জাতিসংঘ না আপনারা মুসলিম নিধনকারী সংঘ : চরমোনাই পীর
একুশে জার্নাল ডটকম
জুলাই ৩০ ২০১৯, ২২:১৮
জাতিসংঘকে মুসলমান নিধনকারী সংঘ বলে অভিযোগ করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম। আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর বাইতুল মোকাররম মসজিদের সামনে ভারতীয় দূতাবাসের অভিমুখে গণমিছিলপূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।
চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ‘আপনারা যারা তামাম দুনিয়া নিয়ন্ত্রণ করছেন, আজকে কি তারা চোখ বন্ধ করে বসে আছেন? আজকে ভারতের মুসলমানদের ওপর যে অত্যাচার-নির্যাতন আর হত্যাযজ্ঞ চালানো হচ্ছে, তা আপনারা লক্ষ্য করছেন না? আজকে জাতিসংঘের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা নিশ্চুপ হয়ে বসে আছেন। আমরা বলব, আপনারা জাতিসংঘ না, মুসলমান নিধনকারী সংঘ!’
চরমোনাই পীরের বক্তব্যের আগে ঠিক সকাল পৌনে ৯টা থেকে বাইতুল মোকাররমের সামনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। সাড়ে ৯টার আগেই বাইতুল মোকাররমের উত্তর গেট লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে। তারা বিভিন্ন পোস্টার সামনে রেখে দিতে থাকে স্লোগান। এই যখন অবস্থা, তখন পুলিশ বেশ সতর্ক অবস্থানে ছিল।
সমাবেশে নেতারা ভারতের অবস্থানের সমালোচনা করে বক্তব্য দেন। সে সময় এতটুকু ফাঁক ছিল না সেখানে। গণ মিছিলে আসা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতাকর্মীরা রাস্তা বন্ধ করে দাঁড়িয়ে পড়েন। তখন তাদের কাছে নানা ধরনের পোস্টার দেখা যায়। নেতাকর্মীদের রাস্তায় অবস্থান নেওয়ার কারণে পুরো পল্টন এলাকার যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ভোগান্তিতে পড়তে হয় সাধারণ পথচারীদের।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্দেশে সমাবেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি ফয়জুল করিম বলেন, ‘ভারতে গো মাংসকে কেন্দ্র করে মুসলিমদের ওপর যে নির্যাতন ও হত্যার ঘটনা ঘটছে, তা রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় হচ্ছে। আমরা বাংলাদেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ কিন্তু আমরা হিন্দুদের ওপর নির্যাতন করি না। এই হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে হবে। নতুবা মুসলিম বিশ্ব আপনাকে ছেড়ে কথা বলবে না।’
চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ‘ভারতে এতগুলো মুসলিমকে হত্যা করা হলো অথচ আমাদের সরকার একটা বিবৃতি পর্যন্ত দেয়নি। শুধু তাই না, এই হত্যার প্রতিবাদ করতে আমরা বাইতুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে অনুমতি চেয়েছিলাম কিন্তু দেয়নি। দিয়েছে উত্তর গেটের মতো ছোট স্থান। যাতে এই প্রতিবাদ আন্তর্জাতিক মিডিয়াতে না আসে। ধিক্কার জানাই, ধিক্কার। আমি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে অনুরোধ করে বলছি, রাষ্ট্রীয় পৃষ্টপোষকতায় মুসলিম হত্যা বন্ধ করুন। না হলে সারা বিশ্বকে সঙ্গে নিয়ে আমরা কঠোর অবস্থানে যাব।’
সমাবেশ শেষ হলে বাইতুল মোকাররম থেকে গণ মিছিল নিয়ে ভারতীয় দূতাবাস অভিমুখে স্মারকলিপি নিয়ে রওনা দেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। কিন্তু পল্টন মোড়ে পৌঁছালে পুলিশ তাদের বাধা দিয়ে আর সামনে যেতে দেয়নি। ১২টার দিকে গণ মিছিল শেষ করতে বাধ্য হয় সংগঠনটি। সে সময় ইসলামী আন্দোলনের আমির চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘পুলিশ আমাদের যেতে দিচ্ছে না। তারা আমাদের অনুরোধ করেছে, যাতে আমরা এখানেই মিছিল শেষ করি। যাতায়াতের সুবিধার্থে তাই পল্টন মোড়েই মিছিল শেষ করেছি। তবে আমাদের একটি প্রতিনিধিদল ভারতীয় দূতাবাসে স্মারকলিপি নিয়ে যাবে।’
এই বিষয়ে জানতে চাইলে মতিঝিল জোনের এডিসি এস এম শিবলী নোমান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘রাস্তায় মানুষের দুর্ভোগ হচ্ছিল। তাই মিছিলটি পল্টন মোড়ে আটকে দেওয়া হয়েছে। এখন তারা রাস্তা ছেড়ে দিয়েছে।’
এরপর ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোসাদ্দেক বিল্লা আল মাদানী, রাজনৈতিক উপদেষ্টা আশরাফ আলী আকন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মাওলানা ইতিয়াজ আলম, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি মাওলানা ফজলে বারী মাসুদ এবং কেন্দ্রীয় কৃষি ও শ্রম বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ আব্দুর রহমান ভারতীয় দূতাবাসে গিয়ে স্মারকলিপি জমা দেন।



