নারায়ণগঞ্জের ফকির নিটে শ্রমিক বিক্ষোভ: অবরুদ্ধ সিভিল সার্জন ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তা

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

মে ১৯ ২০২০, ২২:৫৫

নিজস্ব প্রতিবেদক;

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় রপ্তানিমুখী গার্মেন্ট কারখানা ফকির নিটওয়্যারে অসন্তোষের ঘটনায় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা বিক্ষোভ মিছিল ও ভাংচুর করে। বিক্ষোভ চলাকালে জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ ইমতিয়াজ ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম ফকির নিটওয়্যার পরিদর্শনে গেলে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা তাদের মালিক পক্ষ ভেবে সিভিল সার্জন ও সদর উপজেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তার গাড়ি ভাঙচুর চালিয়েছে। ওই সময়ে দুইজনের গাড়ি চালকের মাথা ফেটে যায়।১৯ মে (মঙ্গলবার) বেলা ১১টায় এই ঘটনা ঘটে।

শ্রমিক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সদর উপজেলা ফতুল্লার কায়েমপুরে ফকির নিটওয়্যারে গত কয়েকদিন ধরেই শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দেয়। শ্রমিকদের দাবী বোনাস প্রদান নিয়ে গার্মেন্ট কারখানা টালবাহনা করছে। ২ মাস ধরে লকডাউনে কাজ করার পরেও আমাদের হাফ বোনাস দিতে চায়। শ্রমিকেরা এটা প্রত্যাখান করেছে। কারণ শ্রমিকেরা তো হাফ কাজ করেনি। শ্রমিকেরা পুরো সময় ধরেই কাজ করেছে। মালিক পুরো বোনাস দিতে চাইলেও জিএম ও এডমিন মূলত টালবাহনা করছে বলে অভিযোগ করছে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা।

এসব অভিযোগে সকাল ১০টা হতেই গার্মেন্টে শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করতে থাকে। এরই মধ্যে এ কারখানায় বেলা ১১টায় নারায়ণগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন মোহাম্মদ ইমতিয়াজ এবং জেলা করোনা বিষয়ক ফোকাল পারসন ও সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম ফকির নিটওয়্যার কারখানা পরিদর্শনে যান। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা তাদের মালিক পক্ষের লোক ভেবে বেতন বোনাস নিয়ে আন্দোলন করা শ্রমিকেরা সিভিল সার্জন ও জাহিদুলের গাড়ি লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। কারখানায় নির্মাণকাজে ব্যবহৃত লোহার রড ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায়। একপর্যায়ে কারখানায়ও ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছে বিক্ষুব্ধরা।এ হামলায় সিভিল সার্জনের গাড়ি চালক সুরুজ্জামানের মাথা ফেটে যায় এবং স্বাস্থ্য কর্মকর্তার গাড়ির চালক জালাল মিয়া আহত হন। শ্রমিকেরা জাহিদুল ইসলামকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। সিভিল সার্জন তাঁর গাড়ি নিয়ে কারখানা থেকে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হন।

সিভিল সার্জন মোহাম্মদ ইমতিয়াজ জানান, ফকির নিটওয়্যারে ১০ জন শ্রমিক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ওই কারখানায় কেন করোনা রোগী বাড়ছে, স্বাস্থ্য সুরক্ষা মানা হচ্ছে কি না সেটি দেখার জন্য তাঁরা পরিদর্শনে যান। কিন্তু হঠাৎ করে পোশাক শ্রমিকেরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন। তাঁর ও জাহিদুল ইসলামের গাড়ি ভাঙচুর করেন। তিনি কারখানা থেকে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হলেও জাহিদুল ইসলাম আটকা পড়ে আছেন।

নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার জায়েদুল ইসলাম বলেন, কারখানায় মূলত বেতন ও বোনাসের দাবিতে ওই কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ চলছিল। সিভিল সার্জন ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সেখানে গেলে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের সামনে পড়ে গেলে তাঁরা হামলা ও ভাঙচুর চালায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।