পুরনো জরাজীর্ণ ভবনেই কোনমতে পাঠদান ও প্রশাসনিক কার্যক্রম চলছে শিলঘাট-২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

জুলাই ১৫ ২০১৮, ১১:০৫

জাবেদ মাহবুব গোলাপগঞ্জ: দুইরুম বিশিষ্ট পাকা ও পুরনো জরজীর্ণ ভবনেই কোনমতে পাঠদান ও প্রশাসনিক কার্যক্রম চলছে গোলাপগঞ্জের আমুড়া ইউপির শিলঘাট-২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। জীর্ণশীর্ণ ফাটল ভবনে ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে পাঠদান ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনায় বেশ উদ্বীগ্ন শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটি ও অভিভাবকরা।

তারা যেন অসহায়ত্বে হার মেনেছেন! জেনে বুঝেও কর্তৃপক্ষ যেন উদাসীন। ৩৪ শতক জমি নিয়ে এ স্কুলটি ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০০ জন ছাত্রছাত্রীর এ প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক পদ সংখ্যা ৭টি থাকলেও প্রধান শিক্ষক পদ দীর্ঘ সময় থেকে শুণ্য, চলছে ভারপ্রাপ্ত দিয়ে আর বর্তমানে কর্মরত আছেন ৫জন, এর মধ্যে একজন শিক্ষিকা ডেপুটেশনে অন্য স্কুলে কর্মরত রয়েছেন। সরেজমিন স্কুল পরিদর্শনে আরো জানা যায়, দুইরুম বিশিষ্ট একটি পাকা ও ২টি পুরনো জরজীর্ণ ভবনে কোনমতে পাঠদান ও প্রশাসনিক কার্যক্রম চলছে। পুরনো ভবনগুলোর অধিকাংশ স্থানে ভুমিকম্পের সময় দেখা দিয়েছে ফাটল। মেঘ বাদলের দিনে টিন দিয়ে পানি পড়ে। এমন অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে সংশ্লিষ্ট অফিসে বারবার আবেদন করেও কোন সুফল পাচ্ছেন না তারা।

প্রথম ভবন ১৯৭৫ সালে ও অফিস ভবন ১৯৮৬ সালে নির্মাণ হলেও পরে তা আর সংস্কারের মুখ দেখেনি। ২০০০-০১ সালে দুইরুম বিশিষ্ট দ্বিতীয় ভবন তৈরি হলেও তা চাহিদার ক্ষেত্রে কাজ হচ্ছে না। ব্যক্তি উদ্যোগে একটি বাথরুম করা হলেও নেই ওয়াশরুম। ডেস্ক ব্রেঞ্চের অবস্থাও করুণ, প্রয়োজনের তুলনায় পরিমাণ মতো নেই ডেস্ক ব্রেঞ্চ। মনোরম পরিবেশে স্কুলটির অবস্থান হলেও নানান সমস্যার বেড়াজালে আটকা থাকায় কোন উন্নতি হচ্ছে না। স্কুলের প্রায় সব উন্নয়ন এলাকাবাসীর প্রচেষ্টায় হয়েছে। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা রেবেকা বেগম জানান, শিক্ষায় সফলতা থাকলেও অবিভাবক সচেতন না থাকায় তেমন ভাল ফলাফল আশা করা যাচ্ছে না। আমরা স্কুলেই যা পড়াই তা! ছাত্রছাত্রীর তুলনায় বিনোদনের জন্য খেলার মাঠ পর্যাপ্ত পরিমাণে নেই। বাউন্ডারী না থাকার ফলে বর্ষাকালে স্কুলের তিন দিক নীচু হওয়ায় পানি হয়ে যায়, ফলে বাচ্ছাদের নিয়ে সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়। শিক্ষক স্বল্পতার কারণে পাঠদান ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটছে।

বিগত এপ্রিলের ১৪ তারিখ থেকে প্রধান শিক্ষক পদও শুণ্য রয়েছে। ভবন সমস্যা ইত্যাদি নিয়ে লিখিতভাবে কর্তৃপক্ষ বরাবরে প্রতি বছর আবেদন করেও কোন সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোঃ ছওয়াব আলী জানান, আমাদের স্কুলের প্রধান সমস্যা হচ্ছে শিক্ষক সংকট ও ভবন সমস্যা। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ থেকে কোন সহযোগীতা পাওয়া যাচ্ছে না। এলাকার মানুষজন সব সময় স্কুলের খেয়াল রাখে, সহযোগীতা করে। শিক্ষকদের ও ম্যানেজিংকমিটির সাধ্যানুযায়ী লেখাপড়ার মান ভাল রাখতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বর্তমান সরকার শিক্ষার ক্ষেত্রে ব্যাপক ভূমিকা রাখলেও প্রতিষ্ঠার ৫৬ বছর অতিক্রম করেও আমাদের স্কুলের কোন উন্নতি নাই।
আমাদের অবহেলিত স্কুলের প্রতি সুদৃষ্টি দেওয়ার জন্য সংশ্লিস্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবী জানাচ্ছি।