বিএনপি করে বলে বিসিএসে উত্তীর্ণ হয়েও অনেকের চাকরি হয়না
একুশে জার্নাল ডটকম
এপ্রিল ০৫ ২০২২, ২৩:৩১
বৈষম্য বিরোধী বিলের প্রয়োজন বুঝতে পারছেন না বলে উল্লেখ করে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেছেন, ‘পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (বিসিএস) লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও বিএনপি করে দেখে অনেকের চাকরি হচ্ছে না। ’
তিনি বলেন, ‘এসব ক্ষেত্রে রাষ্ট্র বৈষম্য করছে। তবে রাষ্ট্র বৈষম্য করলে কী হবে সেটি বিলে বলা নেই। ’
আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ‘বৈষম্য বিরোধী বিল-২০২২’ উত্থাপন করেন। আইনমন্ত্রী বিলটি উত্থাপনের অনুমতি চাইলে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ আপত্তি তুলে এসব কথা বলেন। তবে তার আপত্তি সংসদের তা নাকচ হয়ে যায়।
পরে বিলটি ৩০ দিনের মধ্যে পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। সংবিধানের ২৭, ২৮ ও ২৯ অনুচ্ছেদে অনুযায়ী সব ধরনের বৈষম্য নিরোধে এ আইনের খসড়া তৈরি করা হয়েছে।
বিএনপির হারুনুর রশীদ ‘পাবলিক প্লেসের’ সংজ্ঞায় ধর্মীয় উপাসনালয় রাখার বিরোধিতা করে বলেন, ‘ধর্মীয় উপাসনালয় পাবলিক প্লেস নয়। মসজিদে ভিন্ন ধর্মের কারও প্রবেশের অনুমতি নেই। বিলে বলা হয়েছে ধর্মীয় স্থানে প্রবেশ করতে না দিলে বৈষম্য হবে- এর ব্যাখ্যা চাই।
প্রস্তাবিত আইনের ৩(ঘ) ধারার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘শিশুর পরিচয় থাকতে হবে। পিতৃ পরিচয়ে সমস্যা থাকলে মাতৃ পরিচয় থাকতে হবে। নানি-নানা তো থাকবে। এই বিধান থাকলে ব্যভিচারকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে। বিষয়টি পরিষ্কার করতে হবে। ’
বিলের ওই ধারায় বলা হয়েছে, উপযুক্ত কারণ ব্যতীত পিতা-মাতার পরিচয় প্রদানে অসমর্থ হওয়ার কারণে কোনো শিশুকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি করতে অস্বীকৃতি বা অমত বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি বা বাধা দেওয়া বা সমান সুযোগ-সুবিধা প্রদান বা অবস্থানের ক্ষেত্রে পার্থক্য, বঞ্চনা, বিধি-নিষেধ আরোপ, সীমাবদ্ধকরণ, শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন অথবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বহিষ্কার বা অন্য যে কোনো ধরনের বৈষম্য করা যাবে না।
সাংসদ হারুন বলেন, ‘বিলে বলা হয়েছে, সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণে প্রতিবন্ধকতা করা যাবে না। এই সব অনুষ্ঠানের নামে যদি বেলেল্লাপনা হয় তবে কী হবে? কিছুদিন আগে দেখলাম তাপস নামে একজনের সন্তানের বিয়েতে পর্ণ তারকা আসল। অনুষ্ঠান করে চলে গেল। তথ্যমন্ত্রী বললেন, তার আসার অনুমতি নেই। কিন্তু পর্ণ তারকা এসে অনুষ্ঠান করে চলে গেল। ’
এসব সমালোচনার বিপরীতে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘বিলটি কমিটিতে গেলে সব বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যাবে। তারপর আবার সংসদে আসবে। আবার আলোচনা হবে। তারপরও জবাব দিচ্ছি। ’
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘মানবাধিকার নিয়ে তিনি যে উদ্বিগ্ন তা বোঝানোর চেষ্টা করেছেন। তিনি এমন একটি দলের সদস্য, যে দলটি ২১ আগস্ট ২০০৪ সালে অন্য দলের সকল নেতা-নেত্রীদের এবং জাতির পিতার কন্যাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছিল। তারা প্রায় সফল হয়ে গিয়েছিল। আল্লাহ মালিক। উনি বেঁচে গেছেন। সেই দলের একজন সংসদ সদস্য আমাকে মানবাধিকার শেখাচ্ছেন। ’
আইনমন্ত্রী এ সময় বলেন, ‘ওনার কাছ থেকে আমার মানবাধিকারের শিক্ষা নিতে হবে না। আমার মানবাধিকার সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান আছে। উনি যে প্রশ্নগুলো করেছেন সময় হলে অবশ্যই জবাব দেব। এখানে বক্তৃতা দিয়ে তারপর একটা সংকট সৃষ্টি করার যে হুমকি দিলেন উনি, আমি বলতে চাই, বাংলাদেশের মানুষ আর বোকা নাই। উনাদের এসব কথায় আর কাজ হবে না। উনার প্রত্যেকটা প্রশ্নের জবাব আমি দেব। সময় হলে দেব। ’