জুড়ীতে বন্যায় ভেসে গেছে দুই শতাধিক মাছের খামার, কোটি টাকার ক্ষতি

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

জুন ২৮ ২০২২, ১৮:৪৭

জহিরুল ইসলাম সরকার, জুড়ী: ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অব্যাহত ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যায় মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলার মৎস্য খামারী দের ২১৫ টি মাছের ঘের ভেসে গেছে। এ ছাড়া অবকাঠামোগত ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ফলে খামারিদের ক্ষতি হয়েছে প্রায় কোটি টাকার উপরে।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মঙ্গলবার (২৮ জুন) এ উপজেলায় প্রায় ৫৬ লক্ষ টাকা ক্ষয়ক্ষতির কথা বললেও মৎস্য খামারীরা জানান, সব মিলিয়ে ক্ষতি হবে কোটি টাকার উপরে।

জানা গেছে, উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নে বন্যার পানিতে মৎস্য খামারিদের বেশ ক্ষয়ক্ষতির হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন জায়ফরনগর ও পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়নের খামারীরা। মাছ ও অবকাঠামোগত ক্ষতিসহ উপজেলায় খামারিদের প্রায় কোটি টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন মৎসচাষীরা।

মৎসচাষী হারিছ মোহাম্মদ বন্যার পানিতে মাছের ঘের ভেসে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রতিবেদককে বলেন, এবারের বন্যা ভয়াবহ। অতিবৃষ্টি, পাহাড়ি ঢল ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমার তিনটি মাছের ঘের পানিতে ভেসে গেছে। এতে ৩/৪ লক্ষ টাকা ক্ষতি হয়েছে। প্রনোদনার মাধ্যমে আমাদের পাশে দাঁড়ানোর দাবি জানাচ্ছি সরকারের প্রতি।

মৎসচাষী বদরুল ইসলাম বলেন, আকস্মিক বন্যা ও পাহাড়ি ঢলে আমার ১৫ টি মাছের ঘের পানিতে ভেসে গেছে। এতে আমার ৩০/৩৫ লক্ষ টাকা ক্ষতি হয়েছে।

পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আনফর আলী জানান, আমার ইউনিয়নের সকল মাছের ঘের ভেসে গেছে। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছে মৎসচাষীরা। প্রনোদনার মাধ্যমে তাদের সহায়তা করার দাবি জানাচ্ছি।

জায়ফরনগর ইউনিয়নের বেলাগাঁও ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবুল কাশেম জানান, আমার এলাকায় অনেক মৎসচাষীর মাছের ঘের আকস্মিক বন্যায় ভেসে গেছে। শত চেষ্টা করেও ঘের রক্ষা করা সম্ভব না হওয়ায় চাষীদের এখন মাথায় হাত। তাদের ঘুরে দাঁড়াতে সরকারি সহায়তা প্রয়োজন।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আবু ইউসুফ বলেন, উপজেলার মৎস্য খামারী দের ২১৫ টি মাছের ঘের/পুকুর ভেসে গেছে। এ ছাড়া এসব ঘেরের অবকাঠামোগত ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তিনি জানান, প্রায় ৫৬ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে মৎস্য চাষীদের। প্রতিদিনই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে। প্রকৃত ক্ষতির পরিমাণ জানতে আরও সময় লাগবে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মুহম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, বন্যায় পুকুরে মাছ, পোনামাছ এবং অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে মৎস্য খামারিদের। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমরা এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। সরকারি কোনো সহায়তা পেলে উপজেলা ভিত্তিক মৎস্য চাষীদের বরাদ্দ দিব।