নভেম্বরেই শুরু হচ্ছে সাতক্ষীরার জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ
একুশে জার্নাল ডটকম
সেপ্টেম্বর ১৬ ২০২০, ১২:২৩
গাজী আব্দুর রহমান, সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি : নভেম্বরেই শুরু হচ্ছে সাতক্ষীরা শহর ও পাশ্ববর্তী এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ। জানালেন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক জনাব এস এম মোস্তফা কামাল। মঙ্গলবার রাতে সাতক্ষীরায় কর্মরত সাংবাদিক ও নাগরিক নেতৃবৃন্দের সাথে জেলা প্রশাসকের জুম কনফারেন্সে এই তথ্য জানানো হয়।
জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে জুম কনফারেন্সে বক্তব্য রাখেন পানি উন্নয়ন বোর্ড সাতক্ষীরা ২নং ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী সুধাংশু কুমার সরকার, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি অধ্যক্ষ আবু আহমেদ, সাবেক সভাপতি সুভাষ চৌধুরী, এড. আবুল কালাম আজাদ, অধ্যক্ষ আশেক-ই-এলাহী, মিজানুর রহমান প্রমুখ।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুধাংশু কুমার সরকার জানান, ১, ২, ৬ ও ৮ নং পোল্ডারে নদী ও খাল খনন, বাঁধ মেরামত এবং বেতনা ও মরিচ্চাপ নদী ড্রেজিং করা হবে। এরফলে নদী ও খালগুলোর নাব্যতা বৃদ্ধি পাবে, নৌ চলাচলের সুযোগ সৃষ্টি হবে, মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে, বনায়ন সম্প্রারণ হবে এবং প্রকল্প এলাকায় নোনা পানি বন্ধ হবে। তিন বছর মেয়াদি এ প্রকল্পের কাজ ২০২৩ সালের জুন মাসে শেষ হবে বলে জুম মিটিংয়ে বলা হয়।
তিনি আরও বলেন, ৪৭৫ কোটি ২৬ লক্ষ টাকা ব্যয়ে গৃহিত এ প্রকল্পের মরিচ্চাপ নদীর ৩৭ কিলোমিটার এবং বেতনা নদীর ৪৪ কিলোমিটার ড্রেজিং করা হবে। এ দুটি নদীর অববাহিকায় অবস্থিত ৮২টি খালের ৩৪৪ কিলোমিটার খনন করা হবে। ৬টি অবকাঠামো এবং ২১ টি নিস্কাশন রেগুলেটর সংস্কার করা হবে। তিনি আরও বলেন, জোয়ার-ভাটার এলাকা হওয়ায় আগামী ৫ বছর পর্যন্ত এ প্রকল্পের সুফল পাওয়া যাবে। তারপর আবার ড্রেজিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। এরজন্য বছরে ১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ পাওয়া যাবে।
জুম কনফারেন্সে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে বলা হয়, ২০১২-১৩ সালে ২৪ কোটি ৯৫ লক্ষ টাকার প্রাক্কলিত মূল্যে বেতনা নদী খনন করা হয়।
সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, আইডব্লিউএম যখন সমীক্ষা চালায় তখন স্থানীয়দের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, ইছামতির সাথে মরিচ্চাপ-খোলপেটুয়ার আন্ত:সম্পর্ক পূর্বের মতো ফিরিয়ে আনতে সকল বাঁধা অপসারণ করতে হবে। সেই সময় বেতনা নদী প্রবাহ রাখতে মাটিয়াডাঙ্গা এলাকায় টিআরএম এর প্রস্তবনা ছিল। কিন্তু ৪৭৫ কোটি টাকার গৃহিত প্রকল্পে সেই প্রস্তাবনা নেই। প্রকল্পের মাধ্যমে মরিচ্চাপ ও বেতনা বেসিনের পানি খোলপেটুয়া দিয়ে নিস্কাশনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কিন্তু খোলপেটুয়া নদী আশাশুনি সদরে এখন অস্তিত্ব সংকটে রয়েছে। আগামী ৫ বছর পর তা আরও ভাটির দিকে অগ্রসর হয়ে আশাশুনির শ্রীউলা-প্রতাপনগরেও নদীর অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ৪৭৫ কোটি টাকার প্রকল্পের সুফল কতটুকু পাওয়া যাবে তা নিয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন তোলেন।
সাংবাদিকরা নদী-খালগুলো সিএস ম্যাপ অনুযায়ী দখলমুক্ত করার বিষয়টি উত্থাপন করলে কনফারেন্সের সভাপতি জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল দ্রুত তা শুরু করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশ দেন।
জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা মতে সিএস ম্যাপ অনুযায়ী অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে কোন বাঁধা নেই। তিনি বলেন, প্রাণসায়র খালের শহরাংশে ২৫৩টি অবৈধ স্থাপনার মঙ্গলবার পর্যন্ত ১০৭টি উচ্ছেদ করা হয়েছে। বাকীগুলোর উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত আছে।