প্রাণের ক্যাম্পাস জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়: স্বপ্ন ও প্রত্যাশা
একুশে জার্নাল ডটকম
অক্টোবর ২১ ২০২০, ১৮:২৬
পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ও প্রগতিশীল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের সকল গৌরবময় ইতিহাসের এক জ্বলন্ত সাক্ষী। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে দেশ মাতৃকার মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত সর্বক্ষেত্রে ছিল এর সফল ও সার্থক পদচারণা। বর্তমানেও এই বিদ্যাপীঠ দেশের সার্বিক ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ইতিবাচক ভূমিকা রেখেই চলেছে।
২০০৫ সালের ২০ অক্টোবর তারিখে সরকারের এক আদেশবলে তৎকালীন জগন্নাথ কলেজ একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়। কিন্তু ২৭/৪ ধারা নামের এক কালো আইন বহাল তবিয়তে রেখে এর পূর্ণাঙ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার পথকে রুদ্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। যা ছিল তৎকালীন সরকারের একটা নীতিগত এবং জাতির সঙ্গে তামাশাস্বরুপ এক ভূল সিদ্ধান্ত। যার কারণে অনাবাসিক তকমা পাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা উক্ত ধারা পরিবর্তনের দাবিতে অনড় আন্দোলন শুরু করে।
বর্তমান শিক্ষাবান্ধব সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও জননেত্রী শেখ হাসিনা ছাত্র-ছাত্রীদের যৌক্তিক দাবির সাথে ঐক্যমত্য পোষণ করেন এবং উক্ত কালো আইন বাতিল করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হওয়ার পথকে উন্মুক্ত করে দিয়ে এক অনন্য নজির স্থাপন করেন। এই বছরের বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলের উদ্ভোধনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়টির অনাবাসিক তকমা বাস্তবিক পক্ষেই ঘুচে গেল।
এই বিশ্ববিদ্যালয়টি যার হাত ধরে তিলেতিলে গৌরব সাফল্য ও ঐতিহ্যের স্মারক রক্ষা ও বৃদ্ধিকল্পে উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডগুলো সম্পাদিত হচ্ছে তিনি হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গর্ব ও শিক্ষানুরাগী আমাদের মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান স্যার। বিশ্ববিদ্যালয়কে অত্যাধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানের হিসেবে গড়ে তুলতে স্যারের অবদান সত্যিই প্রশংসনীয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস স্থাপন প্রকল্পের অংশ হিসেবে ইতোমধ্যেই ঢাকার অদূরে কেরানিগঞ্জে ২২০ একর জমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে জবি এক অত্যাধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হবে এতে কোন সন্দেহ নেই।
এই বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার কাজ অত্যন্ত তীক্ষ্ণ ও ধারালো গতিতে চলছে। শুধু তাই নয় এর অধ্যাপকগণ সকলেই পিএইচডি হোল্ডার। আর পিএইচডি ডিগ্রি ছাড়া অধ্যাপক পদে পদোন্নতির পথকেও রুদ্ধ করা হয়েছে। এর একাডেমিক সাফল্যও ঈর্ষনীয়। আমাদের বিশ্বাস এই বিশ্ববিদ্যালয় সত্যি সত্যিই একদিন প্রাচ্যের হার্ভার্ডে পরিণত হবে ইনশাল্লাহ এবং তা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরেই হবে ইনশাল্লাহ। আমরা খুবই ভাগ্যবান এজন্য যে, আমাদের বর্তমান ভিসি স্যার এব্যাপারে খুবই উদার এবং আন্তরিক।
এই বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আমাদের স্বপ্নের পরিধি ও ব্যাপ্তি বুকের অনেক গভীরে প্রোথিত ও লালিত। পাশাপাশি আমরা এটাও প্রত্যাশা ও দাবি রাখি যে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকেই শিক্ষকতা পেশার আসার সুযোগ দেয়া হোক। আমরা মনে করি, শিক্ষক নিয়োগে আগে নিজ বিশ্ববিদ্যালয়কে অগ্রাধিকার দেয়া হোক তারপর অন্য বিশ্ববিদ্যালয়। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস ও প্রত্যাশা এই যে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অবশ্যই এব্যাপারে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী হিসেবে আমি এর উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি ও সাফল্য কামনা করি।
মোহাম্মদ আব্দুস সালাম
প্রথম ব্যাচ (২০০৫-২০০৬)
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।