বি.বাড়িয়া অভিমুখে লংমার্চের হুশিয়ারি দিয়েছে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়াত
একুশে জার্নাল ডটকম
জানুয়ারি ১৭ ২০২০, ২০:২৬
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কান্দিরপাড়ে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়াত মাদরাসার ছাত্রদের উপর আহমদিয়া মুসলিম জামায়াত নামধারী কাফের কাদিয়ানীদের সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে অরাজনৈতিক সংগঠন আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশের প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব ও খতমে নবুয়াতের সহসভাপতি আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী ও খতমে নবুয়াতের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী জেনারেল মাওলানা নুরুল ইসলামের আহবানে আজ শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) জুমার পর এই প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতিবাদ সভায় আল্লামা বাবুনগরী বলেন, আমরা সরকারকে স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, অনতিবিলম্বে মাদরাসায় হামলাকারী কাদিয়ানিদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি না দিলে সারা দেশে আগুন জলবে। আর সে আন্দোলন আইন শৃঙ্খলা বাহীনির নিয়ন্ত্রনের বাহিরে গেলে তার দায়-দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, মিথ্যা নবুওয়ত দাবিদার মুসাইলামাতুল কাজ্জাবের বিরুদ্ধে সংগঠিত ইয়ামামার যুদ্ধে বারো জন সাহাবী শহিদ হয়েছিলেন। তাদের রক্তের বিনিময়ে আকিদায়ে খতমে নবুওয়ত হেফাজত হয়েছিলো। বাংলাদেশেও কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষনার দাবি আদায় করতে হলে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিতে হবে।
কাদিয়ানীরা শুধু ইসলামের শত্রু নয়, তারা দেশ ও বিশ্ব মানবতার শত্রু বলে অভিযোগ করে সংগঠনটির সেক্রেটারি মাওলানা নুরুল ইসলাম বলেন, কাদিয়ানীরা কাফের। এ ব্যাপারে সকল মুসলমান একমত। যারা তাদের কাফের মনে করে না তারাও কাফের। তাদের কুফরির ব্যাপারে নতুন করে কিছু বলার নাই। পৃথিবীর সব মুসলিম দেশেই রাষ্ট্রীয়ভাবে তারা কাফের। একমাত্র বাংলাদেশে ব্যতিক্রম।
তিনি বলেন, তারা এদেশকে কাদিয়ানী রাষ্ট্র কায়েম করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। সারাদেশে তাদের ১০০ এর অধিক কেন্দ্র রয়েছে। রাষ্ট্রের সব সেক্টরে লোক থাকার ফলে তারা বাধাহীন কাজ করছে।
প্রতিবাদ সভায় অন্যান্য বক্তারা বলেন, মসজিদ পৃথিবীর সর্বোৎকৃষ্ট জায়গা, মুসলিম উম্মাহর ইবাদতের পবিত্র স্থান৷ কাদিয়ানীরা কাফের, কাফেরদের কোনো মসজিদ হতে পারে না। নামাজ, রোজা, হজ্ব, জাকাত ইত্যাদি মুসলমানদের ধর্মীয় পরিভাষা। কাদিয়ানীরা কাফের তাই মুসলমানদের কোনো পরিভাষা ব্যবহার করে তারা তাদের ভ্রান্ত মতাদর্শ প্রচার করতে পারে না৷ এটা ইসলাম ধর্মের অবমাননার শামিল৷
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের দেশ। এ দেশের মুসলমানগণ বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নিজেদের প্রাণের চেয়েও বেশি মুহাব্বাত করেন৷ বিশ্বনবী (সা.) এর রিসালতকে অস্বীকারকারী কাদিয়ানী অমুসলিমদের আস্ফালন এদেশের ধর্মপ্রাণ তৌহিদি জনতা মেনে নেবে না।
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক দেশ। গণতান্ত্রিক অধিকার হিসেবে এদেশের হিন্দুরা হিন্দু নামে, বৌদ্ধরা বৌদ্ধ নামে এবং খ্রিস্টানরা খ্রিস্টান নামে তাদের ধর্মীয় রীতিনীতি পালন করছে৷ কিন্তু কাদিয়ানী অমুসলিমরা মুসলমান নাম ধারণ করে সরলমনা সাধারণ মুসলমানদের ধোঁকা দিয়ে ঈমানবিধ্বংসী কার্যক্রম পরিচালনা করছে৷ যা ইসলাম ধর্মের নামে অপপ্রচারের শামিল। তা কখনো মেনে নেওয়া যায় না।
পুলিশের বাধার কারণে প্রতিবাদ সভার পর মিছিল করতে পারেনি খতমে নবুওয়াতের নেতাকর্মীরা।
প্রতিবাদ সভায়- আগামী শুক্রবার সারা দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল, বি. বাড়িয়ায় খতমে নবুওয়াত মাদরাসার ছাত্রদের উপর সন্ত্রাসীকারী কাফের কাদিয়ানীদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেওয়া না হলে সারা দেশ থেকে বি.বাড়িয়া অভিমুখে লংমার্চের ঘোষণা করা হয়।
প্রতিবাদ সভায় আরও বক্তব্য দেন, মুফতি নুরুল আমিন, আহমদ আলী কাসেমী, ফজলুল করিম কাসেমী, মাওলানা শাহ সাইফুল্লাহ সিদ্দীকী (পীর ছারছিনা), মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, মাওলানা মুসা বিন ইজহার, মাওলানা অধ্যাপক আবদুল করিম, মাওলানা আবদুল কাইয়ুম সোবহানী, মাওলানা রাশেদ বিন নুর, মাওলানা ইউনুস ঢালী, মুফতি এবিএম শরিফুল্লাহ, মাওলানা আশিকুল্লাহ, মুফতি সুলতান মাহমুদ, মাওলানা রকিবুল ইসলাম, মাওলানা এনামুল হক মুসা, মাওলানা আজিজুল রহমান হেলাল, মুফতি ফখরুল ইসলাম, মাওলানা ইলিয়াস আতহারী, মাওলানা আবদুল গাফফার প্রমুখ।