নারায়ণগঞ্জে করোনা আক্রান্ত জনবিচ্ছিন্ন পরিবার ঔষধ ও খাদ্যের চরম সংকটে ভুগছে
একুশে জার্নাল
এপ্রিল ১১ ২০২০, ০৫:১৪

নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সিদ্ধিরগঞ্জে একই পরিবারে করোনায় আক্রান্ত তিনজন। পাঁচ সদস্যের মধ্যে দুজনের নেগেটিভ রিপোর্ট আসলেও পজেটিভ রিপোর্ট পাওয়া গেছে ঐ পরিবারের সর্ব কনিষ্ঠ সদস্য ১০ বছরের শিশু সোহানের।
শুক্রবার (১০ এপ্রিল) দুপুর ১.০০ টার দিকে একটি এ্যাম্বুলেন্স সাইরেন বাজিয়ে কাচপুরস্থ সাজেদা ফাউন্ডেশন হাসপাতালের দিকে যাচ্ছিল। জরুরী মনে করে হাসপাতালে গিয়ে যা দেখা গেল- এ্যাম্বুলেন্স হাসপাতালের গেটে থামলে তাকে ইমার্জেন্সিতে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ভর্তি হওয়ার কথা বলে। তাকে বেডে দেওয়ার পর যখনই সবাই জানতে পারে যে “তার পরিবার করোনা আক্রান্ত” তারপর থেকে কোন ডাক্তার, নার্স বা আয়া কেউ তার কাছে আসে না এমনকি রাত পর্যন্ত খবর নিয়ে জানা যায় যে কোন খাবারও দেয়া হয়নি তাকে। যদিও আইইডিসিআরের রিপোর্ট অনুযায়ী তার করোনা নেগেটিভ এসেছে।
এ রোগীর বাড়ি ২ নং ওয়ার্ডের মৌচাক উত্তর পাড়া বশির উদ্দিন মার্কেটের চিশ্তিয়া বেকারির সাথে অবস্থিত। সেখানে গিয়ে দেখা যায় করোনা আক্রান্তের দায়ে গৃহবন্দি (কোয়ারেন্টাইন) এই পরিবার।
রোগীর বড় ছেলে তন্ময় ইসলাম হৃদয়ের সাথে কথা বলে জানা যায়, আমার ছোট ভাই সোহান অসুস্থ হলে ৩ এপ্রিল টেস্টের জন্য নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালে (বর্তমানে করোনা চিকিৎসা কেন্দ্র) নেয়া হলে সেখান থেকে নমুনা সংগ্রহ করে ৬ এপ্রিল তার রিপোর্ট পজেটিভ আসে। পরদিন ৭ এপ্রিল পরিবারের সবাই কেমন অসুস্থতা বোধ করলে সবার নমুনা সংগ্রহের জন্য অনুরোধ করা হয়। অতঃপর ৮ এপ্রিল নমুনা নিয়ে ৯ এপ্রিল বৃহস্পতিবার তারা রিপোর্ট দেয় যে আমার মা ও মেঝ ভাই রিফাতের পজেটিভ এসেছে। আর আমার ও আমার বাবার নেগেটিভ।
খবর পেয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর লোকজন নিয়ে বাড়ি লকডাউন করে দেয়। এমতাবস্থায় আব্বু বেশি অসুস্থ হলে আইইডিসিআর ও স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগের শত চেষ্টা করেও ব্যর্থ হই। পরে আজ আবার যোগাযোগের চেষ্টা করলে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ্যাম্বুলেন্স এসে আব্বুকে দুপুরে সাজেদা হাসপাতালে নিয়ে যায়।
সে আরো জানায় যে, আমাদের বাড়ির সব গেইটে তালা ঝুলানো। কোন বিশেষ প্রয়োজনে বা অসুস্থ হলে হাসপাতালে যাওয়ারও ব্যবস্থা নেই।
কাউন্সিলরের লোকজনকে সকালে বললে রাতে ঔষধ দিয়ে যায়। আর খাবারের কথা বললে বলে, এখানে কোন খাবার পাওয়া যায় না, সবকিছু বন্ধ। এ অবস্থা চলতে থাকলে আমরা করোনায় নয় অনাহারেই মারা যাবো।
এ ব্যাপারে স্থানীয় কাউন্সিলর মোঃ ইকবাল হোসেনের সঙ্গে তার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তাকে পাওয়া যায়নি এবং তার লোকজনও কোন কিছু বলতে পারেনি।