পরিবেশ ও পরিস্থিতির বিবেচনাহীন ফতোয়া সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরি করে
একুশে জার্নাল
নভেম্বর ২০ ২০১৯, ২২:৩২

ইফতেখার জামিল: আবদুল হাই সাইফুল্লাহ এই সময়ের গুরুত্বপূর্ণ আলেম, তবে গতকালকে তিনি একটি হাদিস শেয়ার করেছেন, যাতে মনে হয়, সেজদার আয়াত পড়লে সেজদা করা ওয়াজিব নয়। এটা বাংলাদেশে চর্চিত মত নয়, অবশ্য কিছু মাজহাব মতে এটা সুন্নতে মুয়াক্কাদা। কথা হচ্ছে, বাংলাদেশের মতো হানাফি প্রধান দেশে ভিন্ন মাজহাব বর্ণনার তো কোন প্রয়োজন নেই। বর্ণনা করলে মতপার্থক্যটা বলে দেওয়া জরুরী। নয়তো অনেকে মনে করবেন, তারা এতদিন ভুল জেনে এসেছেন।
প্রতিষ্ঠিত প্রত্যেক মাজহাবের মতামতের পক্ষে দলীল আছে, এগুলো নিয়ে একাডেমিক তর্ক হয় ও হতে পারে। সেটা বরং স্বাস্থ্যকর। পাবলিক পরিসরে অপ্রচলিত মত বর্ণনা করলে বিভ্রান্তি ও অপ্রয়োজনীয় তর্ক সৃষ্টি হয়। তাহলে পাবলিক পরিসরে মতপার্থক্যপূর্ণ ধর্মীয় চিন্তা শেয়ার করা যাবে না?
অবশ্যই করা যাবে। যদি কোন এক মতের বিশেষ প্রাসঙ্গিকতা থাকে, পরিস্থিতি ও প্রয়োজনের ভিত্তিতে সে মতকে নির্বাচন করার পরিস্থিতি থাকে, তাহলে সে মতের পক্ষে বলা যেতে পারে। সিজদায়ে তিলাওয়াতের মতো বিষয়ে পরিস্থিতি ও প্রয়োজনের ভিত্তিতে কোন একটা বিশেষ মতকে প্রাধান্য দানের কোন প্রাসঙ্গিকতা নেই, ফলে এসব বিষয়ে অনলাইনে বিতর্ক তৈরি করার কোন মানে নেই।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যাপক উপস্থিতিতে কিছু সমস্যা হচ্ছে । আগে নির্দিষ্ট অঞ্চলের জনগণ সেই অঞ্চলের আলেমদের কথাই শুনতো। ফলে স্থান ও কালের প্রশ্ন অত গুরুত্বপূর্ণ ছিলোনা। নির্দিষ্ট অঞ্চলের আলেমগণ নিজ অঞ্চল মাফিক ফতোয়া দিতেন। মুশকিল হচ্ছে, এখন কানাডায় বসে উপমহাদেশের জন্য, আরবে বসে আমেরিকার জন্য বা খোদ বাংলাদেশে বসে আরবের ফতোয়া দেওয়া হচ্ছে বা বলা হচ্ছে, এ ফতোয়া সবার জন্য প্রযোজ্য। এতে নানা সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। পরিবেশ ও পরিস্থিতি বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে না।