চামড়ার ন্যায্য মূল্য নির্ধারণে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন আল্লামা মুহাম্মদ ইয়াহইয়া
একুশে জার্নাল ডটকম
জুলাই ০৩ ২০২২, ২২:৩০
দেশের অর্থনীতি এবং এতিম-গরীবের হক রক্ষায় আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সমন্বয় করে আসন্ন কুরবানীর পশুর চামড়ার ন্যায্যমূল্য নির্ধারণের দাবি জানিয়ে এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ ইসলামী শিক্ষাকেন্দ্র জামিয়া আহলিয়া দারুল উলূম হাটহাজারীর মহাপরিচালক আল্লামা মুহাম্মদ ইয়াহইয়া (দা.বা.)।
আজ (৩ জুলাই) রবিবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, বাংলাদেশের তৃতীয় প্রধান গুরুতপূর্ণ রফতানি পণ্য কাঁচা চামড়ার বাজার আজ ধ্বংসের পথে। বিশ্ববাজারে ২০১২ সাল পর্যন্ত দেশীয় এই পণ্যটি অত্যন্ত প্রতাপের সাথে বাজার ধরে রেখেছিল। কিন্তু ২০১৩ সালে আকস্মিকভাবে চামড়া ব্যবসায় ধ্বস নামে। দুই-তিন হাজার টাকার একেকটি চামড়ার দাম রাতারাতি মাত্র এক হাজারের নিচে নেমে আসে। এরপর পর্যায়ক্রমে কুরবানীর পশুর চামড়ার মূল্য কমতে কমতে মাত্র ২৫০-৩০০ টাকার মধ্যে নেমে আসে। যেখানে জুতা-ব্যাগসহ চামড়াজাত প্রতিটি পণ্যের মূল্য কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, সেখানে কাঁচা চামড়ার মূল্য তলানিতে নেমে আসা সি-িকিট চক্রের কারসাজি ছাড়া কিছু নয়।
আল্লামা মুহাম্মদ ইয়াহইয়া (দা.বা.) বলেন, দেশের অতি সম্ভাবনাময়ী চামড়া শিল্প ধ্বংসে যেমন দেশের উন্নয়নবিরোধী একটা চক্র কাজ করে যাচ্ছে, তেমনি এই শিল্পের সাথে জড়িত ব্যাবসায়ী সি-িকেটও কাঁচা চামড়ার মূল্যে ধ্বস নামিয়ে এতিম, গরীব ও নি:স্ব মানুষের অধিকার লুটে নিতে তৎপর। দুর্ভাগ্যজনকভাবে বাণিজ্যমন্ত্রণালয় গরীব ও এতিমদের অধিকার রক্ষার পরিবর্তে ব্যবসায়ীদের চাহিদামতো সিদ্ধান্ত দিচ্ছে। যে কারণে গত কয়েক বছর ধরে কাঁচা চামড়ার মূল্যে বিশাল ধ্বস নেমেছে। এতে দেশের এতীম ও গরীবরা তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে চরমভাবে বঞ্চিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, কুরবানী মৌসুমে পশু যবাই করা হয় ওয়াজিব বিধান পালনের জন্য। কুরবানীর পশুর গোশত গরীব-মিসকীনদের মাঝেও বিলি-বণ্টন করা হয়। কুরবানীর চামড়ার সম্পূর্ণ টাকাও গরীবরাই পেয়ে থাকেন। সুতরাং আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সামাঞ্জস্য রেখে চামড়ার ন্যায্য মূল্য নির্ধারণের জন্য আমরা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। দেশের অর্থনীতিকে রক্ষার পাশাপাশি চামড়ার প্রকৃত হকদার এতীম, গরীব ও দুস্থ মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সি-িকেট চক্রকে উৎখাত করে চামড়ার ন্যায্য মূল্য নির্ধারণ অত্যন্ত জরুরী। অন্যথায় গত বৎসরের মতো লাখ লাখ চামড়া বিনষ্ট হওয়ার মতো ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। এতে কেবল দেশের জাতীয় অর্থনীতিই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, বরং বিপুল সংখ্যক এতিম, গরীব ও নি:স্ব পরিবার অধিকার বঞ্চিত হবে।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে আল্লামা মুহাম্মদ ইয়াহইয়া (দা.বা.) বলেন, আপনার কাছে দেশের লাখ লাখ গরীব পরিবারের জন্য কুরবানীতে ঈদ উপহার হিসেবে চামড়ার ন্যায্য মূল্য নির্ধারণ করে দেয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি। এটা এতীম-গরীবদের জন্য অনেক বেশি সহযোগিতা হবে। এছাড়া এতে দেশের অর্থনীতিও রক্ষা হবে।