বশেমুরবিপ্রবিতে খণ্ডকালীন শিক্ষকদের বেতনের জন্য মানবিক দাবী

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

জুন ২৬ ২০২০, ০০:২৭

সাজ্জাতুজ জামান সুজন, গোপালগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি:

বর্তমানে সারা বিশ্বে করোনা চরম মহামারী আকার ধারণ করেছে। মার্চ মাসের শেষ থেকে বন্ধ আছে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এমতাবস্থায় বশেমুরবিপ্রবি এর একজন শিক্ষককে দেখা গেছে প্লাকার্ড হাতে কোনো এক দাবীতে ছবিসহ লেখা পোস্ট করতে।

সেখানে তিনি মানবিক দাবী জানিয়েছেন বশেমুরবিপ্রবিতে কর্মরত খণ্ডকালীন শিক্ষকদের বেতন-ভাতার জন্য।

উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক জনাব এস.এম আহসান লিখেছেন-

প্রযুক্তিগত দিক থেকে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ দেশ দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আমি আমার দেশের মানুষের খারাপ ও অস্থির সময়কে অনুভব করছি। শঙ্কা অথবা ভয় সবই কাজ করে আপনাদের জন্য। করোনা পরিস্থিতিতে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত আমাদের দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপকার, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, দেশরত্ন শেখ হাসিনা তার অপরিসীম মানবিকতা ও ধৈর্যের উদাহরণ সৃষ্টি করেই চলেছেন। এই দূর্যোগ মোকাবেলায় সারা বিশ্ব তাকিয়ে আছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষকদের দিকে, আপনারাও এর বাইরে নন।মাঝে মাঝেই আপনাদের প্রকাশনা ও প্রবন্ধগুলো মুগ্ধ হয়ে পড়ি। আপনাদের অসাধারণ গবেষণাগুলো দেখে নিজেও উৎসাহ পাই ভালো কিছু করার। শত সীমাবদ্ধতার মধ্যেও আপনারা নিজেদের গবেষণার মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ করে যাচ্ছেন। আপনাদের সকলকে বিনম্র শ্রদ্ধা।

কিন্তু দুঃখের বিষয় এই যে, শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসা আমাদের কয়েকজন মেধাবী সহকর্মী অনেক দিন ধরে আমাদের সাথে কাজ করে আসছেন, অনেকগুলো নতুন বিভাগ হওয়াতে এক সাথে সকল বিভাগে স্থায়ীভাবে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হয়নি, বিধায় খন্ডকালিন শিক্ষকরাই সেই সকল বিভাগের ক্লাস ও গবেষণাকার্য চালিয়ে এসেছেন। শুধুমাত্র এই পেশাকে সম্মান জানিয়ে একটি নতুন বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার এক মহান স্বপ্ন নিয়ে তারা অনেক ত্যাগ স্বীকার করে দিনের পর দিন শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন।

খন্ডকালিন অনেক শিক্ষকদের গবেষণাকর্ম ও তাদের গবেষণা চিন্তা আমাকে রীতিমতো অবাক করেছে। আমি আশাবাদী হতে চাই এই শিক্ষকরা একদিন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে অনেক দূর এগিয়ে নিবেন। যেখানে আমাদের দেশের দেশরত্ন শেখ হাসিনার সরকার অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে শিক্ষাসহ সকল পেশাজীবীদের পাশে এসে দাড়িয়েছেন।

(করোনায় ননএমপিও শিক্ষকদের জন্য সাড়ে ৪৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, এমপিওবিহীন শিক্ষক যারা সরকারিভাবে কোন অর্থ সহায়তা পান না শুধু স্ব স্ব স্কুল/কলেজের নিজস্ব আয় থেকে নামমাত্র বেতন পান, করোনার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় তাদের সেই নামমাত্র বেতনও বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মানবতার মা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সেই সমস্ত নন এমপিও শিক্ষকদের জন্য ৪৬,৬৩,৩০,০০০ টাকা থোক বরাদ্দ দিয়ে ৮০,৭৪৭ শিক্ষক ও ২৫,০৩৮ কর্মচারীবৃন্দের মধ্যে জরুরি ভিত্তিতে বিতরণের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন)। সেখানে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের খন্ডকালিন সহকর্মীরা তাদের বেতন ভাতা ঠিক মত পাচ্ছেন কিনা এরকম কোন উৎকন্ঠা প্রশাসনের মধ্যে দেখছি না। তারা আমাদের সহকর্মী, এই বিপদে তাদের পাশে দাড়ানো আমাদের একান্ত কর্তব্য। পদ বা পজিশন না থাকলে কারো পাশে থাকা যায় না এই ধারণায় আমি বিশ্বাসী না। সম্প্রতি প্লাকার্ড হাতে নিয়ে কয়েকজন প্রজ্ঞাবান ও মহান সহকর্মীদের দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে আমিও আজ প্লাকার্ড নিয়ে একটি দাবী জানাতে চাই। আশা করবো খন্ডকালীন সহকর্মীদের পাশে সবাই থাকবো আমরা।