ভারতের বিতর্কিত নাগরিক আইনের প্রতি মাহাথির মোহাম্মাদের নিন্দা

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

ডিসেম্বর ২১ ২০১৯, ১২:৫৭

ভারতের নাগরিকত্ব আইনের তীব্র নিন্দা করেছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ। এ আইনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, এ আইনের ফলে সে দেশের সংখ্যালঘু মুসলমানরা ব্যাপক বৈষম্যের শিকার হবেন।

সম্প্রতি পাস হওয়া এই আইনের প্রতিবাদে গড়ে উঠা বিক্ষোভের ফলে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে গোটা ভারত। এই আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে শুক্রবারও ভারতের উত্তরপ্রদেশে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ছয় বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। এর আগে বৃহস্পতিবার পুলিশের গুলিতে দেশটির ব্যাঙ্গালুরুতে দুইজন এবং লক্ষ্ণৌতে একজন বিক্ষোভকারী নিহত হন। বিক্ষোভের শুরুর দিকে আসামে নিহত হয়েছেন কমপক্ষে পাঁচজন।

শুক্রবার কুয়ালালামপুর সামিট-২০১৯ উপলক্ষে দেয়া এক ভাষণে ভারতের চলমান বিক্ষোভ প্রসঙ্গে মাহাথির বলেন, ‘এই আইনের বিরোধিতা করে বিক্ষোভ-সংঘাতে মানুষ মারা যাচ্ছে। কোনো সমস্যা ছাড়াই যখন সবাই নাগরিক হিসেবে ৭০ বছর ধরে সেখানে বসবাস করছে, তাহলে এখন এই আইনের প্রয়োজন কি?’

এই নতুন নাগরিক সংশোধনী আইনে আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ থেকে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে ভারতে আগত হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানসহ ছয়টি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের শরণার্থীদের সে দেশের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা রয়েছে। তবে ওই তিন দেশ থেকে আগত মুসলিমরা এই সুবিধা পাবেন না।

এই আইনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছেন বলে সেখানে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। যার বিরোধিতা করছে ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে বিভিন্ন রাজ্যের লাখ লাখ মানুষ।

৯৪ বছর বয়সী মাহাথির বলেন, ‘আমি দুঃখিত আমাকে এটা বলতে হচ্ছে যে, ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত ভারত কিছু মুসলিমের নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দেশেও যদি এমনটা করি তবে কী ঘটবে আমি জানি না। এমনটা ঘটলে এখানে অশান্তি ও অস্থিতিশীলতা বাড়বে। এতে সবাইকে ভুগতে হবে।

ভারতে নাগরিকত্ব আইন নিয়ে চলমান বিক্ষোভের মধ্যেই দেশটি নিয়ে এমন নেতিবাচক মন্তব্য করলেন মাহাথির মোহাম্মদ। যদিও তার এই মন্তব্য নিয়ে এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি মোদি সরকার। এর আগে জাতিসংঘ এবং যুক্তরাষ্ট্র এই বৈষম্যমূলক আইনের বিরোধিতা করে বক্তব্য দিয়েছে।

এমন কি গত ৯ ডিসেম্বর ভারতে লোকসভায় বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাসের পর সে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি জানিয়েছিলো যুক্তরাষ্ট্রের কমিশন ফর ইন্টারন্যাশনাল রিলিজাস ফ্রিডম (ইউএসসিআইআরএফ)। লোকসভায় অমিত শাহের আনীত ওই বিল পাশের ঘটনাকে ‘ভুল পথে বিপজ্জনক মোড়’হিসাবে আখ্যায়িত করেছিল মার্কিন কমিশন।

সূত্র: আল জাজিরা