জাতিসঙ্ঘে ইমরান খানের ভাষণে কী ছিল?
একুশে জার্নাল ডটকম
সেপ্টেম্বর ২৮ ২০১৯, ১৮:২৯
সাদীদ মালিক
জাতিসঙ্ঘে ইমরান খানের ভাষণ শুনলাম। ইমরান খান কী ও কেমন সে প্রসঙ্গ এড়িয়ে তার বক্তব্য নিয়ে কথা বলা যায়।
চলমান পৃথিবীর চোখে গুরুত্বপূর্ণ একটি অধিবেশনে ইমরান খানের ভাষণ ৯/১১ এর পর থেকে অব্যাহত পশ্চিমা বয়ানের বিপরিতে পাল্টা বয়ানের প্রবাহ তৈরি করে দিবে মনে করি। যে বয়ান মুজাহিদীন, আহলে ইলম ও দায়ীগণ সবসময় দিয়ে এসেছেন কিন্তু মুসলিম রাষ্ট্রনায়কদের মুখে এসবের উচ্চারণ আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রগুলোতে হতে দেখা যেত না।
ইমরান খানের ভাষণের চারটি পয়েন্টের প্রথম দুটি ছিল পাকিস্তানের অভ্যন্তরিন সমস্যা নিয়ে। পরের দুটি পয়েন্টের প্রথমটি হল ইসলামফোবিয়া আর দ্বিতীয়টি হল কাশ্মীর সমস্যা।
আলোচনাতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় উঠে এসেছে।
-নাইন ইলেভেনের আগে আফগান মুজাহিদীনরা রাশিয়ার চোখে ছিল সন্ত্রাসী। আমেরিকার চোখে ফ্রিডম ফাইটার। নাইন ইলেভেনের পর তারাই হয়ে গেল সন্ত্রাসী। পাকিস্তানের তৎকালীন সরকার ওয়ার অন টেররের নামে আমেরিকার সাথে যুক্ত হল। এটা ছিল ভুল সিদ্ধান্ত। কারণ আফগান মুজাহিদীনের শিক্ষা অনুযায়ী তারা দখলদারদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। সে অনুযায়ী তারা মুজাহিদ, সন্ত্রাসী নয়। পাকিস্তানের উচিত ছিল এখানে নিউট্রাল থাকা।
-ইসলামের সাথে টেররিস্ট রেডিক্যাল যুক্ত করা শুরু করল ইউরোপ পশ্চিমা লিডাররা। অথচ ইসলামে রেডিক্যাল মডারেট কিছু নেই। ইসলাম একটাই। নবীজির ইসলাম। মদীনার ইসলাম।
-ইসলামের ব্যাপারে কিছু ভুল ধারণা আছে। যে ইসলাম সংখ্যালঘুদের অধিকার দেয় না। অথচ মদীনা যা ইসলামের প্রথম রাষ্ট্র সেখানে সংখ্যালঘুদের অধিকার দেওয়া হয়েছে।
-নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ভালবাসা আমাদের হৃদয়ে। তাঁকে মন্দ বললে আমাদের হৃদয়ে আঘাত লাগে। হৃদয়ের আঘাত শরীরের আঘাতের চেয়ে কষ্টকর। এ কারণে মুসলমান রিয়েক্ট করবেই।
-হিজাব এটা মুসলমানদের পোষাক। এটাকেও অনেক দেশে একটা সমস্যা বানিয়ে ফেলা হয়েছে। অথচ এটা হওয়া উচিত ছিল না। ইসলামফোবিয়া থেকে এগুলোর সৃষ্টি।
-আত্মঘাতি হামলা নিয়ে ইসলাম ও মুসলমানদের ব্লেইম দেওয়া হয়। অথচ ৯/১১ এর আগে তামীল টাইগার এটা সবচে বেশি করত। তারা তো হিন্দু। অথচ এটা নিয়ে হিন্দুদের কিছু বলা হয় না।
কাশ্মীর ও মিয়ানমার নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে স্পস্ট করেছেন যে, তারা মুসলমান একারণেই আক্রান্ত হচ্ছে।
-আরএসএস এর আইডিওলজি তুলে ধরে বলেন, এরা হিটলারের আদর্শে দীক্ষিত। মোদি এর স্থায়ী সদস্য। গুজরাতের গণহত্যা এদের উগ্র আদর্শ ও সুপিরিয়টি থেকে সৃষ্ট। কাশ্মীর সমস্যার গোড়াও সেখানেই। এরপর কাশ্মীরীদের নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরেন। কারফিউ ওঠানোর দাবী করেন। কারফিউ ওঠানোর পর কী ঘটতে পারে তা নিয়ে বলেন যে, এই অন্যায় এই জুলুমের কারণে যদি তারা অস্ত্র তুলে নেয় তখন বলা হবে রেডিক্যাল। ইসলামকে অপবাদ দেওয়া হবে। অথচ তাদেরকে রডিক্যাল কে বানিয়েছে? যারা জুলুম করছে তারাই বানিয়েছে।
বলেন, কল্পনা করি আমি একজন কাশ্মীরী, আমার মাবোনরা রেইপড হচ্ছে আমাদের জুলুম করা হচ্ছে, আমি কী করব? হাতে অস্ত্র তুলে নেব! (সংক্ষেপিত)