পাবনায় ত্রাণের তালিকা নিয়ে চেয়ারম্যান-মেম্বারের হাতাহাতি
একুশে জার্নাল ডটকম
এপ্রিল ০৬ ২০২০, ১৫:৪৭

স্টাফ রিপোর্টর;
পাবনা ভাঙ্গুড়া উপজেলার খানমরিচ ইউনিয়নে করোনাভাইরাস সংক্রামণ প্রতিরোধে ঘরে অবস্থান করা স্বল্প আয়ের ও দুঃস্থ পরিবারকে সরকারি সহায়তা প্রদানের তালিকা তৈরি নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যদের সাথে দ্বন্দ্ব-হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। বুধবার দুপুরের দিকে উপজেলার খানমরিচ ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান বাদি হয়ে সরকারি কাজে বাধা প্রদানের অভিযোগ এনে ১২জনকে আসামি করে ভাঙ্গুড়া থানায় মামলা করেছেন। পরে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা সৈয়দ আশরাফুজ্জামানের সরাসরি হস্তক্ষেপে ওই এলাকায় ত্রাণ বিতরণ শুরু করেছেন প্রশাসনের কর্মকতারা।
একাধিক সূত্রে জানা যায় , উপজেলার সবচেয়ে বড় ও প্রত্যন্ত এলাকা নিয়ে খানমরিচ ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নের অনেক পরিবারের সদস্য দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালায়। তারা বিভিন্ন সময়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দিনমজুরের কাজ করে পরিবারের ভরণপোষণ করে থাকে। কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমাণ রোধে তারা বাড়িতে অবস্থান করছেন। একারণে তাদের মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে। এ অবস্থায় সরকারের দেওয়া ত্রাণসামগ্রী ওই সকল দুস্থ পরিবারে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে প্রথম পর্যায়ে উপজেলা প্রশাসন ২৮৩ জন স্বল্প আয়ের অসহায় দুঃস্থ পরিবারের তালিকা চায় ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুর রহমানের কাছে। কিন্তু ইউপি চেয়ারম্যান কোনো ইউপি সদস্যকে না জানিয়ে গোপনে তালিকা তৈরি করে উপজেলা প্রশাসনের কাছে পাঠান। কিন্তু ইউপি চেয়ারম্যানের পাঠানো তালিকায় ইউপি সদস্যদের স্বাক্ষর না থাকায় তা ফেরত পাঠায় উপজেলা প্রশাসন। পরে চেয়ারম্যান ইউনিয়নের ইউপি সদস্যদের কাছে ১০টি করে দুঃস্থ পরিবারের তালিকা চান। ইউপি সদস্যরা ২০জনের নাম পাঠালে চেয়ারম্যান আসাদুর রহমান ওই তালিকা থেকে ১০ জনের নাম কেটে দিয়ে নিজের পছন্দমত পরিবারের নাম তালিকাভুক্ত করেন। এ নিয়ে বুধবার দিনভর ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। এরই এক পর্যায়ে চেয়ারম্যান, তার ছেলে স্বপন ও চেয়ারম্যানের লোকজনের সঙ্গে ইউপি সদস্যদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে চেয়ারম্যান আসাদুর রহমান বুধবার রাতে ভাঙ্গুড়া থানায় ইউপি সদস্যদের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগে তুলে মামলা দায়ের করেন।
খানমরিচ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আলমগীর হোসেন (ডালু) বলেন, চেয়ারম্যান আসাদুর রহমান মাঠ পর্যায়ে জরিপ করে স্বল্প আয় ও দুঃস্থ পরিবারকে তালিকাভুক্ত না করে নিজের পছন্দমত ব্যক্তিদের নাম তালিকাভুক্ত করছেন। বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করাতে চেয়ারম্যানের ছেলেসহ তার লোকজন আমাদের প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এখনও হুমকি দিচ্ছে।
চেয়ারম্যান আসাদুর রহমান বলেন, ‘ইউপি সদস্যরা ত্রাণের তালিকা তৈরি করা নিয়ে অশালীন আচরণ করেছেন। যার ফলে সময়মতো করোনাভাইরাস সংক্রামণ প্রতিরোধে ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারি সহায়তা দিতে বাধার সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপরে ভাঙ্গুড়া থানার ওসি (তদন্ত) নাজমুল হক জানান, সরকারি কাজে বাধা প্রদানের অভিযোগে খানমরিচ ইউপি চেয়ারম্যান ১২জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে আইনাগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভাঙ্গুড়া ইউএনও সৈয়দ আশরাফুজ্জামান বলেন, দুঃস্থদের তালিকা তৈরি নিয়ে খান মরিচ ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের মধ্যে অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটার সম্ভবনার কারণে বৃহস্পতিবার উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দিয়ে ত্রাণ বিতরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।