নব্য জাহেলিয়াত মোকাবেলায় চাই প্রজ্ঞাপূর্ণ দা’ওয়াহ -মুফতি হারুন ইজহার

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

মার্চ ২৮ ২০১৯, ১১:৪০

কাজী শহিদুল্লাহ ওয়াহিদ; ভূখন্ড ও ভাষাভিত্তিক পরিচিতি একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া; তবে এটাকে মতবাদের জায়গায় নিয়ে যাওয়া, জাতীয়তাবাদের সঙ্কীর্ণ চেতনার উন্মাদনা প্রকাশ একটি নব্য জাহেলিয়াহ। বিভিন্ন দিবসকে কেন্দ্র করে বর্তমানে নতুন নতুন জাহেলিয়াহর প্রচলন ঘটতে চলছে স্বাধীনতার কথিত চেতনার নামে।
এসবের কিছুকিছু সরাসরি শিরক-কুফরের সাথে সম্পৃক্ত; কোনটা কুসংস্কার।
এগুলোর মোকাবেলায় চাই তারুণ্যের প্রজ্ঞাপূর্ণ ব্যাপক দা’ওয়াতী তৎপরতা।

গত (২৬ মার্চ) মঙ্গলবার, তারুণ্যের বুদ্ধিবৃত্তিক প্লাটফর্ম ইসলামী রেনেসাঁর উদ্যোগে হাটহাজারী রহিমপুর দারুল কুরআন মাদরাসায় আয়োজিত ‘ বাঙালী মুসলমানের মুক্তিসংগ্রাম ও স্বাধীনতার চেতনা’ শীর্ষক সেমিনারে শায়খ হারুন ইজহার একথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, ধর্মনিরপেক্ষতা কখনো স্বাধীনতার চেতনা ছিলনা; এটা সেক্যুলারদের প্রতারণা। স্বাধীনতার চেতনার প্রকৃতি কখনোই আদর্শিক ছিলনা ; বরং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও অধিকারকেন্দ্রিক।
এটাকে আদর্শিক জায়গায় নিয়ে গিয়ে স্বাধীনতার চেতনাকে ইসলামের বিপক্ষে দাঁড় করানোর অপচেষ্টা একটি ষড়যন্ত্র।
তিনি আরো বলেন, উম্মাহর সত্যিকার অধিকার প্রতিষ্ঠায় চাই সর্বক্ষেত্রে ইসলামী জীবনবিধানের বাস্তব প্রয়োগ। আর এটা বাস্তবায়নে এদেশের একমাত্র বিকল্প বৈপ্লবিক দা’ওয়াহ।

সেমিনারে বিশেষ আলোচক ছিলেন, আল-ঈমান স্কুল এন্ড কলেজের প্রিন্সিপাল,বিশিষ্ট রাজনীতিক জনাব আবদুর রহমান চৌধুরী। অন্যান্য আলোচকদের মধ্যে ছিলেন বোয়ালখালী মাদরাসার শিক্ষক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক মাওলানা হেলালুদ্দীন পুকুরিয়বী, আল-হুদা মাদরাসার পরিচালক মাওলানা মীর ইদরীস নাদাবী। বাইতুস সালাম মাদরাসার শিক্ষক, ইসলামী রেনেসাঁর দায়িত্বশীল মাওলানা মিজানুর রহমান, মাওলানা আবদুল কাইয়ুম ফতেহপুরী। উপস্থিত ছিলেন সুমাইয়া রাজি. মহিলা মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মাওলানা জাহাঙ্গীর মেহেদী, মাওলানা জয়নাল আবেদীন, মাওলানা এনায়েতুল্লাহ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন ইসলামী রেনেসাঁর সিনিয়র দায়িত্বশীল মুফতী মাসউদুর রহমান চৌধুরী।

বিশেষ আলোচকের বক্তৃতায় জনাব আবদুর রহমান চৌধুরী বলেন, ইতিহাসের বড়বড় বিপর্যয় ঘটেছে মুনাফিকদের কারণে। অতএব আমাদের মুনাফিকদের ব্যপারে সতর্ক থাকতে হবে। তাদের সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে। আমাদের মধ্যে লেবাসধারী বহু মোনাফিক ঢুকে পড়েছে। তাদের প্রতিহত করা জরুরী।

অনুষ্ঠানের সভাপতির বক্তৃতায় মুফতী হাবিবুর রহমান কাছেমী বলেন, স্বাধীনতার চেতনার দিকে গুরুত্ব দিলে আগে ইতিহাসের অধ্যয়ন বাড়াতে হবে। আমাদের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সেই প্রবণতা খুব একটা পরিলক্ষিত হয়না, এটা দুঃখজনক। তাছাড়া স্বাধীনতার ইতিহাসের কথা বলে শুধু একাত্তরের পরবর্তী সময়ের চর্চা করলে হবে না বরং ফিরে যেতে আরো গোড়ার দিকে। একাত্তরকে আমরা পেয়েছি সাতচল্লিশের মধ্যমে। সেই ইতিহাস আমরা চর্চা করি না। অথচ আমাদের মূল স্বাধীনতা তখনই হয়েছিল। বৃটিশদের থেকে আমরা সম্মিলিতভাবে লড়াই করে স্বাধীন হয়েছি। পরবর্তী যা হয়েছে তা হচ্ছে দেশ ভাগ। এটা ছিল জালেমের বিরুদ্ধে মাজলুমের লড়াই। অতএব ভুলে গেলে চলবে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার প্রেক্ষাপটে হল সাতচল্লিশে বৃটিশ খেদাও আন্দোলন। আর সেই আন্দোলনের মুখ্য ভূমিকা পালন করেছেন আমাদের দেওবন্দী ওলামায়ে কেরাম।
সর্বশেষে সভাপতির আলোচনা ও দোয়ার মাধ্যমে সেমিনারের সমাপ্তি ঘোষণা হয়।