চামড়া শিল্প ও কওমিয়ান সম্ভাবনা

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

আগস্ট ২০ ২০১৮, ১২:০০

হোসাইন আহমদ বাহুবলী : দারুল উলূম দেওবন্দের আদলে বাংলাদেশে প্রায় বিশ হাজার মাদরাসায় চল্লিশ লাখ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। তাদের অনেকেই ইয়াতিম, অসহায় ও দরিদ্র পরিবারের। তাদের জন্য মাদরাসার উস্তাদগণ এবং অন্যান্য শিক্ষার্থীরাও ঈদআনন্দ জলাঞ্জলি দিয়ে কোরবানীর পশুর চামড়া সংগ্রহে অবদান রাখে। সাধারণ মানুষ এ অবদানটা বুঝতে পারে না। জানেও না। অনেকে ধারণা করে যারা চামড়া সংগ্রহে কাজ করে সবাই এয়াতিম। বিষয়টি আসলে ঠিক নয়। অনেক ভদ্র ঘরের সন্তান এবং অর্থবিত্তের মালিকের সন্তানও ঈদের দিন তাদের আরেক ভাইয়ের সারা বছরের একটা সুরাহার জন্য কাজ করে থাকে। স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় কোথাও এমন নজির নেই। এটাকে আরও বিকৃত করে উপস্থাপনা করার অপপ্রয়াস চালায় অনেকে। তা অতি নিচু মানের বক্তব্য ছাড়া আর কিছুই নয়। স্বেচ্ছশ্রমের ভিত্তিতে দেশের লাখ লাখ ইয়াতিম, অসহায়দের ভরণপোষণের এই সুন্দর ব্যবস্থাপনা একমাত্র কওমী মাদরাসাতেই বিদ্যমান।

চামড়া নিয়ে কওমী কতৃপক্ষ যে হয়রানি ও লোকসানের শিকার হচ্ছেন তা দূরীকরণে বেশি কিছু করার প্রয়োজন আছে বল মনে করি না।
কওমী শিক্ষার জাতীয় ও আঞ্চলিক বহু বোর্ড আছে। প্রত্যেক বোর্ডের অধীনে একটা করে ট্যানারী প্রতিষ্ঠা করলে,

১. সিন্ডিকেটররা মূল্যে ধ্বস নামাতে পারত না।

২. চামড়া কালেকশনের ক্লান্তি দূরীকরণের আগে বিক্রিকরণের ক্লান্তি ঝেঁকে বসত না।

৩. হাজার-লক্ষ লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হত।

৪. ঈদের ছুটির কারণে কেন্দ্রীয় পরীক্ষার আদলে কওমী ঘরানার যথেষ্ট জনবল কম পারিশ্রমিকে নিয়োগ দেওয়া যেত।

৫. বোর্ড থেকে কেন্দ্রীয় পরীক্ষার পরীক্ষক প্রস্তাবনার আদলে ট্যানারী শ্রমিক প্রস্তাবনা আসতে পারত।

৬. ট্যনারীতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দক্ষ জনবল নিখুঁত চামড়া সংগ্রহে ভূমিকা রাখতে পারত।

৭. কওমী কতৃপক্ষ অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা অর্জন করতে পারত।

৮. আলেমদের ব্যবসা-বাণিজ্যে আসার অঘোষিত লজ্জা দূরীভূত হত।

৯. “কওমীয়ানরা শুধু হাত পাতে, উৎপাদন করতে পারে না” এই অভিশাপের অপনোদন হত।

১০. চামড়া শিল্পের নীতি নির্ধারকদের ফোরামে কওমী বিদগ্ধ প্রতিনিধি কওমী স্বার্থ রক্ষায় বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হত।