বাঁশখালীতে কালবৈশাখী ঝড়ে লণ্ডভণ্ড উপজেলার বিভিন্ন এলাকা
একুশে জার্নাল ডটকম
এপ্রিল ২২ ২০২০, ১৯:৩৭

জসিম উদ্দীন মিছবাহ বাঁশখালী প্রতিনিধি;
চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে ২১ এপ্রিল মঙ্গলবার দুপুর ১১টা৫০মিনিট নাগাদ কালবৈশাখী ঝড় শুরু হয়ে প্রবল বর্ষণে ৩টি বসতঘর সম্পূর্ণ লন্ডভন্ড হয়ে উড়ে গেছে। এ ছাড়াও বাঁশখালীতে গাছপালা ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঝঁড়ে অনেক এলাকায় বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে করোনা ভাইরাসের কারণে মানুষের ঘরে থাকা অপরিহার্য হলেও ঘর হারিয়ে খোলা আকাশের নীচে মানবেতর বসবাস করছে সরল ইউনিয়নের মিনজির তলার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের হাজ্বী পাড়ার, মৃত সাহাব উদ্দিনের পরিবার, শিলকুপ ইউনিয়নের পূর্ব-মনকিচর গ্রামের মু.হোছন এর পরিবার ও বাঁশখালী পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের, মুজিবীয় আদর্শে বিশ্বাসী দিনমজুর, জাকের আহমদ এর পরিবার। একদিকে করোনা নামক মহামারিতে তাদের জীবন অতিষ্ট। অন্য দিকে কাল বৈশাখীর তাবায় তাদের থাকার একমাত্র ঘরটি লন্ডবন্ড। এখন খোলা আকাশে নিচে তাদের একমাত্র বাঁচার উপায়।
এদিকে আকস্মিক কালবৈশাখীর ঝড়ে বাঁশখালী উপজেলার বাহরচরা, খানখানাবাদ, কালীপুর, কাথরিয়া, সরল, শিলকূপ, চাম্বল, শেখেরখীল, গন্ডামারা, পুইছড়ি, ছনুয়া ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকার বেশকয়েকটি ঘরবাড়ি, দোকান পাঠ ও ফসলের ক্ষতিসাধিত হয়েছে।এবং বিদ্যুৎ না থাকায় বাঁশখালীর প্রায় ইউনিয়নে গ্রীষ্ম মৌসুমে টিউবলে পানি সরবাহ বন্দ থাকায় মোটর পাম্প দিয়ে গভীর নলকূপ থেকে পানি সরবাহ বন্দ হয়ে যায় ফলে ভোগান্তিতে পড়ে হাজার হাজার মানুষ।
সরল ইউনিয়নের মৃত সাহাব উদ্দিনের স্ত্রী হোসনে আরা বেগম বলেন, ছেলেদের বাবার রেখে যাওয়া একমাত্র বসতঘরই ছিল আমার মাথা গোঁজার ঠাই। ঝড়ে সেই শেষ সম্বলটিও কেড়ে নিয়ে গেল। আজ থেকে দীর্ঘ ৪ বছর আগে আমার স্বামী মারা যায়। এক ছেলে ও দুই কন্যাশিশু নিয়ে অতিকষ্টে দিনাতিপাত করছি। এরই মাঝে কালবৈশাখীরর ঝঁড়ে শেষ সম্বল বসতঘরটি গুঁড়িয়ে যাওয়ায় সন্তানদের নিয়ে খোলা আকাশের নীচে বসবাস করছি।
শিলকুপ ইউনিয়নের পূর্ব-মনকিচর গ্রামের মু. হোছন বলেন, ‘অামার মাথাগোঁজার একমাত্র বসতঘরটি বছরখানেক আগে থেকেই পঁতিত হয়েছে। ঘরের দেয়াল ভেঙ্গে যাওয়ায় তেরপাল (প্লাস্টিকের কাগজ) দিয়ে কোন রকম মানবেতর বসবাস করছি। ঘরের চালের ছাউনি বলতে ছিল প্লাস্টিকের তেরপাল। আজকের আকস্মিক ঝড়ো হাওয়ায় সব লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। আমার স্ত্রী সহ তিন সন্তানদের নিয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর বসবাস করছি। করোনা সংকটে বন্ধ হয়ে যায় আমার দিনমজুরি। এরই মধ্যে বৃষ্টি আসলে ভিজে যাওয়া ছাড়া আমাদের কোন উপায় নেই।’
বাঁশখালী পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের, মুজিবীয় আদর্শে বিশ্বাসী দিনমজুর, জাকের আহমদ বলেন- একদিকে করোনা নামক মহামারিতে তার জীবন অতিষ্ট। অন্য দিকে কাল বৈশাকীর তাবায় তার একমাত্র ঘরটি লন্ডবন্ড। এখন খোলা আকাশের মালিক তাদের একমাত্র বাঁচার মালিক।আমি সমাজের বিত্তবানদের তার পাশে দাড়াতে অনুরোধ জানাব।পাশাপাশি মানবতার মা মাননীয় প্রধানমন্ত্রির দৃষ্টি আকর্ষন করব,এই দিনমজুরের পাশে দাড়াতে। সবাই তার পরিবারের পাশে দাড়ান এবং তাদের জন্য দোয়া করুন যাতে এই সংকট মোকাবেলা করতে পারে।
পল্লীবিদ্যুতের বাঁশখালী জোনাল অফিসের ভারপ্রাপ্ত ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মু. মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘কালবৈশাখীর ঝড়ে বিদ্যুতের তার ছিড়ে যাওয়ায় মঙ্গলবার দুপুর থেকে বাঁশখালীতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। আমাদের লাইনম্যান ইতোমধ্যে লাইনের কাজ শেষ করেছে। তিনি বলেন, ঝড়ো হাওয়ায় আমাদের প্রধান সংযোগটিতে সমস্যা হওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে একটু বিলম্ব হচ্ছে। তবে খুব শীগ্রই সংযোগ দিতে পারবো।’