দলে ফেরার আশায় ইমরুল কায়েস
একুশে জার্নাল ডটকম
অক্টোবর ০৩ ২০১৯, ২১:২০
কোন যুক্তিতে আশা করি সেটা বলতে পারব না। কিন্তু আশা তো সবাই করে। আশা নিয়েই সবাই সামনে আগায়। আমিও সেই আশা নিয়েই অপেক্ষায় আছি। যদি সামনে সুযোগ আসে সেই সুযোগ কাজে লাগানোর চেষ্টা করব। সামনে যদি সুযোগ আসে অবশ্যই চেষ্টা করব শতভাগ দেয়ার।
জাতীয় দলে খেলার সুযোগ খুব কমই আসে। আর সুযোগ পেলে নিজের সেরাটা দিয়ে প্রমাণ করেন, ইমরুল কায়েস এখনও ফুরিয়ে যাননি। বুধবার মিরপুর একাডেমিতে অনুশীলনের এক পর্যায়ে ইমরুল কায়েস।
ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ছেলেকে নিয়ে বেশ কয়েকদিন দেশ-বিদেশে ছোটাছুটির মধ্যে ছিলেন ইমরুল কায়েস। মন দিতে পারেননি ক্রিকেটে। জোর বিবেচনায় থাকলেও ব্যক্তিগত এই সংকটের কারণে আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে তাকে স্কোয়াডে রাখতে পারেননি নির্বাচকরা। সব দুর্দিন পেরিয়ে ইমরুল অবশেষে ফিরেছেন ক্রিকেটে, শুরু করেছেন নিবিড় অনুশীলন। আপাতত লক্ষ্য জাতীয় লিগে বড় কিছু করা। বড় লক্ষ্য ভারত সফরের দল ফেরা।
ইমরুলের দলে আসা এবং দল থেকে বাদ পড়া অবশ্য এখন আর বড় খবর নয়, এটা এখন বাংলাদেশের ক্রিকেটের নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। কখনো চোটে বাদ পড়েছেন, কখনো আবার পারফর্ম করেও দলের কৌশল কিংবা চাহিদায় কোপ পড়েছে তার উপর। কখনো বা নিজেও মেটাতে পারেননি দলের চাহিদা।
কিন্তু বাংলাদেশ দলের টপ অর্ডারে অন্যদের ব্যর্থতায় ইমরুলের একটা সুযোগ বারবার এসেই যায়। আবারও তেমনি পরিস্থিতি। নভেম্বরে ভারতের বিপক্ষে টি২০তে হয়তো তিনি বিবেচিত নন। কিন্তু ভারতের মাঠে দুই টেস্টের সিরিজে ইমরুল থাকবেন জোর বিবেচনাতেই।
বিশ্রাম কাটিয়ে ভারত সফরে ফিরবেন তামিম। তাতে সুযোগ কমে যাওয়ার কথা ইমরুলের। কিন্তু আফগানিস্তান সিরিজে সৌম্য সরকার, লিটন দাস কিংবা সাদমান ইসলাম কেউই নিজেদের রাঙাতে পারেননি। এখানে তাই একটা জায়গা দেখছেন তিনি। আরও একবার তার আশা টেস্ট দলে ফেরার, ‘কোন যুক্তিতে আশা করি সেটা বলতে পারব না। কিন্তু আশা তো সবাই করে। আশা নিয়েই সবাই সামনে আগায়। আমিও সেই আশা নিয়েই অপেক্ষায় আছি। যদি সামনে সুযোগ আসে সেই সুযোগ কাজে লাগানোর চেষ্টা করব। সামনে যদি সুযোগ আসে অবশ্যই চেষ্টা করব শতভাগ দেয়ার।’
তার জন্য ইমরুলের সামনে আছে জাতীয় লিগ। ১০ অক্টোবর থেকে শুরু হতে যাওয়া লিগে ইমরুল খেলবেন খুলনা বিভাগের হয়ে। অন্তত প্রথম দুই রাউন্ড খেলে বড় কিছু করে দলে ফেরার দাবি জানাতে মরিয়া তিনি, ‘টেস্ট সিরিজের আগে এমন একটা সুযোগ পাওয়া প্রতিটি ক্রিকেটারের জন্য অবশ্যই ভালো। এমনকি যারা ‘এ’ দলের হয়ে খেলছে তাদের জন্য বড় সুযোগ চারদিনের ম্যাচ খেলা। আমি ব্যক্তিগতভাবে খুবই ফোকাস থাকব এবং চেষ্টা করব এনসিএলে নিজের সেরাটা দেয়ার।’
ডেঙ্গু আক্রান্ত ছেলের অবস্থা জটিল আকার নিলে তাকে নিয়ে যেতে হয় সিঙ্গাপুর। সেখানে উন্নত চিকিৎসার পর ইমরুলের পরিবারে ফিরেছে স্বস্তি। এবার আরেকটি বড় স্বস্তির খোঁজে আছেন টেস্টে তামিম ইকবালের পর পরিসংখ্যানে বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল ওপেনার।
বুধবার ইমরুল গত মাসের বিপদের কথা জানিয়ে বলেন, ‘আসলে প্রথমে আমার ছেলের ডেঙ্গু হয়েছিল। ডেঙ্গু থেকে পরে আরো দুইটা রোগ হয়। আমাদের উপমহাদেশে মালেশিয়ার দিকে এই রোগ বেশি থাকে। এজন্যই বাংলাদেশের ডাক্তাররা বুঝতে পারছিল না কী রোগ। এই জন্য প্রথমবার সিঙ্গাপুর থেকে আসার পর ভালো হয়ে গেলেও আবার সমস্যা শুরু হলে আবার যেতে হয়েছে। এবার চিকিৎসকরা বলছেন আশা করি আর হবে না।’
ইমরুল আরও বলেন, ‘এক-দেড় মাস ধরে সম্পূর্ণ ক্রিকেটের বাইরে ছিলাম। বাচ্চার অসুস্থতার কারণে কোনোভাবেই এদিকে ফোকাস করতে পারছিলাম না। এখন আলহামদুলিলস্নাহ সুস্থ আছে সে। চেষ্টা করব শতভাগ সময় দিয়ে ক্রিকেটে ফেরার।’
আস্তে আস্তে বিপদ কেটে গেছে। নিজেও তাই আবার ফিরেছেন অনুশীলনে। ইমরুল নিজেই কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে বলছিলেন, এ রকম বিপদ কোনো বাবা মার হোক সেটা তিনি চান না। যার ওপর দিয়ে যায়, সেই সবচেয়ে ভালো বুঝতে পারে। সন্তানের জন্য দোয়াও চেয়েছেন সবার কাছে।