পাওয়ার গ্রিডে বিপর্যয় দুর্ঘটনা নয়, সরকারের ব্যর্থতা: মির্জা ফখরুল
একুশে জার্নাল ডটকম
অক্টোবর ০৫ ২০২২, ১৮:৪১
পাওয়ার গ্রিডে বিপর্যয়কে ‘দুর্ঘটনা’ না বলে এর পেছনে সম্পূর্ণভাবে সরকারের ব্যর্থতাকে দায়ী করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, পাওয়ার গ্রিডে বিপর্যয়ের পেছনে বড় রকমের দুর্নীতি জড়িত রয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে এমন ঘটনা ঘটছে। জাতির স্বার্থে বর্তমান সরকারের পদত্যাগের বিকল্প নেই।
বুধবার বিকেলে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুকে তাঁর বাসায় দেখতে যান বিএনপি মহাসচিব। এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীও তার সঙ্গে ছিলেন। পাওয়ার গ্রিডে বিপর্যয় এবং দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন জিজ্ঞাসায় তিন নেতাই এ সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকার এত চিৎকার-চেচামেচি করছে, সব সময় বলছে আমরা বিদ্যুতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে গেছি। বলা হচ্ছে প্রয়োজনের তুলনায় উৎপাদন আরও বেশি হচ্ছে। গতকালকের ব্যাপারটা হচ্ছে অস্বাভাবিক ব্যাপার। হঠাৎ করে বিদ্যুৎ চলে গেছে। সারাদেশে বেশিরভাগ এলাকায় ছিল না বিদ্যুৎ। প্রায় আট ঘণ্টা এই লোডশেডিং চলে। এর থেকে বোঝা যায় সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনের নাম করে বহু প্রজেক্ট করেছে, টাকা পয়সা বানিয়েছে শেষ পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে এ ধরনের একটা বড় রকমের দুর্যোগের মধ্যে, বিপর্যয়ের মধ্যে জাতিকে তারা ফেলে দিয়েছে।
‘এতে করে সমস্যা হয়েছে-নেট বন্ধ হয়ে গিয়েছে, বিদ্যুতের মাধ্যমে যেসব কলকারখানা চলে তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সন্ধ্যার আগে যে কৃষি ক্ষেতে সেচের ব্যবস্থা করা হয় তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে, যার কারণে ও সহনীয় পরিস্থিতি জাতি অনুভব করেছে।’
বিএনপি নেতা বলেন, ‘কেবল বিদ্যুৎ নয়, রাস্তার বিভ্রাটও ঢাকা শহরে। টঙ্গী থেকে উত্তরা পর্যন্ত আসতে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা সময় লাগে। সব ক্ষেত্রে দেখবেন উন্নয়নের ক্ষেত্রে এই সমস্যাটা হয়ে গেছে।’
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো নিয়ে ফখরুল দাবি করেন, এই পরিকাঠামোয় যেসব প্রতিষ্ঠানের নাম দেয়া হয়েছে, সেগুলোর ব্যাপারে তথ্য দেয়া হবে না।
তিনি বলেন, ‘এটা ভয়াবহ ব্যাপার। আমরা যে বলছি কর্তৃত্ববাদী সরকার তার যে বহিঃপ্রকাশ তারা যে আরও নিয়ন্ত্রণের দিকে যাচ্ছে, দেশকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করবে, দেশের মানুষকে তথ্য থেকে বঞ্চিত করবে এটা তারই বহিঃপ্রকাশ। স্বয়ং রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে যদি এই সার্কুলার আসে তাহলে এই দেশে যে পুরা কর্তৃত্ববাদী হয়ে গেছে, সেটা আর সন্দেহ নেই।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘প্রোপার প্ল্যানিং এর মাধ্যমে তারা (সরকার) কিছু করেনি, সে দিকে তারা মনোযোগী হয়নি। দুর্নীতির জন্য যা যা করা দরকার তাড়াহুড়া করে করেছে। এজন্য একটি পলিটিক্যাল প্রাইস জনগণকে পে করতে হচ্ছে।’
ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ‘সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনের নামে টাকা পয়সা হাতিয়ে নিয়েছে। বিভিন্ন প্রজেক্ট নেয়ার মুল উদ্দেশ্য ছিল দুর্নীতি। এ কারণে জনগণের দুর্ভোগ লাঘব হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘সরকার অপরিকল্পিতভাবে পাওয়ার স্টেশন করেছে। গতকালের মতো বিপর্যয় আরও হবে। সরকার যে ধরনের প্রকল্প নিয়েছে, তার জন্য জনগণকে এ ধরনের আরও সাফারার হবে।’