বিএনপিহীন ইউপি ভোট: আ’লীগ ও বিদ্রোহীদের সহিংসতায় নিহত ৯২, আহত ৬১৪৮
একুশে জার্নাল
নভেম্বর ১৩ ২০২১, ০৩:৫৪

ইলিয়াস সারোয়ার:
কেন্দ্র দখল, ব্যালটে সিলমারা, ককটেল বিস্ফোরণ, দফায় দফায় সংঘর্ষ, টেঁটাযুদ্ধ, গুলি ও মারামারির মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। গতকালের নির্বাচনী সহিংসতায় বিভিন্ন স্থানে নিহত হয়েছেন ৭ জন এবং আহত শতাধিক। চলতি বছর জানুয়ারি থেকে বিভিন্ন নির্বাচনী সহিংসতায় এ পর্যন্ত ৯২ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
দ্বিতীয় ধাপে দেশের ৮৩৪টি ইউনিয়নে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। এতে সহিংসতায় নরসিংদীতে ৩ জন, কক্সবাজারে ১ জন, চট্টগ্রামে ১ জন ও কুমিল্লায় ২ জনসহ মোট ৭ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন শতাধিক। তবে অনেক ইউনিয়নেই সুষ্ঠুভাবে ভোট সম্পন্ন হয়েছে।
চলমান ইউপি নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করেনি, তাই নির্বাচনী সংঘর্ষ আওয়ামী লীগ মনোনিত ও তাদের দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে সংঘঠিত হয়েছে। এছাড়া এলাকাভিত্তিক প্রার্থীদের প্রভাব বিস্তার নিয়েও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে।
দ্বিতীয় ধাপে ৮৪৮টি ইউনিয়নের ৮৩৪টি ইউনিয়নে ভোগ গ্রহণ হয়েছে। এরমধ্যে কুমিল্লা জেলার লাকসাম উপজেলার পাঁচ ইউনিয়নে সব পদে বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচিত হওয়ায় এই উপজেলার পাঁচ ইউনিয়নে কোনো ভোটগ্রহণ হয়নি। এছাড়া ৭টি ইউনিয়নের ভোট স্থগিত ও ১টি বাতিল করা হয়েছে। ২৬টি ইউপিতে ভোট গ্রহণ হয়েছে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ৮১টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে, সংরক্ষিত আসনের সদস্য পদে ৭৩ জন ও সাধারণ আসনের সদস্য পদে ২০৩ জন নির্বাচিত হয়েছেন। প্রথম ধাপে ৭৩ জন প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক)-এর তথ্যমতে এ বছরের জানুয়ারি থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন এলাকায় অনুষ্ঠিত ইউপি, উপজেলা, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৪৬৯টি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন ৬ হাজার ৪৮ জন এবং নিহত হয়েছেন ৮৫ জন। নিহতদের মধ্যে আওয়ামী লীগের ৪১ জন, বিএনপির ২ জন, সাধারণ মানুষ ২২ জন, পুলিশের গুলিতে ১৫ জন এবং একজন সাংবাদিক মারা গেছেন। গতকাল নির্বাচনে ৭ জন নিহত নিয়ে মোট মারা গেছেন ৯২ জন। সহিংসতাগুলো বেশিরভাগই ইউপি নির্বাচনকে ঘিরে সংঘঠিত হয়েছে।