তাবলীগের চলমান সংকটের মূল কারণ পূর্বের তিন হযরতজ্বীর পদাঙ্ক অনুসরণ না করা -আল্লামা বাবুনগরী

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

জানুয়ারি ১৪ ২০১৯, ০৮:১৩

হেফাজত মহাসচিব ও হাটহাজারী মাদরাসার সহযোগী পরিচালক আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেছেন,
দাওয়াতে তাবলীগের চলমান সংকটের মূল কারণ হলো পূর্বেকার তিন হযরতজ্বীর পদাঙ্ক অনুসরণ না করা এবং ওলামায়ে কেরামের সাথে তাবলীগী সাথীদের দূরত্ব ৷ তাই চলমান সংকট নিরশনে হযরতজ্বী ইলিয়াস রহ.হযরতজ্বী ইউসুফ রহ. ও হযরতজ্বী ইনামুল হাসান রহ.এর পদাংঙ্খ অনুসরণ করে হক্কানী ওলামায়ে কেরামের দিক নির্দেশনা মেনে তাবলীগের কাজ করতে হবে ৷

গত ১১ জানুয়ারী শুক্রবার বাদ মাগরিব দারুল উলুম হাটহাজারী মাদরাসার বার্ষিক মাহফিল ও দস্তারবন্দি সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন৷

তিনি বলেন, দাওয়াত ও তাবলীগের সূচনাকাল থেকেই হক্কানী ওলামায়ে কেরামগণ এ মোবারক মেহনতের সাথে জড়িত ছিলেন ৷হযরত হাকীমুল উম্মাত আশরাফ আলী থানভী রহ.সায়্যেদ হুসাইন আহমদ মাদানী রহ.আল্লামা যাফর আহমদ উসমানী রহ, শাইখুল হাদীস জাকারিয়া রহ.আল্লামা আবুল হাসান আলী নদভী রহ,আল্লামা মনজুর নোমানী রহ সহ তৎকালীন সময়ের বড় বড় ওলামায়ে কেরাম এ কাজ করেছেন ৷

ওলামাযে কেরামের কুরবানীর বদৌলতেই তাবলীগের কাজ আজ পুরো বিশ্বে চলছে ৷ তাই সকল ফিৎনা থেকে বাঁচতে তিন হযরতজ্বীর পথ অনুসরণ করে ওলামায়ে কেরামের সার্বিক তত্বাবধানে এ কাজ করতে হবে ৷

আল্লামা বাবুনগরী আরো বলেন,একটা রাষ্ট্রের মূল ভিত্ত হলো সংবিধান ৷ সংবিধান কুরআন সুন্নাহ অনুযায়ী হলে রাষ্ট্রের সর্বক্ষেত্র শান্তিময় হয় ৷ সংবিধান মানবরচিত হলে সেই সংবিধানের মাধ্যমে মানব জীবনে কোন কল্যাণের আশা করা যায় না ৷ মানবপ্রণীত সংবিধান দ্বারা কখনো শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়নি, হচ্ছে না, হবেও না ৷

তিনি আরো বলেন,মুসলমান হিসেবে একজন মুসলমানের ঈমানী দাবি আর বিশ্বাস হলো মহান আল্লাহর উপর পূণঃআস্থা ও বিশ্বাস স্থাপন করা ৷ আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস স্থাপন ছাড়া ঈমানদার হওয়া যায় না ৷ একজন মুসলমানের ব্যক্তি জীবন থেকে শুরু পারিবারিক, সামাজিক রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডল সহ সর্বক্ষেত্র আল্লাহর উপর আস্থা ও বিশ্বাসের মূলনীতি থাকা বাধ্যতামূলক ৷

বাংলাদেশ ৯০% মুসলমানের দেশ ৷ সংবিধান রাষ্ট্রের মূল হিসেবে সংবিধানের মূল ভিত্তি যদি আল্লাহর উপর পূণঃ আস্থা বিশ্বাসের উপর না থাকে তাহলে মুসলমানদের জীবনে এর বিরূপ প্রভাব হয় ৷ সংবিধানে আল্লাহর উপর আস্থা বিশ্বাস না থাকলে একজন মুসলমান ব্যক্তি হিসেবে মুসলমান স্বীকৃত হলেও রাষ্ট্রীয়ভাবে মুসলমান স্বীকৃত হয় না ৷ তাই সংখ্যাঘরিষ্ট মুসলমানের দেশের সংবিধানে আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাসের মূলনীতি পূণঃস্থাপন করতে হবে৷ এটা এদেশের তৌহিদী জনতার প্রাণের দাবী ৷

আল্লামা বাবুনগরী আরো বলেন, মহান আল্লাহ, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটুক্তিকারী নাস্তিক মুরতাদের বিরুদ্ধে হক্কানী আলেমদের ঈমানী আন্দোলন চলবেই ৷মুসলিম উম্মাহর ঈমান আকিদা রক্ষার্থে এদেশের হক্কানী ওলামায়ে কেরাম প্রয়োজনে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে নাস্তিক মুরতাদের বিরুদ্ধে দূর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে ৷

হক্কানী ওলামায়ে কেরামের ঈমানী আন্দোলন কোন দল বা পার্টির বিপক্ষে নয় ৷ এদেশের হক্কানী ওলামায়ে কেরামে আন্দোলন ঈমানী আন্দোলন ৷ মুসলমানদের ঈমান আকিদা রক্ষার জন্যই এ দেশের হক্কানী ওলামায়ে কেরাম আন্দোলন করেন ৷ইসলাম বিরোধী অপশক্তি আর নাস্তিক মুরতাদের বিরুদ্ধে হক্কানী ওলামায়ে কেরামের আন্দোলন ছিল,আছে,থাকবে ইনশাআল্লাহ৷

জামিয়ার দারুল উলুম হাটহাজারীর স্বনামধন্য মোহতামীম হযরত আল্লামা শাহ আহমদ শফীর সভাপতিত্বে বার্ষিক মাহফিল ও দস্তাবন্দী সম্মেলনে অন্যান্যদের মাঝে আরো বয়ান করেছন মাওলানা নুরুল ইসলাম ঢাকা , মাওলানা শেখ আহমদ, মাওলানা নোমান ফয়জী, মুফতী আহমদুল্লাহ পটিয়া, মাওলানা সালাহ উদ্দীন নানুপুরী,মাওলানা আজীজুল হক আল মাদানী, মাওলানা ডক্টর আ ফ ম খালেদ হোসাইন,মাওলানা সাজিদুর রহমান বি-বাড়িয়া,মুফতী মাহমুদুল হাসান বাবুনগর, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়্যুবী, মাওলানা আব্দুল বাসেত খান,মাওলানা সলিমুল্লাহ,মুফতী জসিমুদ্দীন,মাওলানা লোকমান হাকীম, মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী,মাওলানা মাহমুদুল হাসান ফতেহপুরী প্রমূখ ৷

মাহফিল শেষে ২০১৭ -১৮ শিক্ষাবর্ষে দাওরায়ে হাদীস সমাপ্তকারীদের দস্তারে ফজিলত (বিশেষ সম্মাননা পাগড়ী) প্রদান করা হয় ৷