ড. কামালকে আল্লামা আহমদ শফীর কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। – মুফতি ফখরুল ইসলাম

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

জানুয়ারি ১৭ ২০১৯, ০৪:৫০

বাংলাদেশ জনসেবা আন্দোলনের চেয়ারম্যান ও হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগরীর প্রচার সম্পাদক মুফতী ফখরুল ইসলাম ড. কামাল ও মির্জা ফখরুলদের সমালোচনা করে বলেন, আল্লামা আহমদ শফী নারীদের ইজ্জত রক্ষার কথা বলার কারণে ড. কামালরা আইনি ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলে ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছে। ড. কামালকে আল্লামা আহমদ শফীর কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে না হয় তাকে দেশে থাকতে দেয়া হবে না।

আল্লামা আহমদ শফি সাহেব ১১ জানুয়ারী হাটহাজারী মাদরাসার মাহফিলে মেয়েদেরকে কলেজ ভার্সিটিতে পড়াতে হলে পর্দার সাথে পড়াবেন। নতুবা নারীদের জন্য স্বল্প শিক্ষাই যথেষ্ট। বক্তব্যের অপব্যাক্ষা করে কিছু কুচক্রি মহল আল্লামা আহমাদ শফীর সমালোচনা করছেন।

আজ বুধবার সকাল ১১টায় আল্লামা আহমদ শফীর বক্তব্যের অপব্যাখ্যাকারীদের শাস্তির দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে শুধু ২০১৮ সালেই ৯৪২ জন নারী ধর্ষিত হয়েছে তখন ড. কামাল-ইনুদের নারীদরদ ও মামলা কোথায় থাকে। আল্লামা আহমদ শফীর বক্তব্য শুনে মির্জা ফখরুলরা হতবাক।

কিন্তু যখন শিক্ষকের হাতে ছাত্রি ধর্ষিত হয়, স্কুল-কলেজের ক্লাস রুমগুলোতে যখন ছাত্রের হাতে ছাত্রী ধর্ষিত হয়, যাত্রাপথে বাস ট্রেন ও পার্কগুলোতে নারীরা ধর্ষিত হয়, তখন তারা হতবাক না হয়ে ইনজয় করেন। জাতির জিজ্ঞাসা তখন কোথায় থাকে তাদের নারী দরদ? সুলতানা কামাল, আফরোজা কামাল, রিনা ও রৌশনা, রুশোনারা মুখে কলা দিয়ে বসে থাকেন। তখন তো তাদেরকে মাঠে ময়দানে কথা বলতে দেখা যায় না।

মুফতী ফখরুল ইসলাম আরো বলেন, আল্লামা শফী কয়েখ যুগ ধরে হাদীস পড়াচ্ছেন। শেষ বয়সে এসে আপনাদের নিকট তার হাদিস শিক্ষা গ্রহণ করা লাগবে না। কিছু না পেয়ে এখন আপনারা হাদীস খোজেন। আপনাদের এই হাদীস ও সংবিধান কোথায় ছিল। যখণ সুবর্নচরে ভোট দেওয়ার কারণে ১০জন মিলে ৩ বাচ্চার মাকে ধর্ষণ করে।

যখন জাহাঙ্গীর নগর ভার্সিটিতে ছাত্র লীগের সোনার ছেলে ১০০ জন ছাত্রীকে ধর্ষণ করে। ধর্ষনের সেঞ্চুরী পালন করে। যখন পর্দা করার কারণে রোকেয়া হল থেকে ছাত্রীদেরকে জঙ্গী মামলা দিয়ে জেলে পাঠানো হয়। যখন রাজধানী ঢাকার আবাসিক হোটেল থেকে বিভিণœ কলেজ ভার্সিটির ছাত্রীদেরকে পতিতাবৃত্তি করা অবস্থায় গ্রেফতার করা হয়। যখন ভিকারুন নেসা নুন স্কুলের হিন্দু শিক্ষক পরিমলরা ছাত্রি ধর্ষণ করে। যখন মতিঝিল আইডিয়ালের শিক্ষক ছাত্রীকে ধর্ষণ করে পেটে জারজ সন্তান জন্ম দেয়। যখন রাস্তাঘাটে ময়লার স্তুপে নবজাতক শিশু পাওয়া যায়। যখন ১৬ ডিসেম্বর ভোলায় স্কুল ছাত্রীদেরকে জঙ্গলে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়। যখন ১লা বৈশাখে টিএসসিতে ছাত্রীর কাপড় খুলে উলঙ্গ করা হয়। যখন নীলফামারীর সৈয়দপুরে স্কুল কক্ষে পঞ্চম শ্রেনীর ছাত্রীকে শিক্ষক ধর্ষণ করে তখন আপনাদের এই ইসলাম ও সংবিধান প্রেম কোথায় থাকে। আল্লামা শফীকে আজ আপনারা হাদীস ও সংবিধান শিখাচ্ছেন।
ইনু ও রিনাদের সাবধান করে দিচ্ছি, আল্লামা শফীকে তেতুল হুজুর না বলার জন্য। আগামীতে যদি আরো বলেন, তাহলে আমরাও আপনাদের নারী লোভী বলতে দিধাবোধ করবো না।

মহাসিচব মাওলানা ইয়ামিন হোসাইন আজমী বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামি স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক, ড. মোহাম্মদ আব্দুর রশিদ ও ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, হাসানুল হক ইনু ও আফরোজা হক রিনা, রৌশন আরারা যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, সংবিধানের ২৮ (২) নং ও ২৮ (৩) ধারা উল্লেখ করে আল্লামা আহমদ শফীকে ইসলাম ও রাষ্ট্রদ্রোহী বলতেও দ্বিধা করেন নি। তাদের বলছি, সংবিধান মানব কর্তৃক রচিত। আর ধর্ম, ¯্রষ্টা কর্তক রচিত। অতএব, ধর্ম সংবিধানের ঊর্ধ্বে। অতএব সংবিধান দিয়ে ইসলামকে ব্যাখ্যা করার অপপ্রয়াস চালাবেন না। আইনমন্ত্রি আনিসুল হককে বলছি, দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিন। মুখ সামলে কথা বলুন! নতুবা পরিনতী ভালো হবে না।

সভাপতির বক্তব্যে মুফতি আশিক যোবায়ের বলেন, সহশিক্ষার নামে অশুভ শিক্ষা ব্যবস্থার দ্বারা নারী জাতিকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। অনতিবিলম্বে আমরা সহশিক্ষা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন চাচ্ছি।

আজ বুধবার বাংলাদেশ জনসেবা আন্দোলন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ এর উদ্যোগে আয়োজিত জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানবন্ধনে সভাপতির ভাষনে তিনি এসব কথা বলেন। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থি ছিলেন, বাংলাদেশ জনসেবা আন্দোলনের চেয়ারম্যান মুফতি ফখরুল ইসলাম, মহাসচিব মাওলানা ইয়ামিন হোসাইন আজমী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাওলানা আবুল কাসেম কাসেমী, আলহাজ্ব মো: আজম খান, মাওলানা হোসাইন আকন্দ, মুফতী আব্দুল আলীম, হাফেজ আব্দুল হালীম, কাউসার আহমদ নীরব, মাওলানা দেলোওয়ার হোসাইন, মাওলানা আব্দুল আজিজ, যুব নেতা মুফতি আব্দুস সালাম, মাওলানা নেয়ামতুল্লাহ, ছাত্র নেতা হাফেজ হাসনাইন প্রমূখ।