বালিশ-পর্দার দামের বিষয় প্রধানমন্ত্রীর নজরে আছে
একুশে জার্নাল ডটকম
সেপ্টেম্বর ১৮ ২০১৯, ১৮:৫৫
সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পে বিভিন্ন পণ্য অস্বাভাবিক দামে কেনা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি বড় ধরনের সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে সরকারকে। অস্বাভাবিক দামে জিনিসপত্র কেনার বিষয়গুলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরে আছে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
বুধবার রাজধানীর মতিঝিলের একটি অভিজাত হোটেলে আয়োজিত এক কর্মশালায় যোগ দিয়ে এ তথ্য জানান পরিকল্পনামন্ত্রী। গতকাল মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পে বেশি দামে পণ্য কেনার বিষয়টি আলোচনায় আসে।
একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রীর দেয়া নির্দেশনা সম্পর্কে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘প্রকল্পে আপনি চেয়ার, টেবিল, চাবি যাই কিনুন না কেন, মূল্য সম্পর্কে আপনাকে সাবধান হতে হবে। কারণ গণমাধ্যমে বালিশের দাম, পর্দার দাম, কী সব! প্রধানমন্ত্রীর নজরে এসব আছে।’
প্রকল্পের আওতায় জিনিসপত্রের দাম যেন যথাযথভাবে নির্ধারণ করা হয়, সেই বিষয়টি পরিকল্পনামন্ত্রীকে দেখতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
এম এ মান্নান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমাকে বলেছেন, প্রতিটি আইটেম আপনি দেখবেন বসে বসে। গাড়ির ব্যবহার, আমাদের চেলাফেরা– প্রতিটি বিষয়ে আমাদেরকে নতুন ধরনের আচরণ (এটিটুড) নিয়ে কাজ করতে হবে।’
‘জনগণের প্রতিটি পয়সা আমাদেরকে হিসাব করে খরচ করতে হবে। এখানে কোনো আপোস করা হবে না’, বলেও মন্তব্য করেন পরিকল্পনামন্ত্রী।
‘বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষা ও বালু নদীর উচ্ছেদকৃত তীরভূমিতে পিলার স্থাপন, তীররক্ষা, ওয়াকওয়ে ও জেটিসহ আনুষঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণ (দ্বিতীয় পর্যায়)’ শীর্ষক প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে আয়োজিত কর্মশালায় যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন পরিকল্পনামন্ত্রী। এ সময় নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীও উপস্থিত ছিলেন। এই প্রকল্পেও প্রতিটি পণ্য যথাযথ মূল্যে কেনা হবে বলে প্রত্যাশা করেন পরিকল্পনামন্ত্রী।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘নদী মায়ের মতো আমাদেরকে গড়ে তুলেছে। সে নদী যে আক্রমণের মুখে পড়েছে, এটা অবশ্য সত্য। আমরা যারা এই নদীর সন্তান, আমাদের দায়িত্ব নদীকে রক্ষা করা। সরকারের আইনি দায়িত্ব, এই নদীগুলোকে রক্ষা করা। সেটা সরকার দেখছে।’
কৃষক, মজুরদের প্রকল্প আগে নিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের এখানে প্রকল্প আসলে বাছাই করা হয়। কোনগুলো মানুষের কল্যাণে, সেগুলো টেনে নিয়ে আসুন আগে। কোনগুলো সাধারণ মানুষের কল্যাণে, কৃষকের কল্যাণে, মজুরের কল্যাণে; তাদেরটা আগে নিয়ে আসুন। ছোটখাটো ত্রুটি থাকলে তা উড়িয়ে দিয়ে এগুলোকে পাস করিয়ে দেন। কারণ প্রধানমন্ত্রী উন্মুখ হয়ে আছেন, এই ধরনের প্রকল্প পাস করার জন্য।’
প্রধানমন্ত্রীর সময়ানুবর্তিতার দিকে ইঙ্গিত দিয়ে এম এ মান্নান বলেন, ‘অনেক প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি আমাদের চাকরি জীবনে পার করে এসেছি। এই একনেক সভা তখনও ছিল। কিন্তু প্রায়ই সভা হতো না। মাসের পর মাস সভা হতো না। আইনগতভাবে যিনি একনেকের চেয়ার (সভাপতি), তিনি মাসের পর মাস আসতেন না। যিনি দ্বিতীয় বা তৃতীয় ব্যক্তি, তাকে তার পক্ষে এটি চালাতে হত। সকাল ১০টার সভা দুপুর ৩ থেকে ৪টা পর্যন্ত তীর্থের কাকের আমলারা বসে আছেন, শুরুই হয় নাই। অথচ গত ৭ বছর যাবত আমি একনেকে আছি, একটি সভাও দেরিতে শুরু হয় নাই। এর ব্যতিক্রম হয় একমাত্র রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে, সেটাও আবার আগেই জানিয়ে দেয়া হয়।’