বখাটের উৎপাতে আত্মহত্যা করেন কুলাউড়ার শাম্মী
একুশে জার্নাল ডটকম
অক্টোবর ২৮ ২০২০, ২১:১৫
মারজান আহমদ কুলাউড়া প্রতিনিধি: মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের করেরগ্রামে দুই বখাটের উৎপাত ও প্ররোচনায় আত্নহননের পথ বেঁচে নিল শাম্মি আক্তার (১৫) নামে ৮ম শ্রেণির এক ছাত্রী। বখাটে রিজন আহমদ(২১) কিশোরী শাম্মিকে বিয়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করলে এবং শাম্মির পরিবার বিয়েতে রাজি না হওয়ায় রিজনের প্ররোচনায় বিষপানে আত্নহত্যার পথ বেচে নেয় অগ্রনী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী শাম্মি আক্তার।
শাম্মির অকালে চলে যাওয়ার ঘটনায় গোটা এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। বিরাজ করছে শোকের ছায়া। সকলের দাবী শাম্মির আত্নহত্যার প্ররোচনাকারী বখাটে রিজন ও তার সহযোগী নুরুল এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।
এ ঘটনায় সদর ইউনিয়নের শংকরপুর গ্রামের বকুল মিয়ার পুত্র রিজন আহমদ(২১) ও তার সহযোগী করেরগ্রামের মইনুল মিয়ার পুত্র নুরুল ইসলাম(১৮) এর বিরুদ্ধে কুলাউড়া থানায় ২৭ অক্টোবর (মঙ্গলবার) রাতে শাম্মির পিতা বাদী হয়ে মামলা (নং ১৮) দায়ের করেন।
পুলিশ এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোন আসামীকে গ্রেফতার করতে না পারলেও আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশ তৎপর রয়েছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মাসুদ হোসেন ভুইয়া।
এজাহার সুত্রে জানা যায়, উপজেলার করেরগ্রামের কালা মিয়ার কন্যা শাম্মি আক্তার (১৫) অগ্রনী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী। স্কুলে যাওয়া আসার সুবাদে পার্শ্ববর্তী শংকরপুর গ্রামের বকুল মিয়ার পুত্র সিএনজি চালক বখাটে রিজন তাকে প্রেমের প্রস্তাব দিতো। কিন্তু শাম্মি প্রেমে রাজি না হওয়ায় বিভিন্ন কৌশলে রিজনের বন্ধু শাম্মির প্রতিবেশী নুরুলের সহযোগীতায় শাম্মির সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে। রিজন প্রায়ই শাম্মিকে নানাভাবে উত্যক্ত করে আসছিল। কিন্ত বাধ সাধে শাম্মির পরিবার। কিশোরী স্কুল ছাত্রীর সাথে সকল প্রকার সম্পর্ক ছিন্ন করতে এবং এলাকায় আসতে বিধি নিষেধ করলে বখাটে রিজন ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং বিয়ে করতে উঠে পড়ে লাগে। এক পর্যায়ে রিজন শাম্মিকে তার নিকট বিয়ে না দিলে শাম্মিকে বিষ খাইয়ে মরার জন্য প্ররোচনা দেয় । ঘটনার দিন ২৫ অক্টোবর সন্ধ্যায় শাম্মি বিষপান করে। শাম্মির বিষপানের খবর তার পরিবার না জানলেও রিজনের বন্ধু নুরুল শাম্মির দাদিকে বিষয়টি অবহিত করলে তার পরিবার ঘরের দরজা ভেংগে প্রবেশ করে শাম্মিকে কাতরাতে দেখে সাথে সাথে তাকে কুলাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। সেখানে তার অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে ওইদিন রাত সাড়ে ১১টায় শাম্মি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। পুলিশ নিহতের লাশ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরন করেছে।
এ ব্যাপারে কুলাউড়া থানা পুলিশের এসআই মাসুদ আলম ভুইয়া জানান, সুরতহাল রিপোর্ট তৈরির সময় নিহতের ব্যবহার করা জামা থেকে থেকে একটি মোবাইল ফোন উদ্বার করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ ইয়ারদৌস হাসান জানান, নিহতের পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে থানায় মামলা রুজু করা হয়েছে। আসামীদের আটকে পুলিশ তৎপর রয়েছে।