জর্জ ফ্লয়েড হত্যা: পুলিশ কর্মকর্তা ডেরেক শভিনের সাড়ে ২২ বছর কারাদণ্ড

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

জুন ২৬ ২০২১, ১২:১৪

যুক্তরাষ্ট্রের মিনেয়াপোলিসের রাস্তায় আফ্রিকান-আমেরিকান নাগরিক জর্জ ফ্লয়েডকে হত্যার দায়ে সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা ডেরেক শভিনের সাড়ে ২২ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত। শুক্রবার এই রায় ঘোষণা করা হয়। খবর সিএনএনের।

খবরে বলা হয়েছে, মামলার কৌঁসুলি শভিনের ৩০ বছর কারাদণ্ড চেয়েছিলেন। অন্যদিকে শভিনের আইনজীবী চেয়েছিলেন তাকে মুক্তি দেয়া হোক। কিন্তু গত এপ্রিলে তার বিরুদ্ধে আনা তিনটি অভিযোগই আদালতে প্রমাণ হওয়ায় বিচারক চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলায় শভিনের সাড়ে ২২ বছর কারাদণ্ড দেন।

২০২০ সালের ২৫ মে মিনেয়াপোলিসের একটি দোকান থেকে এক প্যাকেট সিগারেট কিনেছিলেন ৪৬ বছর বয়সী জর্জ ফ্লয়েড। দোকানের কর্মী মনে করেছিলেন যে, তিনি ২০ ডলার মূল্যের একটি নকল বিল ব্যবহার করছিলেন এবং মি. ফ্লয়েড যখন সিগারেটের প্যাকেটটি ফেরত দিতে চাননি তখন তিনি পুলিশ ডাকেন।

পুলিশ পৌঁছানোর পর তারা ফ্লয়েডকে তার পার্ক করে রাখা গাড়ি থেকে নামতে বলেন এবং তার হাতে হাতকড়া পরিয়ে দেয়া হয়। পুলিশের গাড়িতে তোলার সময় ফ্লয়েড চিৎকার করার চেষ্টা করলে ধ্বস্তাধস্তি হয়। এসময় শভিন তাকে মাটিতে ফেলে চেপে ধরেন।

শভিন তার হাঁটু ফ্লয়েডের ঘাড়ের ওপর ৯ মিনিট ধরে চেপে ধরে বসে থাকেন। এসময় ফ্লয়েড অন্তত ২০ বার বলেছিলেন যে, তিনি শ্বাস নিতে পারছেন না। ফ্লয়েড বলছিলেন, ‘দয়া করুন, দয়া করুন, দয়া করুন।’ যখন অ্যাম্বুলেন্স এসে পৌঁছায় ততক্ষণে ফ্লয়েড নিথর হয়ে গেছেন। এর এক ঘণ্টা পর তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

ওই ঘটনার ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষোভে ফুঁসে উঠে যুক্তরাষ্ট্রের হাজারো মানুষ। শুরু হয় বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভ। এটি শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই সীমাবদ্ধ থাকেনি; ছড়িয়ে পড়ে ইউরোপেও।

চাঞ্চল্যকর ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনার এক বছরেরও বেশি সময় পর রায় ঘোষণা করা হয়।

ফ্লয়েডের মৃত্যুতে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে যে বেদনাহত পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছিল তা উল্লেখ করে আদালত বলেছেন, ‘ফ্লয়েডের পরিবার যে যন্ত্রণা পোহাচ্ছে সেদিকে অবশ্যই আমাদের নজর দিতে হবে।’

রায়ের পর এক টুইট বার্তায় ফ্লয়েডের আইনজীবী বেন ক্রাম্প বলেছেন, ‘ঐতিহাসিক এই রায় অপরাধীকে জবাবদিহিতার মুখোমুখি করেছে। রায়টি ফ্লয়েডের পরিবার এবং আমাদের সমাজকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়েছে।’

ফ্লয়েডের বোন ব্রিজেট ফ্লয়েড বলেছেন, ‘পুলিশের নির্মমতাকে রাষ্ট্র শেষ পর্যন্ত গুরুত্ব দিতে বাধ্য হচ্ছে, এ রায় সে কথাই বলছে। তবে আমাদের আরও অনেক পথ যেতে হবে।’

রায়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল কেইথ এলিসন দাবি করেছেন, চৌভিনকে যে সাজা দেয়া হয়েছে তা যথেষ্ট নয়।