বন্যকবলিতদের উদ্ধারে তৈরি হচ্ছে বিশেষ নৌযান

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

জুলাই ২১ ২০২০, ২১:৫৬

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান জানিয়েছেন, বন্যা বা জলোচ্ছ্বাসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় ব্যবহারের জন্য তৈরি হচ্ছে বিশেষ নৌযান (রেসকিউ বোট)।

মঙ্গলবার (২১ জুলাই) বিকেলে ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়ে এ তথ্য জানান তিনি।

ফেসবুক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, বিশেষ ওই নৌযানের সাহায্যে (রেসকিউ বোট) বন্যাকবলিত এলাকার নারী, শিশু, প্রতিবন্ধীদের পাশাপাশি গবাদিপশু উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসা হবে। ইঞ্জিনচালিত এসব নৌযানে কমপক্ষে ৮০ জন মানুষ ও ১০ টন পণ্য পরিবহন করা যাবে। বন্যা-জলোচ্ছ্বাস শেষে এসব নৌযানকে বিদ্যালয় হিসেবে ব্যবহার করা হবে। জি-টু-জি পদ্ধতিতে নৌযানগুলো নির্মাণের কাজ পেয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। প্রতিটি নৌযান নির্মাণে ব্যয় হবে ৪৫ লাখ টাকা।

তিনি জানান, প্রতিটি নৌযানে একটি ফার্স্ট এইড বক্স, একটি হুইল চেয়ার, একটি স্ট্রেচার, একটি ওয়াকিং ফ্রেম, দু’টি আলাদা টয়লেট থাকবে।

এনামুর রহমান বলেন, ২০১৯ সালের ১১ সেপ্টেম্বর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত ডিজাবিলিটি ইনক্লুসিভ ডিজাস্টার রিস্ক ম্যানেজমেন্ট বাস্তবায়ন সংক্রান্ত জাতীয় টাস্কফোর্সের সভায় টাস্কফোর্সের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে বিশেষ এই নৌযানের নকশা অনুমোদন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল।

তিনি বলেন, প্রতি বছর ২০টি করে তিন বছরে ৬০টি বিশেষায়িত এই নৌযান সরবরাহ করবে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেড।

এ বিষয়ে গত ২১ জুলাই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের পক্ষে মহাপরিচালক আতিকুল হক এবং নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ডের পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর আকতার হোসেন এক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলাম, সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন এবং মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মোহসীনকে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ঐতিহাসিক এ কার্যক্রমের সাক্ষী হওয়ার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী।

ফেসবুক স্ট্যাটাসে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সকল শ্রেণির কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উদ্দেশে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, মনে রাখবেন দুর্যোগে পাশে থাকাই আসল বন্ধুর কাজ। কেবল সরকারি দায়িত্ব পালন নয়, মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে থাকাটাও বড় মনুষ্যত্বের পরিচয়।

ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, মন্ত্রিসভায় অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম, বিশেষ করে বন্যার্ত এলাকায় রিলিফ ও রেসকিউ অপারেশন নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেড়ে গেল। এই অর্জনকে ধরে রাখতে হবে। বন্যা কবলিত এলাকার অসহায় মানুষদের জন্য ত্রাণের যেন কোনো ঘাটতি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে প্রধানমন্ত্রী যে নির্দেশনা দিয়েছেন তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হবে। বাঁধ কিংবা আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নেয়া বানভাসি মানুষদের জীবন বা খাবারের যাতে অসুবিধা না হয়, আশ্রয়কেন্দ্রে টয়লেট সুবিধা, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট যেন হাত বাড়ালেই পাওয়া যায় তা নিশ্চিত করতে হবে।

এনামুর রহমান বলেন, আমরা বন্যা দুর্গত এলাকাগুলোতে পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী পাঠিয়েছি। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের পূর্ব অভিজ্ঞতার পাশাপাশি পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতিও রয়েছে।

বন্যার্তদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা সবাই সামাজিক দূরত্ব নিয়ে চলুন। এই বন্যার ক্ষয়ক্ষতি থেকে নিজের জীবন ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি কীভাবে এড়ানো যায় সেদিকে বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখবেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মমতা ও ভালোবাসা নিয়ে তার প্রতিনিধি হিসেবে আমরা রয়েছি আপনাদের পাশে। বন্যা দুর্গত এলাকায় মানবিক ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রমে আমাদের নেয়া পদক্ষেপে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এখন আমাদের লক্ষ্য আপনাদের সন্তুষ্টি অর্জন করা।