তারাকান্দায় ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন কাজে অনিয়ম আর ধীরগতি: অতিষ্ঠ ব্যবসায়ীরা

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

জুলাই ০৪ ২০২০, ১২:২২

নীহার বকুল; বিশেষ প্রতিনিধি>

ময়মনসিংহ জেলার তারাকান্দা উপজেলায় ৫শত মিটার ড্রেন নির্মাণ কাজে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযােগ উঠেছে। রাতের আঁধারেও চলছে এই দায়সারা কাজ যদিও তা কোন নিয়মেই পড়েনা, অভিযােগ স্থানীয় ব্যবসায়ীদের। ব্যবসায়ী ও জন সাধারণের যাতায়তে জনদূভোগ এখন চরম সীমায়। ঠিকাদারের স্বেচ্ছাচারিতা ও ধীর গতিতে কাজ চলায় মানুষের সীমাহীন দূর্ভোগ পােহাতে হচ্ছে।একটি জায়গার কাজ শেষ না করেই তিনটি সাইটে অল্পবিস্তর কাজ করায় ব্যবসা বাণিজ্য শেষ হয়ে গেছে,ইতিপূর্বে কোভিড-১৯ ভাইরাসে লকডাউন থাকায় এমনিতেই দোকান বন্ধ থাকায় তারা ক্ষতির স্বীকার,সামনে ঈদ তাই এখন বিক্ষিপ্ত কাজের জন্য পায়ে হাটার সুযোগ না থাকায় ক্রেতাসাধারণ আসে না।

২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে সিডিউল ড্রপের মাধ্যমে কাজ পায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স শাহরিয়া এন্টারপ্রাইজ। নির্মাণাধীন ড্রেনের বিপরীতে বরাদ্দ ছিল ১ কোটি ১০ লাখ ৮৯ হাজার ১৬০ টাকা। কাজের শুরু থেকেই ওই প্রকল্পে অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার অভিযােগ উঠেছে। সূত্রে জানা যায়, গত ১৬-০৬-২০২০ইং তারিখ থেকে ০৯-০৭-২০২০ইং তারিখ পর্যন্ত ওই কার্য দিবসের মধ্যে কাজ সমাপ্তি করার কথা থাকলেও শতভাগ কাজ কোথাও হয়নি। কাজ শুরুর প্রথমেই ড্রেজারের মাধ্যমে ৬ ফুট গর্ত করে মাটি উত্তোলণ করা হয়। পুরাতন ড্রেন খুঁড়ে পঁচা কাদা মাটি রাখা হচ্ছে রাস্তার উপর। এতে একদিকে রাস্তা বন্ধ হয়ে চলাচলে বিপত্তি ঘটছে। অন্য দিকে ময়লার দৃর্গন্ধে ব্যবসায়ীরা অতিষ্ট হয়ে উঠেছে। বর্ষা মৌসুমে চলছে ড্রেনের গর্তের কারণে সামান্য বৃষ্টিতে পানি উপচে পড়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে ব্যাপক ভাঙ্গন ধরে ক্ষতি সাধিত হচ্ছে। সিডিউল মােতাবেক কাজ করছেন না ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। অভিযােগ রয়েছে, ৮ ইঞ্চি বেজমেন্ট ঢালাই দেওয়ার কথা থাকলেও ৬ ইঞ্চি ঢালাই দেওয়া হচ্ছে,তাও পানি ভর্তি গর্তে। বাইন্ডার ৮ ইঞ্চি পর পর দেওয়ার কথা থাকলেও দেওয়া হচ্ছে ১২-১৩ ইঞ্চি পর পর। নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে বেজমেন্টের ঢালাই দেওয়া হচ্ছে বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। এ ব্যাপারে মােবাইল ফোনে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে কথা বললে তিনি কোন সদোত্তর দিতে রাজি হয়নি।ড্রেন নির্মাণীধীন প্রকল্পের কাজে তদারকির দায়িত্বে রয়েছেন উপ-সহকারী প্রকৌশলী শেরিকুল ইসলাম,কিন্তু প্রায়শই তাকে খুঁজে পাওয়া যায়না। এই বিষয়টি নিয়ে উপজেলা প্রকৌশলী শফিউল্লাহ খন্দকারের সাথে যােগাযােগ করলে তিনি বলেন,কাজে কোন অনিয়ম আমি দেখছি না,পুরাতন স্লাব কোন নিয়মে পড়ে জানতে চাইলে তিনি এগুলো পরিবর্তন করানো হবে বলে জানান। উল্লেখিত বিষয় নিয়ে তারাকান্দা উপজেলা নির্বাহী অফিসার জান্নাতুল ফেরদৌস এর সাথে মােবাইল ফোনে কথা বললে তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে ইতােমধ্যে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে কথা হয়েছে। তিনি পুরাতন স্লাব ও ময়লা আবর্জনাপূর্ণ কাঁদা মাটি দিয়ে কাজ করার সত্যতা স্বীকার করেন এবং পরবর্তী সময়ে ওই সমস্ত কাজ সঠিকভাবে করে দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যে নির্দেশনা করেছেন বলে জানান। শিডিউল মোতাবেক কাজ হচ্ছে কিনা তা সরেজমিন ঘুরে চলমান কাজের অনিয়ম দেখে প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।

উল্লেখ্য যে, ড্রেনেজ ব্যবস্থার জন্য বাজারের রাস্তাগুলো সামান্য বৃষ্টিতে ডুবে যেতো জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও বণিক সমিতির দাবির প্রেক্ষিতে মাননীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ এম,পি বাজারের কাঁচাবাজার, ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা, সংযোগ সড়ক,গলির রাস্তার উন্নয়নে প্রকল্পটির ব্যবস্থা করেন।

নিম্নমানের কাজের জন্য তা টেকসই হবে না বলে সকলে মতামত ব্যক্ত করেন।