমী, মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, মাওলানা আবুল কালাম, মাওলানা আবু সাবের আব্দুল্লাহ, মাওলানা হামেদ জহিরী, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, মুফতি মাসউদুল করিম, মাওলানা সানাউল্লাহ মাহমুদীসহ অর্ধশতাধিক উলামায়ে কেরাম উপস্থিত ছিলেন।
মাওলানা জুবায়ের মহিউদ্দিন জানান, বারিধারার মত আল হাইআতুল উলয়ার প্রধান কার্যালয়েও মিটিং হয়েছে৷ এ মিটিংয়ে মসজিদের মুসল্লী সংখ্যা নির্দিষ্ট করে দেয়ার ব্যাপারে আপত্তি জানিয়ে মসজিদের জামাতে বয়ষ্ক, ছোট বাচ্ছা, হাসপাতাল কর্মী, করোনা আক্রান্ত রোগী, করোনার আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে আসা ব্যক্তি, বিদেশ ফেরত ইত্যাদি লোকজন ছাড়া যারা মসজিদে আসতে নিরাপদ বোধ করে তারা যেনো মসজিদে উপস্থিত হতে পারে এইরকমের একটা দালিলিক খসড়া তৈরি করা হয়েছে। এটা সারাদেশের উলামায়ে কেরামের কাছে পাঠানো হবে। উনারা মত দিলে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনে প্রধানমন্ত্রী বরাবর দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী দেশের সার্বিক পরিস্থিতি, আলেম ও চিকিৎসকদের সাথে পরামর্শক্রমে যেই সিদ্ধান্ত নিবেন সেটাই চূড়ান্ত ধরা হবে।
পাশাপাশি মসজিদ কমিটির জন্য সম্ভব হলে সেনিটাইজার গেট, হাত ধোয়ার ব্যবস্থা, নিয়মিত মসজিদ পরিষ্কার ইত্যাদি কিছু পরামর্শও আছে খসড়াতে।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের সর্বোচ্চ অথরিটি হাইয়াতুল উলইয়ার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হওয়া বৈঠকে হাইয়াতুল উলইয়ার কো-চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস এর সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, আল্লাম নূর হোসাইন কাসেমী, আল্লামা মুফতী দিলাওয়ার হোসাইন, আল্লামা মুফতী মিজানুর রহমান সাঈদ, মাওলানা আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজ্জী, আল্লামা মুফতী আব্দুল মালেক, বসুন্ধরার মুফতী আরশাদ রাহমানী, মুফতুী রুহুল আমিন, জামিয়া রাহমানিয়ার মুহতামিম মাওলানা মাহফুজুল হক প্রমুখ।
বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকাস্থ হাইয়া বোর্ড এর সকল সদস্য এবং অন্তর্ভুক্ত অন্যান্য বোর্ড কর্মকর্তাগণ। এ ছাড়াও ঢাকার বিভিন্ন মাদরাসার মুহতামিমগণ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে যে ৪ দফা পরামর্শ দেওয়া হয়-
১. গত ২৯ মার্চের ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বৈঠকে ওলামায়ে কেরামের দেওয়া পরামর্শ মোতাবেক সীমিত সময়ের জন্য, সীমিত পরিসরে সুস্থ্য মুসুল্লিদের প্রবেশ বাঁধা না দেওয়া।
২. জামাতের জন্য সরকার নির্ধারিত ৫/১০ জন এর সংখ্যা সীমা তুলে দেওয়া। বাহ্যিকভাবে সুস্থ মুসুল্লিদের সীমিত সময়ের জন্য মসজিদে প্রবেশের অনুমিত প্রদান করা।
৩. জামাত, জুমা ও তারাবীহ এর সময় মসজিদের গেটে তালা না দেওয়া কিংবা মসজিদকে বাঁধামুক্ত করা। ইমাম-খতিব ও মোয়াজ্জিনকে এ সমস্ত বিষয়ে দায়ি করে অপদস্থ না করা, সার্বিক বিষয় বাস্তবায়নের দায়িত্ব সরকারের গ্রহণ করা।
৪. বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা পরামর্শ মোতাবেক স্বাস্থ্য সচেতনতা মেনে যারা মসজিদে যেতে চায় তাদের বারণ না করা।