বাংলাদেশের জনগণ কাশ্মীরিদের সাথে আছে – সর্বদলীয় কাশ্মীর সংহতি ফোরাম
একুশে জার্নাল
আগস্ট ৩০ ২০১৯, ২০:৩২
একুশে জার্নাল ডেস্ক: কাশ্মীরে মুসলিম গণহত্যার প্রতিবাদে ও তাদের স্বায়ত্বশাসন ফিরিয়ে দেওয়ার দাবীতে সর্বদলীয় কাশ্মীর সংহতি ফোরাম বাংলাদেশ এর বিক্ষোভ সমাবেশ আজ ৩০শে আগষ্ট শুক্রবার বাদ জুমা বায়তুল মুকাররম উত্তর গেইটে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ এর মহাসচিব ও কাশ্মীর সংহতি ফোরামের আহবায়ক আল্লামা নূর হোছাইন কাসেমীর সভাপতিত্বে এবং জমিয়তের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা ফজলুল করিম কাসেমীর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত হয়।
এতে বক্তব্য রাখেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ এর সহসভাপতি মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আব্দুল কাদের, ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের আমীর ড. ঈসা শাহেদী, জাতীয় পার্টি (জাফর) ভাইস প্রেসিডেন্ট এড. শফী উদ্দীন, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, এনডিপির চেয়ারম্যান কারী আবু তাহের, খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমীর মাও. মুজিবুর রহমান হামিদী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ এর যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, মাও. বাহাউদ্দিন যাকারিয়া, মুফতী মনীর হোসাইন কাসেমী, প্রচার সম্পাদক মাওলানা জয়নুল আবেদীন, খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাও. শফিক উদ্দিন, মাও. আহমদ আলী কাসেমী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাও. মামুনুল হক ও মাও. জালাল উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা এনামুল হক মুসা, ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব মাও. মোস্তফা তারিকুল হাসান, জাগপার সাংগঠনিক সম্পাদক খান আসাদ, মুসলিম লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী আসাদ। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, মাওলানা আব্দুল গাফফার ছয়ঘরী, মাওলানা ফয়সল আহমদ, মাওলানা শরীফুল্লাহ, মাদানী কাফেলার সভাপতি রুহুল আমীন নগরী, ছাত্র নেতা হাফেজ মাইনুদ্দীন, মাওলানা রেজওয়ানুর রহমান, রুহুল আমীন প্রমূখ।
সভাপতির বক্তব্যে আল্লামা নূর হোছাইন কাসেমী বলেন, বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের উপর আধিপত্যবাদী ও পুঁজিবাদী শক্তি দমন-পীড়ন চালাচ্ছে। শুধু কাশ্মীর নয় দুনিয়া জুড়ে মুসলমানরা আজ নির্যাতিত। এসব নির্যাতিত মুসলমানদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের ঈমানী দায়িত্ব। তিনি আরো বলেন, ১৯৪৮ সালের জাতিসঙ্ঘের চুক্তি লংঘন করে ৩৭০ ধারা বাতিল পূর্বক গায়ের জোরে ভারত সরকার কাশ্মীরি জনগণের উপর নির্যাতন ও মানবাধিকার লংঘনের পরাকাষ্ঠা প্রদর্শ করেছে। কাশ্মীরের জনগণ আমাদের ভাই, আর মুসলমানদের ভ্রাতৃত্বের বন্ধন ভৌগলিক সীমারোখার উর্ধ্বে। সুতরাং কাশ্মীরি মুসলমানদের উপর নির্যাতন বন্ধ না হলে এবং তাদের স্বায়ত্বশাসন ফিরিয়ে না দিলে তার ভয়াবহ পরিনতি ভারত সরকারকে ভোগ করতে হবে। কাশ্মীর সমস্যা ভারতের অভ্যন্তরীন বিষয় নয়। এটা কাশ্মীরের উপর ভারতের নগ্ন হস্তক্ষেপ ছাড়া অন্য কিছু নয়। কাশ্মীর কখনো ভারতের অংশ ছিল না।
আল্লামা কাসেমী বাংলাদেশ সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, দেশের জনগণের মতামতের বিপরীতে না গিয়ে কাশ্মীরি জনগণের পাশে দাঁড়ান। তাদের স্বায়ত্বশাসন ফিরিয়ে দেবার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে চাপ সৃষ্টি করেন। নতজানু পররাষ্ট্রনীতি পরিহার করে জনগণের সরকার হিসেবে ভূমিকা পালন করুন।
মাওলানা আব্দুর রব ইউসূফী বলেন, ভারত উপমহাদেশে হাজার বছরের গোলামীতে অভ্যস্থ হিন্দুদের হীনমন্যতা আজও দূর হয়নি। কাশ্মীরকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে দীর্ঘ ৭০ বছর থেকে ভারত কেবল জবরদখল করে রাখেনি, বরং কাশ্মীরকে গিলে খাওয়ার পায়তারা করছে। ভারতের এই অন্যায় বাসনা পূরণের জন্য কাশ্মীরি জনগণের উপর ভয়াবহ অত্যাচার খুন-গুম, অপহরণ এমনকি তাদের ফসলাদী কেটে আর্থিক নিপিড়ন চালিয়ে যাচ্ছে। যা মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন ও পরিবেশ বিনষ্টের মহা উৎসব।
তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজীবুর রহমান বলেছিলেন বিশ্ব দুইভাগে বিভক্ত। একদল জালিম অন্যদল মজলুম। আমি মজলুমের পক্ষে আছি। বাঙলাদেশের জনগণ জালিম ভারতের পক্ষে নয় মজলুম কাশ্মীরের পক্ষে।
ড. আহমদ আব্দুল কাদের বলেন, কাশ্মীরে যেভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে তা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। ইসরাঈল ফিলিস্তিনীদের উপর যে বর্বরতা চালাচ্ছে, কাশ্মীরে ভারতীয় অত্যাচার সেটাকে ছাড়িয়ে গেছে। কাশ্মীরে জনগণের রক্তের বন্যা দেখেও নিরবদর্শকের ভূমিকায় থাকা কোনো মুসলমানের কাজ হতে পারে না। আমরা কাশ্মীরিদের পাশে ছিলাম পাশে আছি, থাকবো- ইনশাআল্লাহ।
মাও. মাহফুজুল হক বলেন, সীমান্ত রেখার প্রতিবন্ধকতা না থাকলে বর্তমানে কাশ্মীরিদের পাশে স্বশরীরে দাঁড়ানো সময়ের সবচেয়ে বড় দাবী। জালিমদেরকে ইতিহাস কখনো ক্ষমা করে না। মুদি সরকারকেও ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। কাশ্মীরিদের উপর নির্যাতন বন্ধ করুন এবং তাদের স্বায়ত্বশাসন ফিরিয়ে দিন অন্যথায় ভারত ভেঙ্গে খন্ড বিখন্ড হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
ড. ঈসা শাহেদী বলেন, সারা বিশ্বে মুসলমানরা অমুসলিমদের হাতে নির্যাতিত, এখন সময় এসেছে ঘুরে দাঁড়ানোর। ওআইসিসহ সকল মুসলিম শক্তিকে আজ ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাশ্মীরি জনগণের পাশে দাঁড়াতে হবে। অন্যথায় মুসলমানদের ভূখ-ও হাতছাড়া হতে থাকবে।