ট্রেন বিলম্ব, বাসে বাড়তি ভাড়া নেয়ার অভিযোগ
একুশে জার্নাল
জুন ০১ ২০১৯, ১১:১২

পরিবার-পরিজন নিয়ে ঈদ করার জন্য ভোগান্তি মাড়িয়ে নগর ছাড়ছে মানুষ। টানা না হলেও ঈদের আগে-পরে মিলিয়ে ৮ দিনের ছুটি পাচ্ছে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। দূরদুরান্তের লোকজন ঈদের আগেই কর্মস্থল ছেড়ে যাচ্ছেন। ফলে ট্রেন ও বাসে বাড়ছে ভিড়।
এদিকে ট্রেন যাত্রার শুরুতেই ভোগান্তি শুরু হয়েছে। শুক্রবার ঢাকাগামী মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেনটি ৩৫ মিনিট বিলম্বে ছেড়ে গেছে। অভিযোগ উঠেছে, চট্টগ্রাম রেলের ট্রেন পরীক্ষকের অবহেলার কারণে ফিট ঘোষণার পরেও যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়ায় মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেনটি ৩৫ মিনিট পরে ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। অন্যদিকে দূরপাল্লার বাসগুলোতে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রাম রেলস্টেশন ও একে খান এলাকায় বাসস্টেশনে গেলে দু ধরনের চিত্র চোখে পড়ে।
সরেজমিনে দুপুর ১টায় চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, পুরো স্টেশনে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। বেশিরভাগ লোকের সাথে রয়েছে পরিবারের অন্য সদস্যরা। এসময় দেখা যায়, সাড়ে ১২টার ঢাকাগামী মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেনটি তখনো প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে। এসময় মহানগর এক্সপ্রেসের এক যাত্রী আলাউদ্দিন হোসেন বলেন, আমার বাড়ি মানিকগঞ্জে। এখন ৩০ মিনিট হয়ে গেছে ট্রেন ছাড়ার কোনো নাম-নিশানা নেই। কখন ছাড়বে সেটাও জানানো হচ্ছে না। আমার ছোট ছোট দুইটা বাচ্চা রয়েছে।
তাই টেনশন হচ্ছে। এর আরো পাঁচ মিনিট পরে ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। ট্রেন পরীক্ষকের গাফিলতির কারণেই মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেনটির ইঞ্জিনে যান্ত্রিক ত্রুটির ঘটনা ঘটেছে বলে স্বীকার করেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চট্টগ্রাম রেলওয়ের এক পদস্থ কর্মকর্তা। ওই কর্মকর্তা বলেন, মহানগর এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনটি প্রথমে পরীক্ষা করে ফিট ঘোষণা দেন ট্রেন পরীক্ষক। এরপর প্লাটফর্মে আসার সময় যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে পুনরায় মার্শাল ইয়ার্ডে ফিরে যায় ইঞ্জিনটি। এরপর যান্ত্রিক ত্রুটি সারিয়ে ইঞ্জিনটি আসতে প্রায় আধা ঘণ্টার বেশি সময় ব্যয় হয়।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ঈদে যাত্রী চাহিদার কারণে সূবর্ণ, সোনার বাংলা, তূর্ণা নিশিতা ও মহানগর গোধূলীতে ৬০টি অতিরিক্ত বগি সংযোজন করা হয়েছে। আবার কিছু কিছু ট্রেনে স্ট্যান্ডবাই টিকিটও দিচ্ছে রেলওয়ে।
শুক্রবার সকাল থেকে নগরীর বাসস্টেশনগুলোতে যাত্রীদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। দূরপাল্লার বাসগুলো যথাসময়ে কাউন্টার ত্যাগ করে। তবে যাত্রীদের অভিযোগ, বাসগুলোতে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। বেশি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ পেয়ে বিআরটিএ’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কয়েকটি বাস কাউন্টারে অভিযান চালিয়ে জরিমানাও করেন। একে খান গেইট সংলগ্ন কয়েকটি বাস কাউন্টারে গিয়ে বাড়তি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়।
একে খান ছাড়াও কর্নেল হাট, গরীব উল্লাহ শাহ মাজার, বিআরটিসি বাস স্ট্যান্ডের কাউন্টারগুলোতেও বাড়তি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির চিত্র পাওয়া যায় নগরীর নতুন ব্রিজ এলাকায়। এখানে পটিয়া, আনোয়ারা, বাঁশখালী, সাতকানিয়া, কেরানি হাট রুটগুলোতে রিজার্ভ হাঁকিয়ে দ্বিগুণ ভাড়ায় বাসে চড়তে বাধ্য হচ্ছেন যাত্রীরা।