পানির নিচে যেভাবে ১৩ ঘণ্টা বেঁচে ছিলেন সুমন বেপারি!

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

জুন ৩০ ২০২০, ১৩:১০

ইলিয়াস সারোয়ার: বুড়িগঙ্গায় লঞ্চডুবির ঘটনায় সুমন বেপারি (৩২) নামের এক যাত্রীকে নদী থেকে ১৩ ঘণ্টা পর জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। ওই লঞ্চ থেকে এই যাত্রীকে উদ্ধারের ঘটনায় অনেকে বলছেন, ‘রাখে আল্লাহ মারে কে? কেউ বলছে, ‘নিশ্চয়ই এর পেছনে বৈজ্ঞানিক কোন ব্যাখ্যা রয়েছে।’ আবার কেউ পুরোপুরি অবিশ্বাস করছে ঘটনাটিকে।

এ বিষয়ে সুমন ব্যাপারে সাংবাদিকদের সাক্ষাতকার দেয়ার সময় বলেন, লঞ্চ ডুবে যাওয়ার সময় আমি একটা রড ধরে রেখেছিলাম। লঞ্চ ডুবে গেলে আমি যেখানে আটকে পরি সেখানে অল্প পানি ছিল আর বাকিটা ছিল খালি জায়গা। আমি সেই পানি দিয়ে ওযু করে দোয়া দরুদ পড়তে থাকি। আমি নিজ থেকে সেখান থেকে বের হওয়ার কোনো চেষ্টা করিনি। এজন্যই হয়তো আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের মহাপরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল সাজ্জাদ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, সাধারণত পানির নিচে ডুবে গেলে যে কোনো মানুষ এক মিনিট থেকে সর্বোচ্চ দেড় মিনিটের মধ্যে অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়াটাই স্বাভাবিক ঘটনা। তবে ময়ূর-২ লঞ্চের ধাক্কায় মর্নিং বার্ড নামক ছোট্ট লঞ্চটি কয়েক সেকেন্ড সময়ের মধ্যে পানিতে তলিয়ে যায়। লঞ্চটি পানির নিচে উল্টে যাওয়ায় বাতাস আটকে থাকে অর্থাৎ এয়ার পকেট তৈরি হয়। সম্ভবত সুমন বেপারি যেখানে অবস্থান করছিলেন সেখানে পানি প্রবেশ করেনি এবং সুমন বেপারি এয়ার পকেট থেকে অক্সিজেন নিয়েই বেঁচে ছিলেন। এটাই একমাত্র কারণ, এ ছাড়া দ্বিতীয় কোনো কারণ নেই।

তিনি আরো বলেন, রাত আনুমানিক ৯টা ৩০ মিনিটে ডুবুরিরা যখন টিউবের মাধ্যমে লঞ্চটি ওপরে তোলার চেষ্টা করছিলেন এবং লঞ্চটির একাংশ ওপরে উঠে আসছিল ঠিক তখনই সুমন বেপারি লঞ্চ থেকে বেরিয়ে আসেন।

সুমন বেপারিকে তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। বর্তমানে তিনি পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সুমন বেপারি পেশায় একজন ফল ব্যবসায়ী এবং তার বাড়ি মুন্সিগঞ্জের আব্দুল্লাহপুর বলে জানা গেছে।