তুরস্কের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিমান ধ্বংসের অভিযোগ আর্মেনিয়ার
একুশে জার্নাল ডটকম
সেপ্টেম্বর ৩০ ২০২০, ১৩:০৭
নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে শুরু হওয়া সংঘাতে বড় ধরনের উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) আর্মেনিয়ার একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার কথা জানিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তাদের অভিযোগ, সোভিয়েত আমলে তৈরি এসইউ-২৫ বিমানটিকে ভূপাতিত করেছে আজারবাইজানকে সমর্থন দেওয়া তুরস্কের এফ-১৬ বিমান। তবে ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছে তুরস্ক। এদিকে বিরোধপূর্ণ ওই পার্বত্য অঞ্চলে গত তিন দিনের সংঘাতে প্রায় একশ’ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের পুরনো সংঘাত গত রবিবার থেকে নতুন করে আবার শুরু হয়েছে। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত দুই দেশের এই সংঘাত ওই অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশেষ করে এই সংঘাতে রাশিয়া ও তুরস্কের জড়িয়ে পড়ার জোরালো আশঙ্কা করছেন অনেকেই। কেননা, আর্মেনিয়ায় রয়েছে রাশিয়ার সামরিক ঘাঁটি আর বর্তমান সংঘাতে আজারবাইজানকে সমর্থন দিচ্ছে তুরস্ক।
মঙ্গলবার আর্মেনিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, নিজেদের আকাশসীমায় অবস্থানকারী এসইউ-২৫ যুদ্ধবিমানটিকে গুলি করে ভূপাতিত করে তুরস্কের এফ-১৬ যুদ্ধবিমান। এতে বিমানটির পাইলট নিহত হয়। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিধ্বস্ত হওয়া বিমানটি সামরিক কাজে নিয়োজিত ছিল।
তবে বিমান ভূপাতিতের অভিযোগ অস্বীকার করে তুরস্কের যোগাযোগ পরিচালক ফাহরেত্তিন আলতুন বলেছেন, ‘প্রচারণার সস্তা কৌশল প্রয়োগের বদলে দখলকৃত এলাকা থেতে আর্মেনিয়ার সরে যাওয়া উচিত।’ আজারবাইজানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ও তুরস্কের বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
এর আগে রাশিয়ার তরফে বলা হয়েছে, নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলের সংঘাত নিয়ে আর্মেনিয়া, আজারবাইজান ও তুরস্কের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রাখছে তারা। ক্রেমলিনের এক বিবৃতিতে বলা হয়, সামরিক সহায়তা দেওয়া নিয়ে কোনও আলোচনা হলে তাতে কেবল বিরোধী পক্ষের ক্ষোভকে উসকে দেবে।
উল্লেখ্য, নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলটি আজারবাইজানের ভেতরে অবস্থিত হলেও ইয়েরেভান সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ে তা নিয়ন্ত্রণ করছে আর্মেনীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। ১৯৮০-এর দশকের শেষদিকে অঞ্চলটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে সংঘাত শুরু হয়। ১৯৯১ সালে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের মুহূর্তে সংঘর্ষ চূড়ান্ত আকার ধারণ করে। ১৯৯৪ সালে দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার আগ পর্যন্ত এই সংঘর্ষে ৩০ হাজার মানুষ নিহত হয়। পরে ২০১৬ এবং এই বছরের শুরুতেও সংঘাতে জড়ায় দুই পক্ষ।