চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক আচরণের অভিযোগ -সাকিব মাহমুদ রুমি
একুশে জার্নাল
জুলাই ০৬ ২০২৫, ১৭:৪৮

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ডক্টর মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতারের বিরুদ্ধে ছাত্র সংগঠনগুলোর প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণের অভিযোগ উঠেছে। ইসলামী ছাত্র মজলিস, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মুহাম্মদ রুমি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত একটি পোস্টে এ অভিযোগ আনেন।
স্ট্যাটাসে তিনি উল্লেখ করেন, ইসলামী ভাবাদর্শভিত্তিক ছাত্র সংগঠন হিসেবে তাঁরা উপাচার্যের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে এবং বার্ষিক প্রকাশনা উপহার দিতে চাইলেও, উপাচার্য স্পষ্টভাবে তা প্রত্যাখ্যান করেন এবং কোনো ছাত্র সংগঠনের সাথে বসবেন না বলে জানান। অথচ কিছুদিন পর রুমি দাবি করেন, তিনি নিজ চোখে উপাচার্যের কার্যালয়ে একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের বার্ষিক প্রকাশনার ব্যাগ সুন্দরভাবে টেবিলে সাজানো অবস্থায় দেখেছেন।
রুমি তাঁর স্ট্যাটাসে লেখেন:
“স্যার আমাদের বলেন—‘আমি কারো পার্টির মানুষ না, কারোরটাই রাখি না।’ অথচ ক’দিন পর তার অফিসে অন্য একটি ছাত্র সংগঠনের প্রকাশনা সুন্দরভাবে সাজানো অবস্থায় দেখতে পাই। আমার মনে নেতিবাচক কিছু ছিল না, তাই ছবি তুলি নাই। কিন্তু এটা দুঃখজনক।”
তিনি আরও জানান, বিষয়টি কেবল ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা নয় বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক আচরণের একটি বড় সংকেত। সকল ছাত্র সংগঠনের প্রতি সমান মর্যাদা ও আচরণ নিশ্চিত করা একজন উপাচার্যের নৈতিক দায়িত্ব বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
ঘটনাটি সামনে আসার পর শিক্ষার্থী ও সাধারণ শিক্ষাঙ্গন সচেতন মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, “যদি নিরপেক্ষতা নির্বাচিত ছাত্র সংগঠনের জন্যই প্রযোজ্য হয়, তাহলে বাকিদের জন্য কী নীতি প্রযোজ্য?”
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেতৃত্বদানকারী ব্যক্তির পক্ষপাতহীন অবস্থান বজায় রাখা শিক্ষার পরিবেশ ও গণতান্ত্রিক চর্চার জন্য অত্যন্ত জরুরি। ছাত্রসংগঠনের প্রতি প্রশাসনের দৃষ্টিভঙ্গি ও আচরণ যদি রাজনৈতিক পছন্দ-অপছন্দ দ্বারা প্রভাবিত হয়, তবে তা শিক্ষাঙ্গনে সমতা ও ন্যায়বিচারের পরিবেশকে ব্যাহত করবে।
৩৬ জুলাই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ছাত্রনেতা রুমির অবস্থান
উল্লেখযোগ্য যে, মুহাম্মদ রুমি ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সংগঠিত ঐতিহাসিক ৩৬ জুলাই ছাত্রআন্দোলনের একজন সক্রিয় সংগঠক ও ফ্রন্টলাইন নেতৃত্বদানকারী। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বৈষম্য, প্রশাসনিক স্বেচ্ছাচারিতা ও আদর্শিক দমননীতি বিরোধী এই আন্দোলন দেশের তরুণ সমাজে ন্যায় ও স্বচ্ছতার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়। সেই ধারাবাহিকতায় বর্তমান প্রশাসনের আচরণ নিয়ে তার উচ্চকণ্ঠ হওয়াটা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করেছে।