ভিক্টোরিয়া তহবিলে কোটি টাকার ধস নামিয়েছে সদ্য বিদায়ী অধ্যক্ষ রতন কুমার সাহা

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

জুন ১৩ ২০১৯, ১৫:৫৬

 

কুমিল্লা প্রতিনিধি: শতবর্ষের ঐতিহ্যের ধারক বাহক দক্ষিণ-পূর্ব বাংলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খ্যাত কুমিল্লার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের তহবিলে ধস নেমেছে। কলেজের সদ্য বিদায়ী অধ্যক্ষ প্রফেসর রতন কুমার সাহার ১৬ মাস দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে কলেজের তহবিলে ব্যাপক গড়মিল পাওয়া গেছে।

১৬ মাসে কলেজের আয় এবং ব্যায়ের মধ্যে দেখা গেছে ব্যাপক তফাত। বিদায়ী অধ্যক্ষ প্রফেসর রতন কুমার সাহা দায়িত্ব হস্তান্তরের সময় নতুন অধ্যক্ষ প্রফেসর মো: রুহুল আমীন ভূইয়াকে যে ব্যাংক স্থিতি দিয়ে গেছেনে তা থেকেই গড়মিলের বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

২০১৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রফেসর রতন কুমার সাহা অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের সময় কলেজের তহবিলে সাত কোটি ১৫ লাখ ২৯ হাজার ৭২৮ টাকা থাকলেও গত ১১ জুন ২০১৯ সালে তহবিলে মোট টাকা রয়েছে পাঁচ কোটি ৫৩ লাখ ৫৮ হাজার ৫৪৬টাকা।

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের লেনদেন হয় পূবালী ব্যাংকে। ওই ব্যাংকে মোট ৪৪টি হিসাব রয়েছে কলেজের। প্রফেসর রতন কুমার সাহা দায়িত্ব গ্রহন করার পর বিগত ১৬ মাসে প্রায় সবকটি খাত ও হিসাবেই গড়মিল হয়েছে। তবে এ গড়মিলে কোন দুর্নীতি হয়েছে কিনা তা এ মুহূর্তে বলতে নারাজ কলেজ কর্তৃপক্ষ।

প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন খাত থেকে প্রাপ্ত আয়ের টাকা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নীতিমালা অমান্য করে ব্যয় করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২০১৪ সালের পরিপত্র অনুয়ায়ি বিভিন্ন খাত থেকে আয় হওয়া টাকা স্বস্ব খাতে ব্যয়ের নির্দেশ থাকলেও সেটি মানা হয়নি। কলেজের অধিকাংশ ব্যয়েরই নেই সঠিক ভাউচার।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র না মানায় কলেজের ভয়াবহ দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন কলেজের অনেক শিক্ষক-কর্মচারী। চাকরির ক্ষতি হতে পারে সেই ভয়ে পরিচয় প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।

পূবালী ব্যাংকে পরিচালিত ৪৪টি ব্যাংক হিসাবের মধ্যে ৮৬৩৩৩ নম্বর হিসাবটি অত্যাবশ্যকীয় কর্মচারী তহবিল। এই হিসাব থেকে কলেজের বেসরকারি কর্মচারীদের বেতন বোনাস প্রদান করা হয়ে থাকে। কলেজে ভর্তির সময় একজন শিক্ষার্থী ব্যাংকের মাধ্যমে অন্যান্য ফি এর সাথে ৬০০টাকা, ফরম পূরণের সময় ২৫০ টাকা করে দিয়ে থাকেন।

বুধবার কলেজের হিসাব শাখায় গিয়ে দেখা যায়, অধ্যক্ষ রতন কুমার সাহার ১৬ মাস দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে প্রতিষ্ঠানে মোট ভর্তি হয়েছেন ২৯ হাজার শিক্ষার্থী। ফরম পূরণ করছেনে ৪৫ হাজার শিক্ষার্থী। সেই হিসেব অনুযায়ি আয় হয়েছে ২ কোটি ৮৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

রতন কুমার সাহা ১৬ মাসে বেতন পরিশোধ করেছেন এক কোটি ৪৩ লাখ ৩৬ হাজার টাকা প্রায়। এই বেতনের সাথে ঈদের ১০০% বোনাস ও ২০% বৈশাখী ভাতা যোগ করলে ১৬ মাসের সর্বমোট ব্যয়ের পরিমান দাড়ায় ১ কোটি ৭২ লাখ টাকা প্রায়। সে অনুযায়ী পূবালী ব্যাংকের ৮৬৩৩৩ নম্বর হিসাবে টাকা থাকার কথা তিন কোটি টাকারও বেশি।