জুলাই-শহীদের মেয়েকে দলবদ্ধ ধর্ষণ: পুলিশের অসহযোগিতার অভিযোগ

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

মার্চ ২০ ২০২৫, ০৫:১৯

ইলিয়াস সারোয়ার:

বৈষম্যবিরোধী জুলাই আন্দোলনে শহীদের মেয়েকে দুই নেশাখোর বখাটে ধর্ষণ করেছে। এই ঘটনায় একজনকে পুলিশ গ্রেফতার করলেও অপরজনকে গ্রেফতারে পুলিশের অবহেলার অভিযোগ উঠেছে। এমনকি সাংবাদিকদের কোনো তথ্য দেয়নি পুলিশ। ভিক্টিমকে থানায় সারাদিন বসিয়ে রেখেও করেছে কালক্ষেপণ।

জানা যায়, ভিক্টিমকে ১৮ মার্চ রাতে পটুয়াখালী জেলার দুমকি উপজেলার পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের সাবেক বিএনপি সভাপতি মামুন মুন্সির ছেলে সাকিব মুন্সি এবং সোহাগ মুন্সির ছেলে সিফাত মুন্সি সাড়ে ৭ টার দিকে জোড় করে নির্জন স্থানে নিয়ে প্রথমে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করে। এরপর ভিডিও ভাইরাল করে দেয়ার ভয় দেখিয়ে তাকে পরপর দুজন রেইপ করেছে। এরপর নেশা করার জন্য টাকা চেয়েছে আর ওরা যখনই চাইবে আবারো ওদের ডাকে সাড়া দিয়ে একই কাজ করার জন্য এবং কাউকে না বলার হুমকি দিয়েছে।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ভিক্টিম সকালে ১১টা নাগাদ থানায় যায়। থানায় গেলে ওকে মেডিকেলে না পাঠিয়ে পুলিশ সন্ধ্যা পর্যন্ত কালক্ষেপণ করায় (সম্ভবত যাতে ওর আলামত নষ্ট হতে থাকে)। পুলিশ ওর সাথে সুন্দর ব্যবহার মেইনটেইন করেছে। একজন আসামী গ্রেফতার করলেও অন্যকে করতে পারেনি বা করেনি। সাংবাদিকদের কোনো সহযোগিতা করতে দেয়নি। এমনকি তাদেরকে পুলিশ কোনো তথ্যও দেয়নি। পরে দুমকি উপজেলা সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ফোন দিয়ে ইউএনওকে পাঠায়।

এনসিপি নেতা তামিম আহমদ জানান, মেয়েটির মা(শহীদের স্ত্রী) ঢাকা থেকে আসতে থাকেন। তার আগেই আমি ঢাকা থেকে পৌঁছাই। আমি সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করেছি এবং এনসিপি পটুয়াখালীর সংগঠকদের দুপুর থেকে ভিক্টিমের কাছে রেখেছি। পরিবারের কেউ না থাকায় একজন নারী সংগঠককে ভিক্টিমের সাথে ওর খাওয়া দাওয়া, দেখাশোনা, সাহস দেয়া ও টেক কেয়ার করার জন্য রেখেছি। ভিক্টিম এখন চিকিৎসাধীন আছেন।

তিনি বলেন, সাধারণত রেইপ কেইসের ভিক্টিমের জবানবন্দি নিয়ে তাকে যথাদ্রুত সম্ভব মেডিকেল টেস্ট করার জন্য পাঠানো হয় এবং দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়েও আলামত সংগ্রহ করা হয়। কিন্তু এখানে ভিক্টিমকে সকাল ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কালক্ষেপণ করানো হয়। ঘটনাস্থলে আলামত সংগ্রহের ব্যাপারে সাংবাদিকরাও চেষ্টা করতে গেলে তাদের আশেপাশেও যেতে দেয়া হয়নি।

তিনি বলেন, আসামীর চাচা স্থানীয় প্রভাবশালী তিন/চারটি মোটরবাইকে করে ভিক্টিম থানায় থাকা অবস্থায় উপস্থিত হয়। ওসির সাথে হাসিখুশী ভাবে কথাবার্তা বলে বেড়িয়ে আসে এবং তার ভাতিজাকেই পুলিশ এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি।প্রত্যক্ষদর্শী অন্তত ১০ জন সাংবাদিক এই ঘটনা দেখেছেন।

তিনি বলেন, শহীদ আমাদের জুলাইয়ে প্রাণ দিয়েছে, তার বড় মেয়েই ভিক্টিম,ছোট মেয়ে মাদ্রাসায় পড়ে আর ১ বছরের ছেলে আছে কোলে। মেয়েটার বাবা নেই, মা ঢাকায় শহীদের মামলা নিয়ে অপরাধ ট্রাইবুনালে দৌড়াদৌড়ি করছিলেন ভাইকে নিয়ে, কোলে বাবুকে নিয়ে। মেয়ে নানা বাড়ি ছিলো। গতমাসে নানাও মারা গেছে, যার ফলে অসুস্থ নানীকে নিয়ে সে একা ছিলো। বাবাহীন এই দ্বাদশ শ্রেনীর ছাত্রীর পাশে আমরা যদি না দাড়াই তবে বিচার প্রক্রিয়ার জটিলতায় আটকে যাবে সব।