ফটিকছড়িতে উদ্বোধন হলো দেশের প্রথম উপজেলা ভিত্তিক কোভিড-১৯ হাসপাতাল

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

জুলাই ২৭ ২০২০, ১৮:১২

সীরাত মঞ্জুর, ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি:

চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে উদ্বোধন করা হয়েছে দানের টাকায় গড়ে উঠা দেশের প্রথম উপজেলা ভিত্তিক পূর্ণাঙ্গ কোভিড-১৯ হাসপাতাল।

২৭ জুলাই (সোমবার) ফটিকছড়ির সাংসদ সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ হাসপাতালটি শুভ উদ্ভোধন ঘোষণা করেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার এবিএম আজাদ, চট্টগ্রাম বিভাগের বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর, চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি।

উপজেলা পরিষদ মুক্তিযোদ্ধা জহরুল হক হল রুমে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী অফিসার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ জানে আলম, উপজেলা চেয়ারম্যান হোসাইন মো. আবু তৈয়ব, মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান জেবুন নাহার, ভাইস-চেয়ারম্যান এডভোকেট ছালামত উল্লাহ চৌধুরী শাহীন, ফটিকছড়ি থানা অফিসার্স ইনচার্য বাবুল আকতার, ফটিকছড়ি পৌরসভা মেয়র মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন, ডা. জয়নাল আবেদীন মুহুরী, ডা. আবুল বাশেত প্রমুখ।

সাংসদ সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী বলেন, ফটিকছড়িবাসীর সুচিকিৎসার কথা বিবেচনা করে হাসপাতালটিকে কোভিড-১৯ এর রোগীর জন্য চূড়ান্ত করা হয়েছে। কোন মানুষ যাতে বিনা চিকিৎসায় মারা না যায়। সেজন্য উদ্যোগ নিয়েছি। মুজিববর্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে এ হাসপাতাল উপহার দিলাম।

হাসপাতালটি সরকারী হিসাবে বন্ধ থাকায় এতে কোন প্রকার বরাদ্দ না থাকা স্বত্বেও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় আমরা হাসপাতালটি কোভিড-১৯ হাসপাতালে গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছি। যারা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে এগিয়ে এসেছেন তাদের সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।

হাসপাতালটি কোভিড-১৯ হাসপাতালে রুপান্তর করতে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১ কোটি টাকা এবং প্রতি মাসে খরচ পড়বে প্রায় ৩৫ লাখ টাকা। সাংসদ হাসপাতালটির উন্নয়নে এলাকাবাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানালে হাসপাতালটির উন্নয়নে এলাকার বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ, সংগঠন, সংস্থা, স্কুল সহায়তায় এগিয়ে আসেন। এমনকি শিশুরাও তাদের ঈদ সালামির জমানো টাকা, বাই সাইকেল কেনার টাকা নিয়ে এগিয়ে আসেন।

এ হাসপতালটি গড়ে তুলেতে নিরলস পরিশ্রম করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সায়েদুল আরেফিন।
এছাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান হোসাইন মোহাম্মদ আবু তৈয়ব, ফটিকছড়ি পৌরসভা মেয়র ইসমাইল হোসেন, ডা. জয়নাল মুহুরীসহ আরো অনেকে এ হাসপাতালটি গড়তে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন।

এ হাসপাতালটির প্রচার-প্রচারণায় এবং উদ্বুদ্ধকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে কিছু তরুণদের উদ্যোগে ফেইসবুকে গড়ে উঠা প্রচারণা টিম ফটিকছড়ি কোভিড-১৯ হাসপাতাল। এ টিম প্রচারণায় বিশেষ অবদান রাখছে। যা সত্যি প্রশংসনীয়।

উল্লেখ্য, ফটিকছড়ি বিবিরহাটে অবস্থিত ২০শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটি অনেকবছর যাবৎ পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল শুধুমাত্র বর্হিবিভাগ ব্যতীত। ফটিকছড়ি আপামর জনতার কথা চিন্তা করে এ হাসপাতালকে করোনা বিশেষায়িত হাসপাতাল হিসাবে রূপান্তরের সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যার জন্য প্রয়োজন ছিল ১কোটি টাকা এবং প্রতিমাসে ৩০ লাখের ও বেশি। এ হাসপাতাল করোনা বিশেষায়িত হাসপাতালে রূপান্তরের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সায়েদুল আরেফিন’কে প্রধান সমন্বয়ক হিসাবে দায়িত্ব দেয়া হয়। শীততাপ নিয়ন্ত্রিত এবং অত্যাধুনিক মানসম্পন্ন হাসপাতালটি গড়ার জন্য এগিয়ে এসেছে, শিল্পপতি, রাজনীতিবীদ, বিভিন্ন ধর্মীয়-সামাজিক সংগঠন, শিক্ষার্থীরা সহ ছোট বড় অনেকেই। সবার সহযোগিতায় উপজেলা আপদকালীন ফান্ডে এ হাসপাতালের জন্য জমা হয় ১,৫৯,৫৩২০(এক কোটি উনষাট লাখ পাঁচ হাজার তিনশো বিশ টাকা), যা বিশেষায়িত হাসপাতাল রূপান্তরের প্রায় দ্বিগুণ পরিমাণ টাকা।

এজন্য সর্বস্তরের জনসাধারণ ফটিকছড়ি বাসীকে অভিনন্দন জানান। নিজেদের টাকায় নিজেরা হাসপাতাল তৈরী করতে পেরে আনন্দিত ফটিকছড়িবাসী।