তাবিজ লেখার অজুহাতে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ মাদরাসা পরিচালকের বিরুদ্ধে
একুশে জার্নাল ডটকম
নভেম্বর ১০ ২০২০, ১৪:১৩
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, রংপুর: রংপুর জেলার সদর উপজেলার সদ্যপুস্করিনী ইউনিয়নে মাদ্রাসার এক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়ন করার অভিযোগ উঠেছে মাদ্রাসা পরিচালকের বিরুদ্ধে। যৌন হয়রানির শিকার ওই ছাত্রীর অভিযোগ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে অভিযুক্ত মাদ্রাসা পরিচালকের শাস্তির দাবিতে এলাকাবাসী বিভিন্নভাবে আন্দোলন গড়ে তলে ফলে মাদ্রাসা পরিচালক মাওলানা আনোয়ার কাসেমী ওরফে হুজুর রহস্যজনকভাবে গাঢাকা দিয়েছেন।
সরেজমিনে জানা যায় , রংপুর সদরের সদ্যপুস্করিণী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ঠাটারিপাড়া গ্রামের “ঠাটারিপাড়া আজিজুল উলুম মহিলা মাদ্রাসা লিল্লাহ বোর্ডিং ” এর পরিচালক মাওলানা আনোয়ারুল ইসলাম কাসেমী তার বাড়ির পাশে মহিলা মাদ্রাসা স্থাপন করে।
সেখানে আবাসিক ছাত্রী আছে ৩০ জন।ওই ছাত্রীদের মধ্যে কয়েকজনের অভিযোগে জানা গেছে, মাদ্রাসায় শুক্রবার বন্ধ থাকে তাই অনেকে বাড়ি চলে যায়। এ সুযোগে মাদ্রাসার এক ছাত্রীকে হুজুর বলেন,
তিনি গায়ে তাবিজ লিখে দিলে এক মাসের মধ্যে বিয়ে হবে এবং ভালো স্বামী পাওয়া যাবে। তার কথায় বিশ্বাস করে ওই ছাত্রী রাজি হন।
শুক্রবার রাত ১০টার দিকে তার কক্ষে ডেকে নিয়ে ছাত্রীর বিভিন্ন স্পর্শকাতর জায়গায় তাবিজ লিখে দেন। শতভাগ নিশ্চয়তা দিয়েই তাবিজ লেখার অজুহাতে, এভাবে তিন দিন তিনি ওই ছাত্রীর ওপর যৌন নিপীড়ন চালান। ছাত্রী কাউকে না বলে মাদ্রাসা থেকে বাড়ি চলে যায়।
এরপর, প্রথমে ঘটনাটি তার অভিভাবক কে বলেন,তারা শোনামাত্রই স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীর শরণাপন্ন হন। তারপর হুজুর কর্তৃক নির্যাতনের কথা বিভিন্ন গণমাধ্যম ও ফেসবুকে মুহূর্তে তা ভাইরাল হয়ে যায়। ঘটনা জানাজানি হলে অভিযুক্ত মাদ্রাসা পরিচালক মাওলানা আনোয়ার কাসেমী পলাতক রয়েছেন।
এ ঘটনায় এলাকায় অভিযুক্ত মাদ্রাসার পরিচালকের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করে, সোমবার ইউনিয়নের পালিচড়া হাটে ভুক্তভোগী ছাত্রীর অভিভাবক ও এলাকাবাসী বিভিন্ন আন্দোলন গড়ে তোলে বিচারের দাবি জানায়।
তবে ইউনিয়নের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও উক্ত মাদ্রাসা ছাত্রী যৌন নিপীড়নের ঘটনাটির বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয় নি।
অন্য দিকে, যৌন নিপীড়নের উক্ত ঘটনাটি ইউনিয়নে আলোচনা-সমালোচনার জানান দিলেও সদর উপজেলার স্থানীয় প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এখন পর্যন্ত কোন কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি বলে জানিয়েছেন, সদর উপজেলার প্রস্তাবিত প্রেসক্লাবের সেক্রেটারি খন্দকার মিলন আল মামুন। তিনি আরও বলেন,উক্ত ঘটনাটি নিয়ে কোন ধরনের বারাবাড়ি ও মামলা না করতে যৌন নিপীড়নের শিকার ওই ছাত্রী ও তার পরিবারকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
এ বিষয়ে রংপুর সদর কোতোয়ালি থানার কর্মকর্তা সঙ্গে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।