বুক রিভিউ: আল্লাহুম্মা বাল্লিগনা রমাযান
একুশে জার্নাল
এপ্রিল ৩০ ২০২০, ১৮:৩৪
বইয়ের নাম: আল্লাহুম্মা বাল্লিগনা রমাযান
মূল লেখক: উপমহাদেশের প্রখ্যাত আলেমেদ্বীন আল্লামা মুফতি তাকি উসমানি দা. বা., সাবেক প্রধান বিচারপতি, শরিয়া আদালত, পাকিস্তান
সংকলক ও অনুবাদক: আবু মুসআব ওসমান
প্রকাশক: মাকতাবাতুল হাসান, ৩৭ নর্থব্রুক হল রোড, বাংলাবাজার, ঢাকা। ফোনঃ ০১৭৮৭ ০০৭০৩০, মাদানী নগর মাদ্রাসা রোড, চিটাগাং রোড, নারায়ণগঞ্জ।০১৬৭৫ ৩৯৯১১৯
রিভিউ লেখক: মাহবুবুর রহমান
মেধাবী তরুণ আলেম আবু মুসআব ওসমান শিশু শ্রেণী (মক্তব) থেকে হিফজুল কুরআন সহ দাওরায়ে হাদীস (মাস্টার্স) পর্যন্ত মাদানী নগর মাদ্রাসায় কৃতিত্বের সাথে সম্পন্ন করে এখানেই আরবি ভাষা ও সাহিত্য (আদব) বিভাগ এবং ফিকহ শাস্ত্রের উচ্চতর শিক্ষা ও গবেষণা (ইফতা) বিভাগে পূর্ণ সাফল্যের সাথে শিক্ষা সমাপন করেন। শিক্ষাজীবন শেষ করার সাথে সাথেই তাঁর আনুগত্য, মেধা, যোগ্যতা ও গবেষণামূলক চেতনায় মুগ্ধ হয়ে দারুল উলুম কর্তৃপক্ষ তাকে এখানেই শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দান করেন। কর্মজীবনের শুরু থেকেই তিনি পাঠদানের পাশাপাশি ফিকহী গবেষণা, সংকলন ও অনুবাদের কাজ চালিয়ে যান। যার ফলশ্রুতিতে আমরা পেয়েছি আজকের পান্ডুলিপি।
বই পরিচিতি: এটি একটি অনুবাদ গ্রন্থ হলেও এর মূল অংশ কোন লিখিত বইয়ের অনুবাদ নয়। আলোচিত বিষয়াবলী মুফতি ত্বকী উসমানী দা.বা. এর মুখ নিঃসৃত কিছু নসিহা। যা তিনি তার নিজ দেশের মানুষের জন্য আগত রমজানকে (১৪৪১ হিঃ) নববি নির্দেশনা মতে বরণ করে নিতে পেশ করেছেন। যা প্রযুক্তির কল্যাণে অডিও আকারে প্রকাশিত হয়। সেখান থেকে নয়টি অডিও বয়ান সংগ্রহ করে বাংলা ভাষাভাষী ধর্মপ্রাণ মানুষের খেদমতে অনুবাদ আকারে পেশ করেছেন আমাদের প্রিয় আবু মুসআব ওসমান। আল্লাহ তার খেদমত কবুল করুন। আমীন।
বিস্তারিত বিষয় সূচি:
বয়ান নং- ০১
মাহে রমজান উদাসীনতা পরিহার করে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের এক অবারিত সুযোগ।
‘মাহে রমজানের বিশেষ তাৎপর্য’
‘মাহে রমজানের স্বাতন্ত্র্য কেবল রোজা ও তারাবিই নয়’
‘মাহে রমজানে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন বড় সহজ’
‘বিশ রাকাত তারাবিহ আল্লাহর নৈকট্য লাভের এক মহাসুযোগ’
‘নৈকট্য অর্জনের পূর্ব শর্ত অধিক ইবাদত’
‘রমজান মাস কুরআনের মাস’
‘রোজার দাবি গুনাহ পরিত্যাগ করা’
বয়ান নং – ০২
মাহে রমজান সৃষ্টি-উদ্দেশ্যের দিকে প্রত্যাবর্তনের মাস।
‘মানব জাতির সৃষ্টি-তাৎপর্য’
‘ফিরিশতাদের ইবাদত ও মানবজাতির ইবাদত অভিন্ন শ্রেণীভূক্ত নয়’
‘গুনাহের চিন্তা অন্তরে জাগ্রত হওয়া দূষণীয় নয়!’
‘মাহে রমজানের দাবি সৃষ্টি-উদ্দেশ্যের দিকে প্রত্যাবর্তন’
‘মাহে রমজানে কী আমল করব?
রোজা তাকওয়া অর্জনের স্বতন্ত্র সোপান’
‘সাহরি ও ইফতারে কৃচ্ছতা সাধন আবশ্যক নয়’
‘রমজানে হারাম ভক্ষণ করবোনা’
‘মাহে রমজান ক্রোধ সংবরণের মাস’
বয়ান নং – ০৩
রমজানের প্রস্তুতি নিব নববি নির্দেশনা অনুযায়ী
‘রমজান মাসের শ্রেষ্ঠত্বের কারণ’
‘রমজানকে স্বাগত জানাতে হবে নবীজির হিদায়াত অনুসারে’
‘রমজানে করতে হবে সবরের অনুশীলন’
‘রমজানে করতে হবে সহমর্মিতার চর্চা’
বয়ান নং – ০৪
মাহে রমজানেই নিহিত সারা বছরের শান্তি-নিরাপত্তা
‘রমজান মাস শান্তি ও নিরাপত্তার সাথে কাটানোর অর্থ’
‘তারাবি যেমন সুন্নত, তারাবির জামাতও সুন্নত’
‘তারাবি আল্লাহ তাআলার একান্ত সান্নিধ্য লাভের বিশেষ সুযোগ’
*বয়ান নং – ০৫: মাহে রমজান সবর ও হামদর্দির অনুশীলনের মাস।
‘নবী জবানের বদদোয় থেকে বাঁচুন!’
‘সবরের মর্মার্থ অনেক বিস্তৃত’
অপরের দুঃখে ব্যথিত হওয়াও মাহে রমজানের শিক্ষা’
‘রমজানে যাকাত আদায়ের বিধান’
ইলম অর্জন স্বতন্ত্র এক ইবাদত’
বয়ান নং – ০৬
রমজানের শেষ দশকে করণীয় চারটি বিশেষ আমল।
‘শেষ দশকে বেশি বেশি শোকর করা উচিত’
‘ইবাদতের তৌফিক একমাত্র আল্লাহর দান’
‘বন্দেগীর হক কীভাবে আদায় করবে বান্দা?!’
‘আমাদের শোকর তো “প্রতীকী কৃতজ্ঞতা”!
‘ইবাদতের পরও তওবা করা কর্তব্য’
‘আমাদের আমলের দৃষ্টান্ত’
‘নিজ আমলের মুহাসাবাও করা চাই’
‘চলমান সংঘাত-পরিস্থিতি আমাদের বদ আমলেরই পরিণতি’
‘ঈমানের শক্তির সামনে সব শক্তি অসহায়!’
‘তওবা আযাবকে অপসারণ করে’
বয়ান নং – ০৭
মহিমান্বিত রজনী শবে কদর কী করছি? কী করব?
‘শবে কদর উম্মতে মুহাম্মদীর জন্য রাব্বে কারিমের বিশেষ দান’
‘শবে কদরের শিক্ষা কলহ-বিবাদ পরিহার’
‘অনির্দিষ্ট শবে কদরেও আছে বান্দার প্রতি করুণা-দান’
‘শবে কদর রসমের রাত নয়’
‘শবে কদরে করণীয় আমল’
‘দোয়া কেবল প্রয়োজন পূরণে সহায়ক নয়, স্বতন্ত্র ইবাদত’
‘মুমিনের কোন দোয়াই নিস্ফল নয়!
*বয়ান নং -০৮: রমজানের শিক্ষা কুরআনমুখী জীবন গড়া।
‘এক রাতে বরকত ও কল্যানের কত কার্যকারণ’
‘বরকতের রজনী গুলো কাটাতে হবে ভেবেচিন্তে’
‘বিপদ-আপদ,দুর্যোগ-দুর্বিপাক আমাদেরই কর্মফল’
‘কুরআন মুসলমানের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ’
‘শাইখুল হিন্দের দৃষ্টিতে মুসলিম উম্মাহর দুর্গতির কারণ’
‘প্রতিটি মুসলমানের প্রতি আল-কোরআনের তিনটি দাবি’
‘প্রতিটি বিপদ এক একটা গায়েবি সতর্কবাণী’
‘রমজানের আলোকেই গড়ে তুলি আগামীর জীবন’
‘আমার দৃষ্টিতে এই অধঃপতনের কারণ’
‘দোয়া করার আদবও দোয়া করে চাইতে হবে’
বয়ান নং – ০৯
হেলায় নষ্ট না করি মাহে রমজানের অর্জন।
‘জুমাতুল বিদার হাকিকত’
‘রমজানের শেষ সময়ে করণীয়’
‘কোন ইবাদতকে তুচ্ছজ্ঞান করতে নেই’
শোকরের পাশাপাশি চাই ইস্তেগফার’
‘বাকি মুহূর্তগুলোও কাজে লাগান’
‘ফযিলতের মুহূর্তগুলো যেন হেলায় নষ্ট না হয়’
*পরিশিষ্টঃ- রমজান ও রোজা-সংশ্লিষ্ট হাদীসে নববি।
বইয়ের পৃষ্ঠা সংখ্যা: ১৬৫
মূল্যায়ন: আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি অনুবাদকের, সেইসাথে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান মাকতাবাতুল হাসানের স্বত্বাধিকারী রাকিবুল হাসান ভাইয়ের। যাদের সদিচ্ছা ও অক্লান্ত পরিশ্রমে পরিস্থিতি বিবেচনায় আমাদের জন্য বইটিকে পিডিএফ আকারে প্রকাশ করেছেন।
লৌকিকতা ছাড়াই বলছি, এ বইয়ের লিখার মান সম্পর্কে যথাযথ মূল্যায়নের যোগ্য আমি নই। তবে শুধু এটুকুই বলতে পারি, বইয়ের উপস্থাপনা ও বাচনভঙ্গি এমন, যে কোন স্তরের পাঠকের জন্য মর্মসহ আলোচনা বুঝতে সহজ হবে। আর এমন সফল চেষ্টাই রাব্বে কারিম অনুবাদকের হাতে করিয়েছেন। এটি পিডিএফ হওয়াতে ছাপা সংক্রান্ত সকল আলোচনা-সমালোচনা মুক্ত।
বইটি যেহেতু ইসলামের মূল ভিত্তিসমুহের অন্যতম রোজা ও রমজান মাস কেন্দ্রিক বয়ান সংকলন, তাই এখানে একটি বিষয় সর্বাধিক গুরুত্ব রাখে। তা হলো, এখানে দলিল ভিত্তিক আলোচনা করা হয়েছে কিনা? উত্থাপিত প্রশ্নের উত্তরে বলতে হয়, বয়ান সংকলন এমনই এক ব্যক্তির যিনি তথ্যহীন কোন আলোচনাই করেন না। সেইসাথে অনুবাদক পান্ডুলিপির মান অক্ষুন্ন রাখতে প্রতিটি আয়াতে কারীমা উল্লেখ করে তার সূরা ও আয়াত নাম্বার পেশ করেছেন এবং প্রতিটি হাদীসে রাসূলের মূল রাবি বা বর্ননাকারী সাহাবির নাম সহ উল্লেখ করে কিতাবের উদ্ধৃতিও পেশ করেছেন। তাই দলিল নিয়ে বিভ্রান্তিতে পড়ার কোনো সুযোগ নেই।
মতামত: সর্বোপরি এ বইয়ের ব্যাপারে নির্দিধায় বলছি, আল্লাহ তাআলা হযরতের মুফতি সাহেব হুজুরের বয়ান তার সুযোগ্য উত্তরাধিকারীকে দিয়েই অনুবাদ করিয়েছেন। আল্লাহ্ রাব্বুল আ’লামীন ওসমান ভাইকে হযরতের মতো কবুল ফরমান। তার সকল কাগুজে সন্তানকে নাজাতের উসিলা বানান। আমীন!
অনুবাদকের অন্যান্য গ্রন্থ, ১. আন্দালুসের ইতিহাস (দুই খণ্ড) ২. এটাই হয়তো জীবনের শেষ রমাযান, ৩. ফজর আর করব না কাযা, ৪. মাসনা ওয়া সুলাসা ওয়া রুবাআ।
বিঃদ্রঃ বইটির পিডিএফ লিংক পেতে মাকতাবাতুল হাসানের ফেসবুক পেজ ফলো করুন। অথবা এই প্রতিবেদকের ইনবক্সে যোগাযোগ করুন।