ভালোবাসা দিবসে সঠিক ভালোবাসা বাস্তবায়নে ইসলামী শিক্ষা অপরিহার্য- মাহবুবুর রহমান তাজ
একুশে জার্নাল
ফেব্রুয়ারি ১৪ ২০২০, ০৯:৫৬
ইসলামই পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থার নাম। মানুষকে সত্যের সন্ধান দেয়, মহান স্রষ্টা আল্লাহকে চিনতে সাহায্য করে। সঠিক ও সাফল্যের পথে চলতে সহায়তা করে।
আল্লাহর প্রিয় হতে, জগতে ভালো কিছু করতে ইসলামই একমাত্র মাধ্যম। অর্থাৎ মানব জীবনে ও চরিত্র সাধনে এবং ন্যায় নীতি ভিত্তিক শান্তি শৃঙ্খলাপূর্ণ প্রগতিশীল সমাজ গঠনে ইসলামের বিকল্প নেই।
আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “হে ঈমানদারগণ তোমরা আল্লাহকে ভয় করো ভয় করার মতো এবং পুরোপুরি মুসলিম না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না।(আলি-ইমরান/ ১০২)
সঠিক মুসলমান হিসেবে জীবনযাপন করতে হলে, ইসলামের শিক্ষা অনুসরন করে-বিশ্বভ্রাতৃত্ব, ঐক্য, সাম্য, উদারতা, মানবতাবোধ, পরমতসহিষ্ণুতা ও ন্যায়নীতির ভিত্তিতে চলতে হয়।
কাজেই ইসলামের শিক্ষানুযায়ী চলতে হলে ইসলাম বিষয়ক জ্ঞানার্জন এবং ইসলাম শিক্ষা বিষয়ক অধ্যয়ন করা প্রত্যেক মুসলমানের একান্ত আবশ্যক। সর্বপ্রথম নবী হয়রত আদম (আঃ) থেকে শুরু করে সর্বশেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) পর্যন্ত মানুষের হিদায়াতের জন্য যত নবী রাসুল এসেছেন, তারা সকলেই ইসলামের সুন্দর ও শাশ্বত শিক্ষা প্রচার করেছেন। ইসলামের মৌলিক ও প্রাত্যহিক বিষয়গুলি জানা এবং সে অনুযায়ী চলা ফেরা ফরয এবং বিভিন্ন বিষয়ে উচ্চ শিক্ষা অর্জন করা ফরযে কিফায়া।
ইসলামী শিক্ষা অর্জন করা ফরযে আইনঃ
ইসলামের আকিদা বিশ্বাস এবং ইবাদত করতে ন্যূনতম যতটুকু জ্ঞান প্রয়োজন ততটুকু ইসলাম শিক্ষা অর্জন করা ফরযে আইন।
আল্লাহ বলেন, “তোমাদের সমাজ থেকে এক একটি দল কেন বেরিয়ে আসেনা, এ উদ্দেশ্যে যে, তারা দ্বীন
সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করবে এবং প্রত্যাবর্তন করে নিজ নিজ লোকদের সেই জ্ঞান দ্বারা সতর্ক করে তুলবে” (আততওবা/১২২)।
রাসুল (সাঃ) বলেন, “প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর উপর জ্ঞান অর্জন করা ফরয” (ইবনে মাজাহ)।
ইসলামী শিক্ষার বিশেষ উদ্দেশ্য হলো মা’রিফাত ও খাশয়াত ইলাল্লাহ, আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস,আল্লাহ তা’আলাকে চেনা এবং অন্তরে আল্লাহর ভীতি সৃষ্টি করা।
এজন্য আল্লাহকে চিনতে হলে, সঠিকভাবে তার প্রতি বিশ্বাস করতে হলে আল্লাহর (যাত ও সিফাত) সত্ত্বা ও গুণাবলি সম্বন্ধে জ্ঞান অর্জন করা একান্ত আবশ্যক।
আল্লাহ বলেনঃ “আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে জ্ঞানীরাই কেবল তাকে ভয় করে” (ফাতির/২৮)।
অর্থাৎ আল্লাহকে চিনতে হলে, ভয় করতে হলে তাঁর সম্পর্কে অবশ্যই জানতে হবে। আর এ জানাকেই আরবিতে ইলম বলে। ইলম আহরণকারী হলো তালিবুল ইলম, মোটামুটি জানতে সক্ষম হয়েছেন তাকে আলিম এবং এর বহুবচন উলামা।
মহান খালিক্ব, মালিক আল্লাহকে চেনা ও ভয় করার ফাঁকে যে বস্তুটা আপনাকে আমাকে বাধাগ্রস্ত করে এর নাম হলো দুনিয়া।
এ দুনিয়ার ব্যাপারে সম্যক জ্ঞান না থাকলে যে কোনো সময় দ্বীন ও দুনিয়াকে একত্র করে জগাখিচুরি করে ফেলা অস্বাভাবিক কিছু না। সেহেতু আল্লাহকে চিনতে হলে আল্লাহ প্রদত্ত ইসলাম অবশ্যই জানতে হবে, সে সাথে ইসলাম ও মুসলমানদের সহায়ক বিষয়াবলী সম্পর্কে জানা ও জরুরি।
উপরোক্ত আলোচনার দ্বারা বুঝা গেলো ইসলামী ও দুনিয়াবী শিক্ষা অনস্বীকার্য গুরুত্বপূর্ণ। শুধু ইসলামী শিক্ষা মানবজীবনের পূর্ণতা সাধন করে না, তদ্রূপ শুধু দুনিয়াবী শিক্ষা মানুষের জন্য মুক্তি দান করতে পারে না, কাজেই ইসলামী ও দুনিয়াবী শিক্ষার সমন্বয় জরুরি।
সমন্বয়ভিত্তিক ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলা ও আধুনিক বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার সময় এখন। শত বছর পিছনে তাকাবার সময় এখন নয়। আগামী শত বছর তথা টেকনোলজির যুগের ভবিষ্যত প্রজন্মকে নিয়ে ভাবার সময় এখন।
আপনি আমি পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলাম ঠিক, ভবিষ্যতে সুকঠিন যুগে আগন্তুক সন্তানাদি দ্বীনের উপর ঠিকে থাকতে কি ব্যবস্থাপনা রেখে যাচ্ছি? একবার নিজেকে প্রশ্ন করুন আর ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করুন।
আজকের ভালোবাসা দিবসে নিজ নিজ সন্তানদের প্রতি খাঁটি ভালোবাসার প্রতিফলনে সকলের শুভবুদ্ধির উদয় হোক।
আমীন।