দেশের মানুষের মধ্যে ঈদের আনন্দ নেই: মির্জা ফখরুল

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

মে ০৩ ২০২২, ১৯:২৫

দেশের মানুষের মধ্যে ঈদের আনন্দ নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মঙ্গলবার ঈদের দিন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত ও পুস্পমাল্য অর্পণের পর দেশের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে দলের মহাসচিব এ মন্তব্য করেন।

আজ বেলা সাড়ে ১১টায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান শেরে বাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের সমাধিস্থলে এসে তার কবরে পুস্পমাল্য অর্পণ করে সুরা ফাতেহা পাঠ করেন।

সেখানে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ঈদে আমরা সবসময় এই প্রত্যাশা করি যে, দেশের সকল মানুষের মধ্যে আনন্দ আসবে এবং আনন্দের সঙ্গে তারা ঈদুল ফিতর পালন করবেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যের ব্যাপার, যেভাবে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে, যেভাবে দেশে অর্থনৈতিক অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে এবং একই সঙ্গে সাধারণ মানুষ কর্মচ্যুত হচ্ছেন, সেখানে আনন্দের সঙ্গে ঈদুল ফিতর পালন করা সম্ভব হচ্ছে না। মানুষের মধ্যে আনন্দ নেই।’

তিনি বলেন, ‘তারপরও আমরা পরম করুণাময় আল্লাহ তায়ালার কাছে প্রার্থনা করি তিনি যেন এই অবস্থার অবসান ঘটান। আমরা যেন এই স্বৈরশাসনের অবসান ঘটিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারি, আমরা যেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে পারি এবং আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে পারি, এই হচ্ছে আজকে আমাদের প্রার্থনা।’

দলের নেতাকর্মীদের অনুভূতির কথা বলতে গিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার দিনে আমরা দলের প্রতিষ্ঠাতা স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে আসি জিয়ারত করতে। এবার অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হৃদয়ে আমরা এসেছি যে, দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া তিনি গৃহবন্দি অবস্থায় আছেন। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তিনি মিথ্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে বিদেশে নির্বাসিত অবস্থায় আছেন।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের প্রায় ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদেরকে আসামি করা হয়েছে, প্রায় ৬০০-এর বেশি নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে, সহাস্রাধিক নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। এরকম একটা চরম ফ্যাসিবাদী শাসনে আজকে গণতান্ত্রিক অধিকারকে সম্পূর্ণভাবে হরণ করা হয়েছে এবং মানুষের যে মৌলিক অধিকারগুলো আছে তা থেকে তারা বঞ্চিত হচ্ছে।’

সাজাপ্রাপ্ত সংসদ সদস্য হাজি সেলিমের বিদেশে গমনের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই ঘটনা থেকে প্রমাণিত হয় যে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক কারণে, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে তাকে আটক করে রাখা হয়েছে। এটা তো আপনার এখন আর কারও কাছে এটার কোনো প্রশ্ন করতে পারে না। এজন্য শুধু আমরা নই বিদেশেও বলা হচ্ছে যে, তার এই সাজা দেওয়া হয়েছে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক কারণে।’

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জয়নুল আবদিন ফারুক, রুহুল কবির রিজভী, মাহবুব উদ্দিন খোকন, হাবিব উ্ন নবী খান সোহেল, মীর সরফত আলী সপু, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, ঢাকা মহানগরে আমিনুল হক, রফিকুল আলম মজনু, হাবিবুর রশীদ হাবিব, স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তাফিজুর রহমান, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জু্য়েল, ওলামা দলের শাহ নেছারুল হক, মৎস্যজীবী দলের রফিকুল ইসলাম মাহতাব, আবদুর রহীম, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ প্রমূখ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, কারাভোগের আগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া প্রতিটি ঈদে তার স্বামীর কবর জিয়ারত করতেন। সেই ধারাবাহিকতা রক্ষায় মহাসচিবসহ নেতারা প্রতি বছর জিয়ার কবর জিয়ারত করেন।