পুলিশকে পিটিয়ে মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নিলো যুবলীগ নেতারা

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

জানুয়ারি ১৭ ২০২০, ১৯:৩২

যুবলীগকর্মীর লাইসেন্সবিহীন মোটরসাইকেল না ছেড়ে দেয়ায় ট্রফিক সার্জেন্ট ও কনস্টেবলকে মারধর করে আটক করা মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নিয়েছে যুবলীগ কর্মীরা। জামালপুর জেলা যুবলীগের সভাপতির নির্দেশে এ ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সোয়া ১০টায় জামালপুর শহরের গেইটপাড় এলাকায় ট্রফিক বক্সে ঘটনাটি ঘটে।

এ ঘটনায় ট্রাফিক সার্জেন্ট আব্দুল্লাহ আল মামুন বাদী হয়ে জেলা যুবলীগের সভাপতি রাজন সাহা রাজুসহ ১১ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে জামালপুর সদর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনাস্থল থেকে মোটরসাইকেল মালিক যুবলীগ কর্মী মনিরুজ্জামান সাজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সন্ধায় লাইসেন্সবিহীন মোটরসাইকেলে করে মনিরুজ্জামান সাজন, শাকিল ও রিয়াদ নামে ৩ যুবলীগকর্মী শহরের গেইটপাড় ট্রফিক বক্সের সামনে দিয়ে যাচ্ছিল। তাদের মাথায় হেমলেটও ছিল না। ট্রফিক সার্জেন্ট আব্দুল্লাহ আল মামুন ও কনস্টেবল শাহ আলম তাদের থামতে সিগন্যাল দেয়।

এসময় তাদের কাছে মোটরসাইকেলের কাগজপত্র দেখতে চাইলে উল্টো ট্রাফিক পুলিশের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে যুবলীগ নেতা শুভকে ফোন করে ডেকে আনা হয়। যুবলীগ নেতা শুভ ট্রফিক সার্জেন্ট আব্দুল্লাহ আল মামুনকে মোটরসাইকেল ছেড়ে না দিলে চাকরি খেয়ে ফেলাসহ নানা হুমকি দিয়ে জেলা যুবলীগের সভাপতি রাজন সাহা রাজুকে মোবাইল ফোন ধরিয়ে দেয়।

মোবাইল ফোনে রাজু মোটরসাইকেল ছেড়ে দিতে বললে অপরাগতা প্রকাশ করে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা। এসময় ট্রফিক সার্জেন্টকে হুমকি দেয় যুবলীগের সভাপতিও।

পরে রাত সোয়া ১০টায় যুবলীগের সভাপতি রাজন সাহা রাজুর নেতৃত্বে যুবলীগের কর্মীরা মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে ঘটনাস্থলে যায়। গেইটপাড় এলাকায় প্রধান সড়কে এলোপাতাড়ি মোটরসাইকেল রেখে সড়কে ব্যারিকেড সৃষ্টি করে তারা। পরে ট্রফিক বক্সে ঢুকে ট্রফিক সার্জেন্ট আব্দুল্লাহ আল মামুন ও কনস্টেবল যুবায়েরকে মারধর করে আটককৃত মোটরসাইকেলের চাবি ছিনিয়ে নেয় ও প্রসিকিউশন বহি ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে।

পরে খবর পেয়ে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে। শহরের দয়াময়ি মোড়ে অবস্থান নিতে চেষ্টা করলে যুবলীগের কর্মীদের ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ।

এ প্রসঙ্গে জেলা যুবলীগের সভাপতি রাজন সাহা রাজু সাংবাদিকদের বলেন, যুবলীগ কর্মী সাজনের মোটরসাইকেল আটকের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে ট্রফিক পুলিশের সাথে ভুল বুঝাবুঝি হয়েছিল। বিষয়টি মীমাংসা হয়েছে। মারধরের কোন ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করেন তিনি।

জামালপুর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: সালেমুজ্জামান জানিয়েছে, লাইসেন্সবিহিন মোটরসাইকেল আটক করায় ট্রফিক পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় জেলা যুবলীগের সভাপতি রাজন সাহা রাজুসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তার মনিরুজ্জামান সাজনকে শুক্রবার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। মামলার অপর আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যহত রয়েছে।