বাঁশের সাঁকোই ১১ গ্রামের মানুষের ভরসা
একুশে জার্নাল ডটকম
এপ্রিল ০৬ ২০১৯, ১২:৪৭

একুশে জার্নাল ডেক্স: অধিকাংশ সময় স্কুলে যাতায়াতের জন্য সাঁকো থেকে পা পিছলে নদীতে পড়ে যায় কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। নদীর অপর পাড়ে চাষাবাদের কাজ করতে যেতে এবং ফসল তুলে বাড়ি আনতে কৃষকদের চরম সমস্যায় পড়তে হয়। মেয়েদের স্কুল ও কলেজে যাওয়ার সময় সাঁকোটি পার করে দিতে হয়। আবার ছুটির পর তাদেরকে পার করে নিয়ে আসতে হয়। এতে ভোগান্তি ও কর্মক্ষেত্রে অনেক সমস্যা হয়। তারা আরো জানান, গত কয়েক মাস আগে একজন গর্ভবতী মহিলা সাঁকো ও নৌকার বিড়ম্বনা কারনে ডাক্তারের কাছে সময় মত যেতে পারেননি তাই নদীর ওপারেই বিনা চিকিৎসায় মা ও তার আগত সন্তান মারা গিয়াছে। এভাবে অনেক মহিলা আবার নদীর পাড়ে খোলা আকাশের নিচে সন্তান প্রসব করেছেন। কথাগুলো ক্ষোভের সাথে জানিয়েছেন সিলেটের গোলাপগঞ্জের ঢাকাদক্ষিণ, উত্তর বাদেপাশা, শরীফগঞ্জ ও ভাদেশ্বর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী ১১ গ্রামের সাধারন মানুষ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সিলেটের গোলাপগঞ্জে বাঁশের সাঁকোই এখন ১১ গ্রামের মানুষের ভরসা। উপজেলার ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়ন উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কুড়া নদীর উপর একটি ব্রীজের অভাবে বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুকি নিয়ে চলাচল করছে ঢাকাদক্ষিণ, উত্তর বাদেপাশা, শরীফগঞ্জ ও ভাদেশ্বর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী ১১ গ্রামের সাধারন মানুষ। কুড়া নদীর উপর নির্মিত ঝুঁকিপূর্ণ এই সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন কলেজ শিক্ষার্থীসহ প্রায় ২/৩ হাজার মানুষ যাতায়াত করতে হচ্ছে। ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো পারাপারে প্রতিদিনই ঘটছে ছোট-বড় নানা ধরণের দূর্ঘটনা। ফলে চরম ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছেন পূর্ব কানিশাইল, কৃষ্ণপুর, নুরপুর, উজান মেহেরপুর, নোয়াই, দক্ষিণ আমকোনা, মোল্লারচক, কোনাগাও, তেরাপুর, কাটাখালের পাড় ও কুলিয়া এসব গ্রামের মানুষ। প্রতিদিন দু’পাড়ের লোকজনকে অসহনীয় দুর্ভোগ সহ্য করে পাড়ি দিয়ে প্রয়োজনীয় কাজে যেতে হয়। উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের ১১ টি গ্রামে প্রায় ৪০ হাজার মানুষের বাসবাস। ৪ ইউনিয়নের ভিতর দিয়ে বয়ে যাওয়া কুড়া নদীর উপর ব্রিজ না থাকায় এই সাঁকো দিয়ে ১১টি গ্রামের মানুষের যাতায়াত করতে হয়। অপরদিকে বর্ষা আসলেই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। বর্ষার মৌসুমে এ দুর্ভোগ চরমে পৌছায়। স্থানীয় মানুষজন কুড়াগাং নদীর উপর এই সাঁকোর স্থানে নতুন ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানান। তারা বলেন প্রতি বৎসর বর্ষার সময় ২/৩ টি গাভি/বাছুর এই নদীতে মারা যায়। আবার অনেক কৃষক কষ্টের ফলানো ফসল তাদের বাড়িতে নিয়ে আসতে পারেনা। নৌকা ডুবে নদীর পানিতে অনেক সময় ভেসে যায়।
এ ব্যাপারে ঢাকাদক্ষিণ সরকারী ডিগ্রী কলেজ, ঢাকাদক্ষিণ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, ঢাকাদক্ষিণ বহুমুখী স্কুল এন্ড কলেজের একাধিক শিক্ষার্থী দুর্ভোগের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, সাঁকো পার হতে অনেক ভয় করে। তারপরও স্কুল/ কলেজে যাওয়ার জন্য ভয়ে ভয়ে পার হতে হয়। আমরা নদীর অপর পাশের গ্রামের শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়ত দীর্ঘ ও ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো দিয়ে স্কুলে যাতায়াত করি, অনেকদিন সাঁকো থেকে নদীতে পড়ে গিয়ে বইখাতা ভিজিয়ে যাওয়ায় স্কুল/কলেজে যেতে পারিনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ক্লাস থেকে বঞ্চিত হয়েছি।
গোলাপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুর রহমান জানান, শ্রীঘই স্থানটি পরিদর্শন করব এবং এ বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে।