জামাইয়ের মাদক মামলায় প্রক্সি দিতে এসে শ্রীঘরে শ্বশুর

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

মার্চ ১১ ২০২০, ২১:১৪

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরায় জামাইয়ের মাদক মামলায় প্রক্সি দিতে এসে ধরা খেয়ে এমন কান্ড ঘটিয়েছে এক শ্বশুর। আদালতে তথ্য গোপন করে সবাইকে বোকা বানানোর চেষ্টা করেও শেষ রক্ষা হলো না। শেষ পর্যন্ত শ্বশুর-জামাই দুজনকেই যেতে হয়েছে কারাগারে। আদালত শ্বশুরকে কারাগারে নেওয়ার পর জামাইকেও গ্রেপ্তার করে একই মামলায় জেলে পাঠিয়েছে পুলিশ।

এ ঘটনায় আসামী পক্ষের আইনজীবীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য মতে জানা যায়, সাতক্ষীরা সদর থানার চৌবাড়ীয়া গ্রামের মাহবুবর রহমান গাজীর ছেলে মাদক ব্যবসায়ী আসাদুল ইসলাম ওরফে আসাদের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা সদর থানায় গত বছরের ৯ নভেম্বর ২০ বোতল ফেন্সিডিল বহনের অভিযোগে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা হয়, মামলা নম্বর ৩৩, জি, আর নম্বর ৭৪৯/১৯ (সাত:)। এএসআই জসিম উদ্দীন বাদী হয়ে মামলাটি দায়েরের পর তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা নূর আলম খান গত ৩১ ডিসেম্বর জনৈক শফিকুল ইসলাম ও আসাদুল ইসলামের নামে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। প্রধান আসামী শফিকুল ইসলাম ইতোমধ্যে পুলিশ কর্তৃক গ্রেপ্তার হয়ে আদালত থেকে জামিনে মুক্তি লাভ করে। কিন্তু অপর আসামী আসাদুল ইসলাম ওরফে আসাদ জেল হাজতে যাওয়ার ভয়ে নিজের পরিবর্তে টাকার বিনিময়ে আপন খালু শ্বশুরকে উক্ত মামলার আসামী না হওয়া সত্ত্বেও তার পক্ষে জামিন নেয়ার জন্য আদালতে পাঠায়। পরে সেই ব্যাক্তি ‘আসাদুল ইসলাম’ নামে স্বেচ্ছায় হাজির করে দিয়ে জামিনের আবেদন করেন। ভারপ্রাপ্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. হুমায়ুন কবীর ফেন্সিডিলের ওই মামলায় আসামীর জামিন আবেদন না-মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।

বিষয়টি আসামি আসাদুলের খালু শ্বশুরের বাড়ির লোকজন জানতে পেরে পুলিশকে অবগত করে এবং পুলিশ মূল আসামী আসাদুলকে গত ৬ মার্চ গ্রেপ্তার করে ওই একই মামলায় চালান দেন।

এদিকে জামাই আসাদুল ইসলাম ওরফে আসাদ সেজে আদালতে হাজির হওয়া খলু শ্বশুরের আইনজীবী জামিনের জন্য ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট থেকে মামলার নকল তুলে জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান এর আদালতে গত ২ মার্চ ক্রিমিনাল মিস ৩৪৫/২০ নম্বর মামলা দায়ের করেন। উক্ত মামলায় গত ৮ মার্চ জামিন শুনানীর ধার্য্য দিনে বিচারক শেখ মফিজুর রহমান আসামীর কাছ থেকে ফেন্সিডিল উদ্ধার না হওয়ায় এবং তাকে পলাতক দেখিয়ে মামলা দেয়ায়, মামলার মেরিট বিবেচনা করে জামিন মঞ্জুর করেন।

কিন্তু জামিননামা জেল সুপার সাতক্ষীরার কার্যালয়ে যাওয়ার পর একই মামলায় একই নামে দুইজন আসামী জেল হাজতে থাকায় কারা কর্তৃপক্ষ তাকে মুক্তি না দিয়ে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিস্তারিত বিষয় উল্লেখকরে গত ৯ মার্চ ৮০০ নম্বর স্বারকে একটি প্রতিবেদন প্রেরণ করেন। প্রতিবেদন প্রাপ্তির পর জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান জামাইয়ের পক্ষে প্রক্সি দেওয়া আসামী খালু শ্বশুরের ক্রিমিনাল মিস ৩৪৫/২০ নম্বর মামলায় দেওয়া পূর্বের জামিন বাতিল করেন। একই সাথে তার আইনজীবীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণপূর্বক অবহিত করার জন্য চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে নির্দেশ দেন।