ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী ভাগ্য গুণে বেঁচে গেলেন

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

মে ৩০ ২০২০, ২১:৩৯

।। মাওলানা আবদুর রব ইউসুফী ।।

দুর্ভাগা আমরা বাঙ্গালী জাতি। অনেক মেধা ও আবিষ্কারের যোগ্যতা থাকলেও রাজনৈতিক বা হিংসা প্রবণতার কারণে অস্তিত্বের জানান দিতে পারে না।

আমার জানা মতে বন্ধুবর হবিগঞ্জের মুফতী শাব্বীর আহমদ সাহেব (রহ.) তেল-গ্যাস–অর্থাৎ কোন রকমের জ্বালানী ব্যতিত চাবি ও স্প্রিং এর মাধ্যমে পরিবেশ বান্ধব গাড়ীর ইঞ্জিন তৈরিতে অনেক দূর অগ্রসর হয়েছিলেন। প্রাথমিকভাবে মোটর সাইকেলে এর পরীক্ষাও চালিয়েছিলেন। কিন্তু তদানিন্তন সরকারসমূহ তাঁকে না সহযোগিতা করেছে, না অনুমোদন দিয়েছে। সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে ধর্ণা দিয়েও কোন সাড়া পাননি। ফলে তাঁর মেধা ও প্রচেস্টা সফলতার মুখ দেখতে পারেনি।

ইদানিং বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের পরীক্ষা ও চিকিৎসার যখন কোন কুলকিনারা পাওয়া যাচ্ছিল না, ইউরোপ-আমেরিকাও কুপোকাত, তখন বাংলাদেশের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ঘোষণা দিল, আমরা এ রোগের পরীক্ষা নিরীক্ষার কিট আবিস্কার করেছি। তিন শত টাকা খরচে মাত্র পনের মিনিটে আমরা রিজাল্ট দিয়ে দিতে পারব। তবে এতে লাগে সরকারের অনুমোদন ও সহযোগিতা। সরকার যদি দ্রুত এর সিদ্ধান্ত দিতে পারত, তাহলে বিশ্ব মানবতা এ থেকে উপকৃত হত, বিশ্বব্যাপী এ কিটের বাজারজাত থেকে দেশে আসত হাজারো কোটি ডলার, জাতি লাভ করত এক বিরল সম্মান। কিন্তু সরকারের দৃশ্যমান টাল-বাহানায় আজো তা অনুমোদনের চেহারা দেখেনি।

ডাঃ জাফরুল্লাহ্ চৌধুরী অনেকটা বিরক্ত হয়েই সাহসিকতার সাথে ঘোষণা দিয়েছিলেন, অনুমোদন না পেলেও আগামী মঙ্গলবার (২৬শে মে) থেকে আমরা পরীক্ষার কাজ আরম্ভ করব। সর্বসাধারণের জন্য তা উন্মুক্ত থাকবে।

আমি তো একেবারে হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম। জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়ে সরকারের অনুমোদন ব্যতীত তিনি এ কাজ কি করে শুরু করবেন। সরকার কি বসে বসে আঙ্গুল চুষবে? সব কিছুতে বীরত্ব প্রদর্শন করা যায় না। যাই হোক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নড়েচড়ে উঠল। তারা দ্রুত মঙ্গলবারের পরীক্ষা স্থগিত রাখতে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রকে চিঠি দিল। এ যেন গণস্বাস্থ্যের প্রতি তাদের সহানুভূতি। বেঁচে গেল গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র, বেঁচে গেলেন তার ট্রাষ্টি ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তবে তাদের এ আবিস্কারের জন্য আমি ডাঃ চৌধুরীকে শত ধন্যবাদ জানাচ্ছি, তাঁর আরোগ্য ও দীর্ঘায়ূ কামনা করছি, ধন্যবাদ জানাচ্ছি এর আবিস্কারক বিধান বাবুসহ তাঁর সহকর্মীদেরকে।